আঘাত হানতে সক্ষম উত্তর কোরিয়া
২৯ নভেম্বর ২০১৭সেপ্টেম্বরের পর এই প্রথম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালালো উত্তর কোরিয়া৷ দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়োনহাপ সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, দক্ষিণ পিয়ংইয়ং-এর সাইন নি থেকে ক্ষেপণাস্ত্রটি উৎক্ষেপণ করা হয়েছে৷ উৎক্ষেপণের পর ক্ষেপণাস্ত্রটি সাড়ে চার হাজার কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছায় তারপর নেমে এসে বুধবার সকালে উত্তর কোরিয়া থেকে ৯৬০ কিলোমিটার দূরে জাপানের জলসীমায় পড়ে৷
উত্তর কোরিয়ার টেলিভিশনে একটি বিবৃতি দেখানো হয়, যেখানে বলা হয়েছে পিয়ংইয়ং নতুন ধরনের আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইলের (আইসিবিএম) এর পরীক্ষা চালিয়েছে, যার নাম হোয়াসং-১৫৷ এতে দাবি করা হয়েছে অ্যামেরিকা মহাদেশের যে কোনো স্থানে আঘাত হানতে সক্ষম এটি৷ এতে আরও বলা হয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি ভীষণ বড় এবং ভারী ওয়ারহেড বহনে সক্ষম৷
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘ইউনিয়ন অফ কনসার্নড সায়েন্টিস্টস' এক বিবৃতিতে বলেছে, উত্তর কোরিয়ার এবারের ক্ষেপণাস্ত্রটি ১৩ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সক্ষম৷ সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো স্থানে সেটা পৌঁছানো সম্ভব৷ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস সাংবাদিকদের বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার এবারের ক্ষেপণাস্ত্রটির পাল্লা ছিল আগের যে কোনোটির চেয়ে বেশি৷
যে কোনো ধরনের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্রযুক্তির উন্নয়ন ও ব্যবহারের বিষয়ে উত্তর কোরিয়ার উপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞারয়েছে৷ কিন্তু আন্তর্জাতিক সমালোচনা ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই গত কয়েক বছর ধরে একের পর এক পারমাণবিক অস্ত্র ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়ে আসছে পিয়ংইয়ং৷
বিশ্ব নেতাদের প্রতিক্রিয়া
নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের পথ তৈরি করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্তর কোরিয়াকে ‘সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্র' ঘোষণা করার এক সপ্তাহের মাথায় এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানো হলো৷ এ ব্যাপারে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমরা ব্যাপারটা দেখছি৷''
জাপানের প্রধানমন্ত্রী সিনজো আবে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘উত্তর কোরিয়ার এমন আচরণ বরদাস্ত করা হবে না৷ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এক হয়ে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে হবে, যাতে শান্তিপূর্ণ সমাধানে আসা যায়৷'' উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে পূর্ণ অবরোধের আহ্বান জানিয়েছে জাপান৷ দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট যথারীতি এর নিন্দা জানিয়েছেন৷
এদিকে, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এ ব্যাপারে আজ জরুরি বৈঠক ডেকেছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মোঘেরিনি একে আন্তর্জাতিক নীতির লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন৷ বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য এটা একটা বড় হুমকি বলে উল্লেখ করেছেন তিনি৷
ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ টুইটারে এই পরীক্ষার নিন্দা জানিয়ে পিয়ংইয়ং-এর উপর চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন৷
এপিবি/ডিজি (এপি, এএফপি, রয়টার্স, ডিপিএ)