1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কূটনীতিকদের তাগিদ

সমীর কুমার দে, ঢাকা১৪ জানুয়ারি ২০১৪

সব রাজনৈতিক দলকে আবারো সমঝোতায় আসার তাগিদ দিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদেশি কূটনীতিকরা৷ দ্রুত সব পক্ষকে সংলাপে বসতে তাগিদ দিয়েছেন তাঁরা৷ বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে ঢাকায় নিযুক্ত ৩৪টি দেশের কূটনীতিকরা এই তাগিদ দেন৷

https://p.dw.com/p/1Apqx
Kombobild Khaleda Zia und Sheikh Hasina
ছবি: Getty Images/AFP/FARJANA K. GODHULY

সোমবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে এই বৈঠক হয়৷ বৈঠকে বর্তমান সময়ে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির হাল তাঁদের কাছে তুলে ধরে বিএনপি৷ কূটনীতিকরা সংঘাত, সহিংসতা বন্ধ করে সংলাপে বসার জন্য সরকার ও বিরোধী দল উভয়কেই উদ্যোগ নেয়ার তাগিদ দেন৷ তাঁরা বলেন, নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন হয়নি, তাই গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ খুঁজে বের করতে হবে৷

বৈঠক শেষে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান মোজেনা বলেন, গত ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র হতাশ৷ এই নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ মতামত প্রকাশের সুযোগ পায়নি৷ যুক্তরাষ্ট্র এখনো আশা করে যে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো শিগগিরই একটি সমঝোতায় আসতে পারবে৷ তিনি বলেন, বিএনপি হরতাল ও অবরোধের মতো সহিংস কর্মসূচি স্থগিত করেছে৷ এখন সরকারের উচিত হবে বিরোধী দলকে সভা-সমাবেশ করতে দেয়া এবং নেতা-কর্মীদের মুক্তি দিয়ে সংলাপের পরিবেশ তৈরি করা৷ তাঁর মতে, সহায়ক পরিবেশ হচ্ছে – বিরোধী দলের কার্যালয় খুলে দেয়া, তাদের নেতৃবৃন্দকে মুক্তি দেয়া এবং তাঁদেরকে অবাধে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে দেয়া৷ তবে বিএনপিকেও সরকারের দেয়া সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে হবে৷

Bangladesch Parlamentswahlen
বিরোদীদল ছাড়া নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে...ছবি: Reuters

বৈঠকে অংশ নেয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম হানা বলেন, যে কোনো মূল্যে সহিংসতা বন্ধ করতে হবে৷ সংলাপ হচ্ছে সংকট সমাধানের একমাত্র পথ৷ এ সময় উপস্থিত ক্যানাডিয়ান হাইকমিশনার হিডার ক্রুডেন পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন৷ তিনি সাংবাদিকদের বলেন, হরতাল-অবরোধ স্থগিত করায় আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে৷ সহিংসতা বন্ধ করে সরকার এবং বিএনপি আলোচনায় বসতে পারে৷ তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ যদি চায়, তবে সব দলের অংশগ্রহণে আরেকটি নির্বাচন হতে পারে৷

পরে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা চায় বিএনপি৷ আলোচনার জন্য সব সময় প্রস্তুত বিএনপি৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা রাষ্ট্রদূতদের এখানে দাওয়াত দিয়েছি, এখানে সব বিষয়ে আলোচনাও হয়েছে৷ নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপির বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে৷ প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে নির্বাচনের বিষয়ে রাষ্ট্রদূত-কূটনীতিকদের কাছে একটি প্রতিবেদন দেয়া হয়৷ ৫ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের দিনসহ ওই সময়ে নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রের ভোটার অনুপস্থিতি, ভোট জালিয়ারি, ব্যালেট পেপার ছিনতাইসহ বিভিন্ন ভিডিও তথ্যচিত্র কূটনীতিকদের সামনে উপস্থাপন করা হয়৷ বিএনপির পক্ষ থেকে কূটনীতিকদের প্রতিবেদনটি সরবারহও করা হয়৷ বৈঠকে বিএনপির পক্ষে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী, চেয়ারপারর্সনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান ও সাবিহ উদ্দিন আহমদ, সাংবাদিক শফিক রেহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বোরহান উদ্দিন খান উপস্থিত ছিলেন৷

বৈঠকে অন্যদের মধ্যে জার্মান, ব্রাজিল, সুইডেন, দক্ষিণ কোরিয়া, নেদারল্যান্ড, ইটালি, ইন্দোনেশিয়া ও শ্রীলঙ্কাসহ ২৪টি দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং ভারত ও পাকিস্তানসহ ১০টি দেশের দূতাবাসের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন৷

এদিকে সোমবার দ্বিতীয়বারের মতো স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেয়ার পর, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে সংলাপ ‘বন্ধ' হয়নি বরং তা আরো ‘বেগবান' হয়েছে৷ অবশ্য সংলাপের সাফল্যের ক্ষেত্রে ‘বাইরের শক্তি'-ও যে গুরুত্বপূর্ণ – প্রকাশ্যেই তা স্বীকার করেন সৈয়দ আশরাফ৷ তিনি বলেন, রাজনীতি নিয়ে আলাপ-আলোচনা সব সময় চলে, এখনো চলছে এবং ভবিষ্যতেও চলবে৷ আলোচনার দ্বার বন্ধ হলে সমস্যা হয়৷

তাই তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, বিএনপি সংলাপে আসবে এবং এর মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক সমঝোতা হওয়া সম্ভব৷ বিএনপির নির্বাচন বর্জনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, নির্বাচন বর্জনের কালচার স্থায়ী হয়ে গেলে সব দল মিলে জীবনে আর নির্বাচন হবে না৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান