১১ বছরে ৭৫০ পোশাক শ্রমিক নিহত
২৮ এপ্রিল ২০১৩বাংলাদেশ ইন্সটিউট অব লেবার স্টাডিজ-এর হিসেব অনুযায়ী ২০০২ সাল থেকে ২০১৩ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত তৈরি পোশাক শিল্পে অঘটনে যে সাড়ে ৭শ' শ্রমিক নিহত হয়েছেন তাদের অধিকাংশই আগুন এবং ভবন ধসের ঘটনায় নিহত হন৷ আর আহত হয়েছেন প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক৷ এদের মধ্যে বড় একটি অংশ পঙ্গু হয়ে কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন৷ কিন্তু নিহত এবং আহতদের পরিবার অনেক ক্ষেত্রেই ক্ষতিপূরণ পাননি৷ আবার যারা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন তা নামমাত্র৷ বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক সিরাজুল ইসলাম রনি ডয়চে ভেলেক জানান, এপর্যন্ত এইসব ঘটনার জন্য দায়ী কোনো মালিক শাস্তি পাননি৷ তিনি বলেন রানা প্লাজার ঘটনার আগে তাজরীন ফ্যাশানস-এ আগুনে শ্রমিকদের প্রাণ গেলেও মালিককে এখনো গ্রেফতার করা হয়নি৷ অথচ তাজরীন ফ্যাশানস-এর অগ্নি নিরাপত্তার কোনো লাইসেন্সই ছিলনা৷
তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ'র সভাপতি আতিকুল ইসলাম অবশ্য দাবি করেছেন প্রতিটি ঘটনায়ই বিজিএমইএ'র পক্ষ থেকে তদন্ত করা হয়েছে৷ সরকারও তদন্ত করেছে৷ প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে মামলাও হয়েছে৷ বাকিটা দেশের প্রচলিত আইন এবং বিচার ব্যবস্থার বিষয়৷ তিনি বলেন রানা প্লাজার ঘটনায় তারা কোনো ছাড় দেননি৷ দুজন মালিক আটক হয়েছেন৷ তাদের রিমান্ডেও নেয়া হয়েছে৷ আর ওই ভবনের পোশাক কারখানার শ্রমিকদের চলতি মাসের বেতন বিজিএমইএ'র পক্ষ থেকে পরিশোধের ঘোষণা দেয়া হয়েছে৷ তিনি জানান ত্রুটিপূর্ণ পোশাক কারখানার তালিকা তৈরির একটি উদ্যোগ নিয়েছেন তারা৷ এই তালিকা তৈরি করে তারা সেখানে কাজের পরিবেশ এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নেবেন৷
শ্রম মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ইস্রাফিল আলম এমপি স্বীকার করেন যে এখন পর্যন্ত কোনো গার্মেন্টস মালিক শাস্তি পাননি সত্য, কিন্তু সরকার এবার কঠোর অবস্থান নিয়েছে৷ তিনি বলেন সরকারের অবস্থানের কারণেই ২ জন গার্মেন্টস মালিক গ্রেফতার হয়েছেন৷ বাকি মালিকরাও গ্রেফতার হবেন৷ কাউকেই ছাড় দেয়া হবেনা৷ তিনি জানান সরকার তৈরি পোশাক শিল্পে শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ এবং নিরাপত্তার ব্যাপারে পদক্ষেপ নিচ্ছে৷ এজন্য পোশাক কারখানাগুলোতে সরেজমিন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে৷