স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তায় জার্মান কোম্পানি
১৬ জুন ২০২০জার্মানির পূর্বাঞ্চলে স্যোরবিশ শহরের মেয়র মাটিয়াস এগার্ট অনুদান হিসেবে দেড়শ’ লিটার স্যানিটাইজার গ্রহণ করতে স্বয়ং ফ্যারবিও কোম্পানির দপ্তরে এসেছেন৷ স্থানীয় বৃদ্ধাবাস ও হাসপাতালে স্যানিটাইজারের অভাবের কথা শুনে তিনি এই কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করেন৷ এগার্ট বলেন, ‘‘তাঁরা খুব খুশি৷ যা ছিল, তা দিয়ে বড়জোর আরও এক সপ্তাহ চলতো৷ বৃদ্ধাবাসসহ চিকিৎসা পরিষেবার সব প্রতিষ্ঠানই স্যানেটাইজার সরবরাহ নিয়ে সমস্যায় পড়ছে৷ তাই অভাব দেখা দেবার ঠিক আগে আমরা সেগুলি পৌঁছে দিচ্ছি৷’’
স্বাভাবিক অবস্থায় ফ্যারবিও কোম্পানি বায়োফুয়েল বা জৈব জ্বালানীর জন্য শস্য থেকে ইথানল উৎপাদন করে৷ কিন্তু করোনা সংকটের ফলে সেই ব্যবসায় লোকসান হচ্ছে৷ তাই ইথানল থেকে জীবাণুনাশক তৈরি করাও পরিস্থিতি সামাল দেবার অন্যতম উপায়৷
কখনো দান হিসেবে, কখনো ওষুধের দোকান বা হাসপাতালকে স্যানিটাইজার বিক্রি করা হচ্ছে৷ তারা লিটার প্রতি ১৫ ইউরো দরে অ্যালকোহল বিক্রি করতে পারে৷ ফ্যারবিও কোম্পানির কাছে এখনই প্রায় ৫০০ অর্ডার এসে গেছে৷ কিন্তু উৎপাদন প্রক্রিয়া বদলানো মোটেই সহজ কাজ ছিল না৷ ফ্যারবিও কোম্পানির প্রধান ভল্ফরাম ক্লাইন বলেন, ‘‘পরিবহণের ক্ষেত্রে আমরা যে ধরনের চ্যালেঞ্জে অভ্যস্ত, এটা সেই তুলনায় একেবারই ভিন্ন৷ এখনো পর্যন্ত আমরা ট্রেনের সব ট্যাংকবাহী ওয়াগান ভরে ফেলতাম৷ একটি অর্ডারেই দেড় হাজার টন বা ১৮ লাখ লিটার সরবরাহ করি৷ আর এখন আমরা দশ বা বিশ লিটারের অর্ডার পাচ্ছি৷’’
মেয়র এগার্ট দান করা ইথানলের কিছু অংশ পার্শ্ববর্তী ক্যোটেন শহরের এক মেডিকাল ভোকেশনাল স্কুলে নিয়ে গেছেন৷ অ্যামবুলেন্স কর্মীরা ভ্রাম্যমাণ করোনা ভাইরাস পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছেন৷ সেই কাজের সময় তাঁদের নিজেদের সুরক্ষাও জরুরি৷ ক্যোটেন শহরের অ্যামবুলেন্স কর্মী রাইমন্ড শুলৎস মনে করেন, ‘‘জরুরি পরিস্থিতিতে এই অঞ্চলের কোম্পানিগুলির এমন প্রতিক্রিয়া বেশ স্বাভাবিক ঘটনা৷ উদ্যোগপতিদের এমনটা করতেই হয়৷ আসল বিষয় হলো, এ ক্ষেত্রে প্রাণ বাঁচানো হচ্ছে৷ ফ্যারবিও কোম্পানি সেই কাজে আমাদের সাহায্য করছে৷’’
তবে দান করা ইথানল দ্রুত শেষ হয়ে যাবে বলে প্যারামেডিক কর্মীরা আশঙ্কা করছেন৷ ফ্যারবিও উৎপাদন বাড়িয়ে চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করছে৷ সপ্তাহে চল্লিশ হাজারের বদলে আশি হাজার লিটার জীবাণুনাশক উৎপাদনের আশা করছে এই কোম্পানি৷
আলেক্সা মায়ার/এসবি