1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সিরিয়া কি ইরাকের পথে এগোচ্ছে

২৬ আগস্ট ২০১৩

সিরিয়ার বিষাক্ত গ্যাস হামলার স্থানটি সোমবার পরিদর্শন করবেন জাতিসংঘের অস্ত্র বিশেষজ্ঞরা৷ কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন বলছে, অনেক দেরি হয়ে গেছে, এখন আর পরীক্ষা করে কোনো তথ্য পাওয়া সম্ভব নয়৷

https://p.dw.com/p/19W1q
ছবি: Reuters

গত সপ্তাহে রাজধানী দামেস্কের উপকণ্ঠে রাসায়নিক গ্যাস হামলায় সিরিয়ায় কয়েকশ মানুষ নিহত হওয়ার পর, রোববার সে স্থানটি পরিদর্শনের অনুমতি মেলে জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞদের৷ আজই কোনো এক সময় তাঁরা এই কাজ শুরু করবেন৷

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এবং তার সহযোগী দেশগুলো বলছে, গত পাঁচ দিনে সরকারবাহিনীর অবিরাম গোলা বর্ষণে গ্যাস হামলার সব তথ্য-প্রমাণ নষ্ট হয়েছে৷ তাই বিশেষজ্ঞ দলটি সেখানে গিয়ে খুব একটা সুবিধা করতে পারবে না বলে ধারণা তাদের৷ গত ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক এই গ্যাস হামলায় সিরিয়ায় সামরিক অভিযানের আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়৷ তবে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় তারা৷

Syrien Tauben sind mutmaßlich von Giftgas getötet worden
গ্যাস হামলায় নিহত কবুতরছবি: Reuters

রোববার হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়াগুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন৷

বান কি-মুন বললেন, সময় নেই

এদিকে, সোমবার সৌলে এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন বলেছেন, অভিযোগ প্রমাণ করার জন্য কেবল সময়েরই অপচয় হবে এবং নষ্ট করার মতো সময় নেই৷ তাই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷

হামলার অভিযোগ অস্বীকার

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ বলছেন, রাসায়নিক গ্যাস হামলার ঘটনা পুরোটাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত৷ তার সেনারা এ ধরনের হামলা চালায়নি বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি৷

সোমবার প্রকাশিত রাশিয়ার একটি পত্রিকায় দেয়া সাক্ষাৎকারে আসাদ জানান, ঐ স্থানটিতে বিদ্রোহীদের কোনো ঘাঁটি না থাকায় সেখানে সেনাবাহিনীর গ্যাস হামলা চালানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই৷ কেননা সিরীয় সেনাবাহিনীর ঘাঁটি রয়েছে সেখানে৷ তাঁর অভিযোগ, সিরিয়া ইস্যুতে ব্যর্থ হয়েই এই পরিকল্পনা এটেছে যুক্তরাষ্ট্র৷

Merkel zu Besuch in London mit David Cameron
রবিবার সিরিয়া নিয়ে কথা বলেন ম্যার্কেল ও ক্যামেরন (ফাইল ছবি)ছবি: Reuters

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে রাশিয়ার সাথে যত চুক্তি হয়েছে, তার সবগুলোই পূরণ করা হবে বলে জানান আসাদ৷ অন্যদিকে, সিরিয়ার তথ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র কোনো সামরিক অভিযান চালালে তা আগুনের মধ্যে ঘি ঢালার সামিল হবে এবং তাতে মধ্যপ্রাচ্য পুড়ে ছাড়খার হয়ে যাবে৷

সিরিয়া এবং তার দোসর

আসাদ সরকারের ঘনিষ্ট সহযোগী দেশ ইরান যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ার করে বলেছে, তারা যাতে সিরিয়ার সীমা লঙ্ঘন না করে৷ ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের সরকারের কাছে গণবিধ্বংসী অস্ত্র আছে, এই অজুহাতে সেখানে আগ্রাসন চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র৷ আর এখন সিরিয়াতেও সেই একই ধরনের অপেচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷

সোমবার রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিকে রোববার টেলিফোনে জানিয়েছেন যে, সিরিয়ায় সামরিক অভিযান চালালে তার পরিণতি ভয়াবহ হবে৷

লাভরভ বলেছেন, অতীতে যে ভুল যুক্তরাষ্ট্র করেছে, তার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় এবং এমন কোনো পদক্ষেপ না নেয়, যাতে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হয়৷

জার্মানি এবং ব্রিটেন

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের অফিস জানিয়েছে, রোববার ক্যামেরন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেলের সঙ্গে সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন৷ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া নিয়ে এ সময় দুই নেতার মধ্যে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছে ক্যামেরনের অফিস৷

Syrien Präsident Assad mit neuen Ministern
পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে প্রেসিডেন্ট আসাদছবি: picture-alliance/dpa

তাঁরা দু'জনেই এ ব্যাপারে একমত যে, পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ এবং এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্রুত কোনো সিদ্ধান্তে আসা উচিত৷

ফ্রান্স ও তুরস্ক

সোমবার ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সিরিয়ায় সেনা অভিযানের ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি৷ তবে সব সম্ভাবনাই হাতে রয়েছে এবং আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে৷

এদিকে, তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সিরিয়ায় বিরুদ্ধে জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সব সিদ্ধান্তদের প্রতি তাদের সমর্থন আছে৷ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপন না হলেও অন্যান্য বিকল্প যে কোনো সিদ্ধান্তেই তারা সমর্থন দেবে৷

এমনকি সিরিয়া সরকারের বিরুদ্ধে যদি একটি জোট গঠন করা হয়, সেই জোটে তুরস্ক থাকতে আগ্রহী৷

গত বুধবার রাজধানী দামেস্কের উপকণ্ঠে রাসায়নিক গ্যাস হামলা চালানো হয়৷ সিরীয় বিদ্রোহীদের মতে, এ হামলায় শিশুসহ অন্তত ১৩শ মানুষ নিহত হয়েছে৷ অন্যদিকে, চিকিৎসকরা বলছেন, হামলায় ৩৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে৷

এপিবি/ডিজি (এপি/এএফপি/রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য