1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে সত্যের জয় হবেই’

১৬ এপ্রিল ২০১৩

ফেলানি হত্যার প্রতিবাদে গান গেয়েছিলেন৷ বিশ্বজিৎ হত্যার পরও সোচ্চার হয়েছে তাঁর কণ্ঠ৷ প্রীতম আহমেদ এখন যুক্তরাষ্ট্রে, যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি এবং জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার দাবির পক্ষে প্রচার চালানোয় ব্যস্ত৷

https://p.dw.com/p/18GJv
ছবি: M.M.Zahidur Rahman Biplob

দীর্ঘ এক সাক্ষাৎকার৷ খুব ভোরে ঘুম থেকে তুলেও যে সংক্ষেপে কথা সারা হবে, উপায় ছিল না, প্রীতম এমন কিছু বিষয় নিয়ে এত বিষদ কথা বলেছেন যে কম কথায় সারতে গেলে ভুলবোঝাবুঝির ঝুঁকি থাকতে পারতো৷ ঝুঁকি যে একেবারে শেষ হয়ে যাবে সে কথা বলারও অবশ্য উপায় নেই৷ বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া অনেক অন্যায়ের বিরুদ্ধেই নিজের লেখা গান গেয়ে আসা তরুণ এই শিল্পী যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে দেখছেন সেখানেও অনেকটা বাংলাদেশের মতোই অবস্থা৷ এই কিছুদিন আগেও যিনি সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার বিচার চেয়ে গান গেয়ে হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন ছাত্র লীগের চক্ষুশূল, তখন যাঁরা বাহবা দিয়েছেন সেই জামায়াত-শিবির-বিএনপির অনেক কর্মী সমর্থক এখন যুদ্ধাপরাধের বিচার চাওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধাচরণই করছেন না শুধু, তাঁকে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে বাধা দেয়ারও চেষ্টা করছেন৷ প্রীতমের মতে, সব সময় সব দলই তাঁর প্রতিবাদী ভূমিকার প্রশংসা এবং বিরোধীতা করেছে দলীয় অবস্থান থেকে৷

Bangladesch Pritom Ahmed Sänger und Shahbag Aktivist
এখন যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছেন প্রীতম আহমেদছবি: M.M.Zahidur Rahman Biplob

একজন মানবতাবাদী এবং প্রতিবাদী মানুষের জন্য এটা কতটা দুঃখজনক, সময়ে সময়ে বদলে যাওয়া ‘শত্রু', ‘মিত্র' তাঁর কতটা মনোকষ্টের কারণ তা প্রীতমের সাক্ষাৎকার শুনলেই বোঝা যাবে৷ যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েও যে তাঁকে হাস্যকর কিছু প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় এ কথা খোলাখুলই জানিয়েছেন তিনি৷ ‘‘আপনার জন্মই স্বাধীনতার পরে, তাহলে আপনি কী করে জানবেন কে মুক্তিযোদ্ধা, কে রাজাকার? কেন গাইছেন এসব গান?'' – মূলত জামায়াত-শিবির কর্মীদের পক্ষ থেকে তোলা এ প্রশ্নের জবাব খুব সহজ এবং বোধগম্য যুক্তিতেই দিয়েছেন প্রীতম৷ ‘‘ধর্মের আবির্ভাবের অনেক অনেক পর কত মানুষ জন্ম নিয়েছে, জন্ম নিচ্ছে, তাঁরা কী পরে জন্ম নেয়ায় ধর্ম সম্পর্কে জানতে পারছে না? মানব শিশুও জন্মের সময় জানেনা বা বলতেও পারেনা কে তাঁর বাবা-মা, কিন্তু বড় হয়ে সে কি সেটা খুব ভালো করে জানতে পারেনা? মানুষ চাঁদে যাওয়ার অনেক পর আজ যে শিশুটি জন্ম নেবে সে কি বড় হয়ে চাঁদ সম্পর্কে জানতে পারবেনা?'' এ সবই প্রীতমের প্রশ্ন৷ এ সব প্রশ্নের মাধ্যমেই নিজের যুক্তিকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন গণজাগরণ মঞ্চ নিয়েও গান লিখে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ আলোচিত এই শিল্পী৷ প্রশ্নে প্রশ্নে একটা সিদ্ধান্তের দিকেই সবাইকে নিয়ে যাওয়ার প্রয়াস পেয়েছেন তিনি আর তা হলো – পড়লে, ইতিহাস চর্চা করলে, দলীয় দৃষ্টিভঙ্গী বা অন্ধ স্বার্থচিন্তা ঝেড়ে ফেললে মানুষ জানতে পারেনা এমন বিষয় পৃথিবীতে একটাও নেই৷

[No title]

যুদ্ধাপরাধ এবং জামায়াত-শিবির সম্পর্কে তাঁর পর্যাপ্ত জ্ঞান রয়েছে এ দাবি যৌক্তিকভাবে, আত্মবিশ্বাস নিয়েই করেছেন প্রীতম আহমেদ৷ এটা যে তাঁর দাবি করেই বোঝাতে হবে, ব্যাপারটি গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন শুরু হবার পর থেকে অন্তত সে জায়গায় নেই৷ শুধু গান গেয়ে নিজের আদর্শগত অবস্থানের কথা জানাতেন বলে এসব নিয়ে যাঁদের মনে সংশয় ছিল. বেশ কিছু টক শো-তে অংশ নিয়ে তাঁদের সেই সংশয়ও অনেকটাই দূর করে দিয়েছেন প্রীতম৷ এই সাক্ষাৎকারে বেশ কিছু জটিল বিষয়েও ফুটে উঠেছে তাঁর সচেতনতা এবং প্রতিটি বিষয়কে বিশ্লেষণ করার সহজাত ক্ষমতা৷ ফুটে উঠেছে জামায়াত-শিবিরের একতাবদ্ধ হয়ে মাঠে নামার পাশাপাশি মুক্তিযু্দ্ধের স্বপক্ষের শক্তির দ্বিধাবিভক্ত খাকা, মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ে বর্তমান এবং অতীতের সব সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি আর এখন তারই পরিণাম দেখা, জামায়াত-শিবিরের অপপ্রচারের মুখে ধর্মের কথা ভুলে অনেকের সাধারণ মাওলানাদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য বিশ্বাস করে ধ্বংসাত্মক কাজে নেমে পড়াসহ অনেক বিষয়ে৷ এ সব বিষয় কষ্ট দেয় প্রীতম আহমেদকে, তবে মনোবল ফিরিয়ে দেয় একটি বিশ্বাস – সত্যের জয় হবেই৷

সাক্ষাৎকার: আশীষ চক্রবর্ত্তী

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য