‘যুদ্ধাপরাধের বিচারও ব্লগার হত্যার কারণ হতে পারে’
৩ ডিসেম্বর ২০১৫বিষয়টি জানতে ডয়চে ভেলে কথা বলেছে মুক্তমনা ব্লগের মডারেটর ফরিদ আহমেদের সঙ্গে৷ এ বছর ফেব্রুয়ারিতে নিহত ব্লগার অভিজিৎ রায় মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন৷ এছাড়া ২০১৩ সালে নিহত ব্লগার রাজীব হায়দারও মুক্তমনা ব্লগে নিয়মিত লিখতেন৷ ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘‘...যেসব ব্লগার খুন হয়েছেন তাঁরা মূলত সবাই নাস্তিক ছিলেন৷ আর প্রকাশক দীপন অভিজিতের বিশ্বাসের ভাইরাস ও অবিশ্বাসের দর্শন বই দুটির প্রকাশক ছিলেন৷ তো এই বিষয়টাকে দেখলে আমার কাছে যেটা মনে হয়, মূলত হামলাটা হচ্ছে নাস্তিক ব্লগারদের উপর৷ তবে এর পাশাপাশি বাংলাদেশে এখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছে, ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনের ফাঁসিও হয়েছে এবং শাহবাগ আন্দোলনটা যখন শুরু হলো তখন কিন্তু থাবা বাবা (রাজীব হায়দার) মারা গেলেন৷ তাই যুদ্ধাপরাধের বিষয়টাকেও কিন্তু আমরা উপেক্ষা করতে পারছিনা, এটাও একটা কারণ হতে পারে৷ কারণ এসব ব্লগাররা প্রত্যেকেই যুদ্ধাপরাধের বিচার হোক সে ব্যাপারে সোচ্চার ছিলেন৷''
২০১৩ সালে নিহত ব্লগার রাজীব হায়দায় মুক্তমনায় নিয়মিত লেখালেখি করতেন উল্লেখ করে ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘‘রাজীব নাস্তিক ব্লগার ছিলেন৷ একইসঙ্গে তিনি গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গেও বেশ সক্রিয় ছিলেন৷''
নিহত প্রকাশক দীপন সম্পর্কে মুক্তমনা ব্লগের মডারেটর বলেন, ‘‘উনি (দীপন) হয়ত সরাসরি ধর্মে অবিশ্বাসী ছিলেন না৷ কিন্তু তিনি অত্যন্ত প্রগতিশীল মানুষ ছিলেন৷ তার বই প্রকাশনাগুলো দেখলেই, সেটা বোঝা যায়৷ বাংলাদেশে যাঁরা প্রগতিশীল মানুষ তাঁরা অবশ্যই যুদ্ধাপরাধের বিচারের পক্ষে থাকবেন এটাই স্বাভাবিক৷''
ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘‘একটা ধর্মীয় মৌলবাদী অংশ যারা ধর্মকে সমালোচনা করলে অথবা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাইলে সেটাকে ঠিক সহজভাবে নিতে পারে না তারাই এসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়েছে৷''
ব্লগারদের রক্ষায় সরকার যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে তাতে খুব একটা সন্তুষ্ট নন ফরিদ আহমেদ৷ ‘‘সরকারি পদক্ষেপ আশাব্যাঞ্জক নয় বলেই অনেক ব্লগার দেশ ছাড়ছেন৷ সরকার সঠিক পদক্ষেপ নিলে এসব ব্লগাররা দেশ ছেড়ে বিদেশের অনিশ্চিত জগতে পাড়ি জমাতেন না৷''
উল্লেখ্য, চলতি বছর ডয়চে ভেলের দ্য বব্স জুরি অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী হয়েছে মুক্তমনা ব্লগ৷
আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷