1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রোহিঙ্গাদের সাথি ফোনে বন্দি স্মৃতি

২৭ ডিসেম্বর ২০১৭

বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরগুলোতে যেসব রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন, তাদের বেশিরভাগের সময় কাটে মোবাইল ফোনে নিজেদের গ্রাম ও বাড়ির ছবি ও ভিডিও দেখে৷ কোনোটি হয়ত ফেলে আসা সুখস্মৃতি আবার কোনোটা দুঃসহ৷

https://p.dw.com/p/2pyzQ
Bangladesch Rohingya Flüchtlinge mit Smartphone
ছবি: picture.alliance/AP Photo/A.M. Ahad

নিজের মোবাইল ফোনে ধারণ করা ভিডিও দেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দেয় আব্দুল হাসান৷ বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ১৬ বছর বয়সি এই রোহিঙ্গা শরণার্থী সংবাদ সংস্থা এপিকে বলে, ‘‘মিয়ানমারে আমার গ্রাম আমার বাড়ির জন্য প্রাণ কাঁদে৷ তাই সবসময় ভিডিওতে সেই পুরোনো দিনের ছবি দেখি৷''

২৫শে আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে ৬ লাখ ৪০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা৷ কিন্তু মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিপীড়ন শুরু হওয়ার পর থেকে কয়েকজন একটু সময় পেয়েছিলেন তাঁদের কিছু জিনিস নিয়ে পালানোর৷ তাঁদের ভিটেমাটি, গোলাঘর, গোয়ালঘর, গ্রাম সবকিছুই নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে৷ আছে কেবল স্মৃতিটুকু৷ যাঁদের ভাগ্য ভালো, তাঁরা সাথে করে নিজেদের মোবাইল ফোনটা আনতে পেরেছিলেন৷ সেই ফোনে তোলা নিজেদের গ্রাম বাড়ি, উঠোনের ছবি দেখে সময় কাটে তাঁদের৷

ড্রোন থেকে তোলা ছবিতে হাজারো রোহিঙ্গার দেশ ছাড়ার দৃশ্য

আব্দুল হাসানের ফোনে একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে তাঁরা ‘নারকেল পার্টি' করছেন৷ রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের একটি গান ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজছে আর তিনি তাঁর বন্ধুদের সাথে নারকেল ছোড়াছুড়ি খেলছে৷ হাসান বলে, ‘‘যখন এই ভিডিওটি দেখি আমার দেশের কথা মনে পড়ে৷ আমার মন ভেঙে যায়৷''

১৫ বছরের মোহাম্মদ ফরিদও নিজের সেলফোনে পুরোনো ছবি আর ভিডিও দেখে সময় পার করে৷ ফেলে আসা বন্ধুদের কথা তার ভীষণ মনে পড়ে, মনে পড়ে স্কুলের কথা৷ ‘‘আমি আমার বন্ধুদের সঙ্গে চমৎকার সময় কাটিয়েছি৷ আমরা তখন স্কুলে যেতাম৷ এখানে কোনো স্কুল নেই৷ এই ছবিগুলো আমি স্মৃতি হিসেবে রেখে দিয়েছি৷''

রোহিঙ্গা শিশুদের খোঁজ নিচ্ছে না কেউ

শরণার্থী শিবিরে শিশুদের জন্য কোনো স্কুল নেই, বড়দেরও তেমন একটা কাজ নেই৷ শরণার্থীদের ৬০ ভাগই শিশু৷ তাই তারা সেলফোনেই বেশি সময় কাটায়৷ তবে মুঠোফোনে যে কেবল সুখস্মৃতি আছে, তা কিন্তু নয়৷

২২ বছরের মুজিব উল্লাহ একটি ভিডিও দেখান বার্তা সংস্থা এপি-র সাংবাদিকদের, যেখানে মিয়ানমারের গ্রাম বর্গিয়াবিলে সেনাবাহিনী ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছে আর মানুষ সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করছে৷ গ্রামবাসীরা আগুন নেভাতে বালতিতে করে বালু ঢালছেন৷ কিন্তু আগুন কিছুতেই নেভানো যাচ্ছে না৷ এই ভিডিও ধারণের কয়েক ঘণ্টা পর মুজিব তাঁর নিজের গ্রামে ফিরে যান এবং তাঁকে দেখে গ্রামের লোকজন ভাবেন সেনাবাহিনী ফিরে গেছে৷ কিন্তু হঠাৎই গোলাগুলি শুরু হয়৷ কয়েকজন পালিয়ে যান৷ বাকিরা সেখানেই প্রাণ হারান৷ তাঁর ভাইও সেই গোলাগুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানান মুজিব৷

এপিবি/ডিজি (এপি, রয়টার্স)

বন্ধু, প্রতিবেদনটি কেমন লাগলো? জানান আপনার মন্তব্য, নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান