খেলাধুলায় বিনিয়োগ
৪ ফেব্রুয়ারি ২০১২ক্রীড়া ও সংস্কৃতি মন্ত্রী লেনা আডেলসন লিলিয়েরোথ রয়টার্স সংবাদ সংস্থার একটি সাক্ষাৎকারে ব্যাপারটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন৷ লিলিয়েরোথ জানান, তার সরকারের প্রধান লক্ষ্য হল দেশের কিশোর-তরুণ সমাজকে খেলাধুলায় আগ্রহী করে তোলা৷ তার ভাষ্যে সুইডেনের ক্রীড়া আন্দোলনের মূলমন্ত্রই ছিল তাই৷
সুইডেন বিশ্ব পর্যায়ের একাধিক খেলোয়াড় গড়ে তুলেছে, যেমন টেনিসে বিয়র্ন বিয়র্গ কিংবা স্টেফান এডবার্গ, বা ফুটবলে স্লাটান ইব্রাহিমোভিচ৷ ২০০০ এবং ২০০৪'এর অলিম্পিকে চারবার সোনা জিতেছে সুইডেন৷ কিন্তু ২০০৮'এর বেইজিং অলিম্পিকে একটিও সোনা পায়নি৷ এবং নামকরা ক্রীড়াবিদদের সোনা জেতায় আদৌ আপত্তি নেই ক্রীড়া মন্ত্রীর৷ ‘‘এলিট অ্যাথলিটরা মেডেল জিতলে অন্যরা, বিশেষ করে ছোটরা খেলাধুলায় অংশ নিতে উৎসাহিত বোধ করে,'' বললেন লিলিয়েরোথ, যিনি নিজেও দূরপাল্লার দৌড়ে অংশ নেন এবং রোজ সাইকেল চালিয়ে অফিসে আসেন৷
অথচ সুইডিশ রাষ্ট্র প্রতিবছর যে ২০ কোটি অর্থ ঢেলে থাকে ক্রীড়া খাতে, তার অতি স্বল্পই যায় তথাকথিত ‘এলিট' প্রকল্পগুলিতে৷ আরো প্রায় ২০ কোটি ইউরো পরিমাণ অর্থ আসে নগর ও জেলা পরিষদগুলি থেকে৷ থাকে স্পনসররা এবং টেলিভিশন থেকে প্রাপ্ত অর্থ৷ কিন্তু এসব অর্থ ব্যয় হয় কিছুটা অন্যভাবে৷ একটা বিরাট অংশ যায় ‘স্পোর্টস লিফট' নামধারী একটি প্রকল্পে, যার কাজ হল কিশোর-কিশোরীরা ১৩-১৪ বছরের পরে যা'তে খেলাধুলো ছেড়ে না দেয়, তার ব্যবস্থা করা৷ এখানে বিশেষ নজর দেওয়া হয় বহিরাগত পরিবারগুলির মেয়েদের দিকে, কেননা তারা সাধারণত খেলাধুলার বিশেষ সুযোগ পায় না৷
কোন স্পোর্টসে টাকা ঢালা হবে, সে'ব্যাপারেও সুইডিশ সরকারের বক্তব্য: ফুটবল তো সবাই চেনে, সবাই খেলে৷ কিন্তু ক'জন ছেলেমেয়ে টেনিস, কি সাঁতার, কি ফেন্সিং পরখ করেছে? ফুটবল কি হকি ভালো না লাগলে, বাসকেটবল কি কানু চালানো ট্রাই করে দেখা যেতে পারে৷ আসল কথা হল, ছেলেমেয়েরা খেলছে, শরীর-স্বাস্থ্যের জন্য কিছু একটা করছে৷
সোনার মেডেলের চেয়ে যার দাম একটা জাতির কাছে অনেক বেশি৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই