সিরিয়া সংকট
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১২কিন্তু সিরিয়ায় রক্তপাত থেমে নেই৷ জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন ভিয়েনায় ঠিক কথাই বলেছেন: ‘‘এই সময়ে যা গুরুত্বপূর্ণ, তা হল, সিরিয়া কর্তৃপক্ষকে প্রথমে তাদের নিজের দেশের মানুষদের মারা বন্ধ করতে হবে, সহিংসতা বন্ধ করতে হবে৷''
হোমস শহরের ওপর তেরো দিনের দিন আবার গোলা দেগেছে সিরিয়ার সেনাবাহিনী৷ মধ্য সিরিয়ার হামা প্রদেশে ১৮ জন নিহত হয়েছে, দারা'য় আরো চারজনের নিহত হবার কথা জানিয়েছে মনিটররা৷ বলতে কি, দারা'য় আরো বেশি মানুষ নিহত হবার কথা শোনা যাচ্ছে৷
সেটাই হয়তো কূটনীতির উপর বাস্তবের চাপ৷ রুশ সংসদের বৈদেশিক বিষয়ক কমিটির প্রধান আলেক্সেই পুশকভ পরের সপ্তাহে সিরিয়া যাচ্ছেন, ‘‘অকুস্থলে পরিস্থিতি যাচাই করতে'', যেমন তিনি বলেছেন ইন্টারফ্যাক্স সংবাদ সংস্থাকে৷ অবশ্য রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এর আগেই দামেস্ক ঘুরে এসেছেন এবং তাতে কোনো লাভ হয়নি৷ রাশিয়া নাকি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যে প্রস্তাব নিয়ে ভোট হচ্ছে, তা'তেও নানা রদবদল চেয়েছে৷ যেমন আসাদ তার ডেপুটিকে ক্ষমতা ছেড়ে দেবেন বলে আরব লিগ যে পরিকল্পনা দিয়েছে, রাশিয়ার তা'তেও আপত্তি আছে৷ সিরিয়ার সৈন্যদের ব্যারাকে ফিরতে হলে অন্যান্য সশস্ত্র বিরোধী গোষ্ঠীদেরও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলির বিরুদ্ধে আক্রমণ বন্ধ করতে হবে, দাবি করছে রাশিয়া৷
ওদিকে বেইজিং'এর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক রিপোর্টে উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঝাই জুন বলেছেন, চীন সিরিয়ায় হস্তক্ষেপের জন্য বলপ্রয়োগের পক্ষপাতী নয়৷ এমনকি সিরিয়ার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আরোপেও যে কোনো লাভ হবে, ঝাই তা বিশ্বাস করেন না৷ ওদিকে ঝাই স্বয়ং এই শুক্রবার ও শনিবার দামেস্ক সফর করছেন৷ তবে তিনি কার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন অথবা তার কর্মসূচি কি, এ'সবই গোপন রাখা হয়েছে৷
অবশ্য চীনের মনোভাব বোঝার অন্য পন্থা আছে৷ চীনের কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র পিপলস ডেইলি তাদের সংবাদভাষ্যে গোটা মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক পরিবেশকে অত্যন্ত ভঙ্গুর বলে বর্ণনা করেছে৷ তাদের ভাষায়: ‘‘হাজার বছরের জাতিগত এবং ধর্মগত সংঘাতের একটি তালগোল''৷ কাজেই বিশ্বশক্তিদের একথা উপলব্ধি করে সিরিয়ায় রক্তপাত এবং মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার প্রসঙ্গগুলির সমাধানে বাস্তববোধের পরিচয় দিতে হবে৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক