সুশাসন প্রতিষ্ঠা
৬ মে ২০১৪সামহয়্যার ইন ব্লগে অনিক মাহফুজ প্রশ্ন রেখেছেন, ‘বিচার হবে না??' অনিক লিখেছেন, ‘‘হত্যা, খুন জখম আর অপহরণের অভয়ারণ্যে বাস করে এটুকু নিশ্চিত বুঝতে পেরে গেছেন যে, যে ঘটনাটা আজ আপনার প্রতিবেশীর সাথে হয়েছে সেটা কাল আপনার সাথেও ঘটতে পারে৷ দুর্মূল্যের বাজারে সবচেয়ে সস্তা যে আপনার জীবন৷ তাহলে স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক হওয়ার পরও কোথায় আমাদের জীবনের নিরাপত্তা?? এ কেমন স্বাধীন দেশ যে তার নাগরিকদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে না??''
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পরামর্শ দেয়ার আগে তিনি লিখেছেন, ‘‘গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় সর্বময় শাসন ক্ষমতার অধিকারি হয় জনগণ, যাতে থাকে সরকার গঠনকারী দলের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা৷ কিন্তু এ দেশের মানুষ নিজেদের অধিকার অপরের হাতে তুলে দিয়ে শান্তিতে টিভির সামনে বসে অন্যের ওপর আসা আঘাত দেখে আফসোসের মাধ্যমে সমব্যথী হওয়ার চেষ্টা করে আর অকস্মাৎ চিৎকার দিয়ে ওঠে যখন দেখে টিভিতে দেখা সিরিয়াল নিজের ওপর বাস্তবায়িত হচ্ছে৷ দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে মানুষ সামনের দিকে অগ্রসর হয় আর আমরা তো দেয়ালটাকেই ভেঙে ফেলছি৷... ২৪ নভেম্বর ২০১২, ১১২ জন শ্রমিক আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে শেষে জায়গা করে নিল জুরাইন কবরস্থানের গণকবরের৷ যে ৪৩ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে কেবল তাদেরই কপালে জুটেছিল পরিবারের জানাজা, বাকিরা কেবলই বেওয়ারিশ৷ এই ঘটনার এক বছর পর আসামিদের বিরুদ্ধে তৈরি হয় চার্জশিট৷ ব্যাপারটা হাস্যকর হলেও সত্যি৷ মিডিয়ার কয়েকদিনের তোলপাড়ের পর আঁধারে ডুবল সবকিছু৷ বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ছোটা অসহায় স্বজনদের ভাগ্যে কি জুটল সে সম্বন্ধে রয়ে গেল অজ্ঞাত দেশবাসী৷''
তারপর? অনিকই জানাচ্ছেন, ‘‘২৪ শে এপ্রিল রানা প্লাজা ধ্বসের নায়ক রানাকে নিয়ে প্রবল তোলপাড়ের পর আর কোন খবরই পাওয়া গেলনা৷ এখনো বিচারের আশায় পথ চেয়ে বসে থাকার অপেক্ষার প্রহর কেবলই বাড়ছে কিন্তু বিচার পাওয়া যাচ্ছেন৷৷ ১১২৯ জন মারা গেল, ৯৯৬ জন নিখোঁজ হলো, ২৫০০ জনের বেশি আহত হলো অকালে পঙ্গুত্ব বরণ করে অভিশপ্ত জীবনের পথে পা বাড়ালো, কিন্তু ১ বছর পার হয়ে যাবার পরও কোন বিচার পেলনা৷
প্রতিদিন পত্রিকার প্রথম পাতাটি দখল করে থাকে হত্যা, গুম আর অপহরণের খবর৷ খুন হয়, গুম হয় কিন্তু বিচার হয়না৷ মানুষের হাহাকার কেবল বাতাসে ভাসে প্রশাসন পর্যন্ত পৌঁছায় না আর এর মাঝেই চলে মৃত মানুষগুলোকে নিয়ে রাজনৈতিক নোংরামি৷ এক সময়ের বিশুদ্ধ পানির প্রবাহমান নদী হিসেবে পরিচিত শীতলক্ষ্যা এখন কেবলই একটি মৃত্যুকুপ৷ যেখানে মাছের বদলে পাওয়া যায় লাশ আর নদীর পাড়ে দাঁড়ালে পাওয়া যায় লাশের গন্ধ৷ বাতাসে কান পাতলেই শোনা বৃদ্ধা মা কাঁদছে, সদ্য বিধবা হওয়া নববধূটি হাহাকার করছে, ভাইহারা বোন আর্তনাদ করছে৷
বন্দর নগরীর নারায়ণগঞ্জ এখন মৃত্যু আর গুমের নগরীতে পরিণত হয়েছে৷ সব জেনে না জানার ভান করা অভিনেতাদের অভিনয় সত্যিই প্রশংসার যোগ্য নয়তো সাতদিন পর আসামির বাড়ি তল্লাশির নাটকটি করা সম্ভব হতো না৷ আমরা সবাইতো কেবল নির্বাক দর্শক৷''
সামহয়্যার ইন ব্লগের এই ব্লগারের বর্ণনায় কেউ কেউ অতিরঞ্জনের আভাস পেতেই পারেন, তাই বলে বাংলাদেশে অনেক বড় বড় ঘটনারই যে বিচার হয়নি, এখনো হয়না- এ কথা কে অস্বীকার করতে পারবেন?
অনিক তাঁর লেখা শেষ করেছেন এভাবে, ‘‘এটা যে মগের মুল্লুকে পরিণত হয়েছে তা স্পষ্ট দৃশ্যমান৷ হত্যা হয় বিচার হয়না, ধর্ষণ হয় বিচার হয়না, মায়ের বুক খালি হয় বিচার হয়না৷ শুধু হয় মামলার ওপর মামলা আর লোক দেখানো তদন্ত৷ দেশের বাতাস এখন ভারী মায়ের আহাজারীতে দেশের মাটি এখন সিক্ত মানুষের রক্তে৷ এতকিছুর পর এ মাটির ওপর দাঁড়ালে মনে কেবল একটি কথাই বারবার উঁকি দেয় এতগুলো লোক মারা গেল, মায়ের বুক খালি হলো৷ বিচার হবেনা??''
সামহয়্যার ইন ব্লগের আগের ব্লগার মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন-এর পোস্টের শিরোনাম, ‘‘চলমান অপহরণ- গুম-খুন, কোনো বিশেষ এজেন্ডা বাস্তবায়নের অংশ বা ভয়ঙ্কর ভবিষ্যতের আলামত নয় তো?''
শুরুতেই তিনি দিয়েছেন বর্তমান সরকারের কিছু সাফল্য এবং সাফল্যের আশা জাগানিয়া অঙ্গীকারের বর্ণনা৷ লিখেছেন, ‘‘ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু৷ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃপ্ত উচ্চারণ ‘‘আমরা এর কাজ শেষ করতে পারবো'' কিংবা গাইবান্ধা-চাঁদপুর নদীপথে টানেল নির্মাণের স্বপ্ন- এসবই আমাদের স্বপ্নাতুর করে তোলে৷ করে গর্বিত৷ স্বপ্ন দেখায় একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের৷ কিন্তু কোনো শ্মশানের উপর দাঁড়িয়ে নিশ্চয়ই সেই সমৃদ্ধি কাম্য নয়৷
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এএমআইই'র ডিগ্রি ও পদক প্রদান অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তৃতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন যা প্রণিধানযোগ্য৷ তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানের কাজ করতে প্রয়োজন শুধু আত্মবিশ্বাস৷ আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করুন, তাহলে সফল হবেন'৷ সত্যিই তাই; যে কোনো উন্নত কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করতে সবার আগে প্রয়োজন প্রবল আত্মবিশ্বাস৷ সেইসাথে প্রয়োজন সততা - একাগ্রতা৷ আর সর্বাগ্রে এবং সবথেকে যেটি বেশি প্রয়োজন তা হলো সদিচ্ছা৷ আমাদের সরকার বাহাদুরের অভাব যদি কিছু থেকে থাকে তা ঐ সদিচ্ছারই৷ যার সাথে যোগ হয় আপন-পরের ভেদ যাকে আমরা বলি এক চোখা নীতি৷ এই দুইয়ের দুষ্ট চক্রে পড়ে দেশের মানুষের ওঠে নাভিশ্বাস! বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে৷ মহাজনের কুম্ভিরাশ্রু উপহাস বলে মনে হয়৷ পরিশেষে স্রষ্টার দরবারে সকল অভিশাপ গচ্ছিত রেখে শুরু হয় ‘‘অভাজনের'' নতুন পথ চলা৷''
বাংলাদেশে স্বজন বা স্বদল প্রীতির সুদীর্ঘ অতীতের কথাও তুলে ধরেছেন মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন৷ তাঁর মতে, ‘‘শ্যাম রাখি না কুল রাখি, ধরনের সমস্যায় এ দেশে পূর্বাপর প্রায় প্রতিটি সরকারকেই পড়তে দেখা গেছে৷ এই দ্বিধান্বিত মনোভাবের কারণেই তারা বারংবার সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয়েছেন৷ যার খেসারত দিতে হয়েছে দেশকে, দেশের সাধারণ মানুষকে৷ ক্ষমতাসীনরা ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন ঠিকই কিন্তু শিক্ষা গ্রহণে ব্যর্থ হয়েছেন৷''
তারপর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে তিনি লিখেছেন, ‘‘আজও সেই একই দুষ্টচক্র আওয়ামী সরকারের ভীতকেই যখন নড়বড়ে করে তুলছে সম্ভবত তখনও তারা তা অনুধাবনে সক্ষম হননি৷ যদি এবারও চুয়ান্ন'র ইতিহাসের (অনেকের আশংকা) পুনরাবৃত্তি ঘটে! আওয়ামী লীগের আর কীইবা এমন ক্ষতি হবে৷ তাদের থেকে অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশ৷ যা পুষিয়ে নিতে হয়ত কয়েক দশক লেগে যাবে৷ এই যে এত কথা বলা; এতটা উৎকণ্ঠিত হওয়া তার পেছনে কারণ ঐ একটিই৷ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী; আওয়ামী লীগের বিকল্প মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষীয় শক্তি আজো এদেশে গড়ে ওঠেনি৷ আর তাই স্বাধীনতার চুয়াল্লিশ বছর পরে এসেও আওয়ামী লীগকেই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হচ্ছে৷ এটা আওয়ামী লীগের জন্য হয়ত গর্বের তবে সাধারণ মানুষের জন্য মোটেই স্বস্তির নয়৷ এর প্রধান কারণ আজকের আওয়ামী লিগের অনেক কিছুই আর পূর্বের আওয়ামী লীগের মতো নেই৷ আওয়ামী লিগের কাণ্ডারি হিসেবে বঙ্গবন্ধুকে এ জাতি আর কোনোদিন পাবে না এটা চিরায়ত সত্য৷ কিন্তু তাই বলে তার আপোশহীনতা, ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তা, আদর্শ, দেশপ্রেম, তার দেখানো পথের দিশা তো আমরা পেতেই পারি৷ যেহেতু তারই উত্তরসূরির হাতে শাসিত হচ্ছে দেশ৷ আমরা কি তা পাচ্ছি?''
দেশের রাজনীতির বড় এক বাস্তবতাকেও ছুঁয়ে গেছে গালিবের লেখা৷ এ প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, ‘‘এ দেশে সব সময়ই ক্ষমতাসীন দল এবং সরকার একাকার হয়ে যায়৷ যেন এটাই নিয়ম৷ দল সরকারে থাকলে জন সম্পৃক্ততা রাখতে নেই৷ জনগণের পাশে দাঁড়াতে নেই৷ জনসাধারণের কণ্ঠে কণ্ঠ মেলাতে নেই! দেশব্যাপী চলমান এই গুম-হত্যা নিশ্চয়ই দল হিসেবে আওয়ামী লীগেরও কাম্য নয়? অথচ এর বিরুদ্ধে তারা নিশ্চুপ৷ কেন? কেন অন্যান্য দলের মতো তারাও এর বিরুদ্ধে সরব হয়ে উঠছে না? তাদের ভাষায়, এর জন্য যদি বিএনপি-জামায়াত বা অন্য কোনো শক্তিই দায়ী হয়ে থাকে! তাহলে তো তাদের আরও বেশি সরব হয়ে ওঠার কথা৷ কেন তারা চুপ করে বসে আছে?''
সবশেষে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে মোঃ গালিব মেহেদী খাঁনের বিশ্লেষণ, ‘‘একটি পদ্মা সেতু এদেশের অর্থনীতির চেহারা পাল্টাতে যতটা সহায়ক ভূমিকা পালন করবে, তার থেকে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে এ জাতীকে৷ আর সে জন্যেই পদ্মা সেতুর বাস্তবায়নে যত জটিলতা সৃষ্টি করা হয়েছে এখন তার থেকেও অনেক বেশি সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করা হচ্ছে৷ যাতে বর্তমান সরকার আর বেশি এগোতে না পারে৷ আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকগণ বিষয়টি বুঝতে অক্ষম এমন কথা বলার মত অতটা মূর্খ আমি নই, তবে এটা নিঃসংকোচে বলতে পারি নেতারা একে ধর্তব্যের মধ্যে নিচ্ছেন না৷....দেশে হত্যা-গুম-খুন নতুন নয়৷ বছরের পর বছর ধরেই এটা চলে আসছে৷ বিচারহীনতার সংস্কৃতি আর ভুলোমনা এ জাতির কল্যাণে সহজেই তা চাপাও পড়ে যায়৷ কিন্তু হঠাৎ করেই তা সমগ্র দেশকে কেন গ্রাস করল? এ প্রশ্নটি কেউ করছে না৷ যারা অপহৃত হচ্ছেন তাদের পরিচয়কে উপজীব্য ধরে নিয়ে বিশ্লেষণ করলে কারণ হিসেবে প্রথমেই চলে আসবে মুক্তিপণ আদায়ের প্রসঙ্গটি৷ অথচ মাঝে মাঝে মুক্তিপণের কথা শোনা গেলেও তা এতটাই অস্পষ্ট যে এ দাবিটিকে আর মুখ্য বলে ধরে নেয়ার উপায় থাকছে না৷ আর দ্বিতীয় কারণ হিসেবে প্রতিপক্ষের প্রতিহিংসাকে ধরে নিলে কিছু ক্ষেত্রে তাকে উপযুক্ত বলে মনে হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটাও অসাড় বলেই প্রমাণিত হচ্ছে৷ স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এটা দেশব্যাপী একটি সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টিরই অপপ্রয়াস কিনা৷''
অতীতের কিছু ঘটনাই গালিবকে সংশয়ে ফেলেছে৷ তাঁর অন্তত সেরকমই দাবি৷ সংশয়ের পক্ষে যুক্তি দেখাতে গিয়ে গালিব লিখেছেন, ‘‘ আমরা তো দেখেছি নেতা আহ্বান জানালেন সীতাকুণ্ড মডেলে আন্দোলন করতে হবে৷ এর অব্যবহিত পরেই পুরো দেশ সীতাকুণ্ড হয়ে উঠল!...নেতা যেইমাত্র হুশিয়ারি উচ্চারণ করলেন গুপ্ত হত্যার মাধ্যমে জনগণ ক্ষমতার পরিবর্তন করবে, অমনি দেশব্যাপী শুরু হয়ে গেল গুম হত্যার মহোৎসব! এ সবই যদি কাকতালীয় হয়, হতে পারে৷ তবে এই যে একা চলতে নিষেধ করার মতো উপদেশ প্রদান একে আমরা ভয়াবহ ভবিষ্যতের আলামত হিসেবেই দেখছি যা মানুষকে আরও বেশি আতঙ্কগ্রস্ত করে তুলছে, কেননা বেগম খালেদা জিয়া যখন নিজেই বলেন, ‘অপহরণ-গুম-খুন ও সকল নৈরাজ্য বন্ধ করতে হলে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে', তখন একে পরিকল্পিত বললে কি খুব বেশি বলা হয়ে যায়? চলমান অপহরণ- গুম-খুন এ সব, কোনো বিশেষ এজেন্ডা বাস্তবায়নের অংশ বা ভয়ঙ্কর ভবিষ্যতের আলামত নয় তো? এ ভাবনা আজ সচেতন সব মহলকেই পেয়ে বসেছে৷''
গালিবের শেষ উপলব্ধিটা এরকম, ‘‘আজ নির্মোহ বিচারের সময় এসেছে৷ আর সেটাই হতে পারে এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের সঠিক এবং একমাত্র উপায়৷ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমরা কি এইটুকু অন্তত আশা করতে পারি না৷ আমাদের প্রশাসন যোগ্য, তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ করে দিন৷ অপরাধীরা ধরা পড়বেই৷ দলমত নির্বিশেষে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করুন৷ প্রশাসনের প্রতি সরকারের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনার এটাই একমাত্র পথ৷ যদি কেউ কোনো অন্যায় করে থাকে তাকে আইনের আওতায় নিতে হবে৷ তাতে তার পরিচয় যা-ই হোক না কেন৷ সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে দোষী ব্যক্তিকে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি প্রদান করতে হবে৷ যে জাতী স্বাধীনতার ৪২ বছর পার করে এসেও মহান মুক্তিযুদ্ধের দায় মেটাতে প্রবল প্রতাপশালী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে পারে সে জাতী কেন দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না৷ অবশ্যই পারবে৷ প্রয়োজন কেবল সদিচ্ছা৷ আর সেই সদিচ্ছার প্রতিফলনটুকুই এবার আমরা দেখতে চাই৷''
সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন