রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের দাবি
৩ মার্চ ২০১৬ডয়চে ভেলেকে এ কথা জানিয়েছেন রিটের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ কে এম জগলুল হায়দার আফ্রিক৷
১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণীত হয়৷ এই সংবিধানের মূল বৈশিষ্ট্য ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা৷ কিন্তু ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশের সংবিধানের মূল চরিত্রটিই পরিবর্তন করে দেন তখনকার স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদ৷ সংবিধানে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করা হয়৷ আর সে বছরই এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন দেশের ১৫ জন বিশিষ্ট নাগরিক৷ তাঁদের মধ্যে ছিলেন কবি সুফিয়া কামাল, ড. কামাল হোসেন, বিচারপতি দেবেশ ভট্টাচার্য, সিআর দত্ত, ফয়েজ আহরমদ, কামলাউদ্দিন হোসেন প্রমূখ৷ তখনই আদালত রুল ইস্যু করেন৷
এরপর ২০১১ সালে সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল করার জন্য আরেকটি সম্পূরক রিট হয় হাইকোর্টে, এবং তাতেও রুল ইস্যু হয়৷
অ্যাডভোকেট এ কে এম জগলুল হায়দার আফ্রিক জানান, ‘‘সোমবার দু'টি রিট এক করে শুনানি শুরু হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের তিন সদস্যের বিশেষ বেঞ্চে৷ বিচারপতি নাইমা হায়দার এই বেঞ্চের নেতৃত্ব দিচ্ছেন৷ চলতি মাসের ২৭শে মার্চ পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে৷''
এ কে এম জগলুল হায়দার বলেন, ‘‘আমাদের আবেদনের মূল কথা হলো রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করার মাধ্যমে সংবিধানের অসাম্প্রদয়িক চরিত্রকে ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে৷ এর মাধ্যমে একটি মাত্র ধর্মকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে বাংলাদেশে৷''
তাঁর কথায়, ‘‘সংবিধানের মূল নীতি পরিবর্তন করা যায় না৷ আর ঠিক সেটাই করা হয়েছে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে সংবিধানে স্থান দিয়ে৷''
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমরা মনে করি, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, নির্যাতন এবং জঙ্গিবাদের মূল কারণ ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা৷ তাই আমরা এর অবসান চাই৷''
জানা গেছে, এই রিট আবেদনটি দীর্ঘ সময় পর হলেও শুনানির কার্যতালিকায় আসায় জীবিত রিটকারীরা আবার আশান্বিত হয়েছেন৷ তাঁরা মনে করছেন, এই রিটের নিস্পত্তির মাধ্যমে সংবিধানের সাম্প্রদয়িক চরিত্রের অবসান ঘটবে৷
অ্যাডভোকেট এ কে এম জগলুল হায়দার বলেন, ‘‘সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ৭২ সালে সংবিধানে এখনো আমরা পুরোপুরি ফিরে যেতে পারিনি৷ ফিরে যেতে হলে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল করতে হবে৷ আমরা আশা করি, আদালত থেকে সেই রায় পাবো৷''