1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মিয়ানমারে তথ্য-প্রযুক্তি

১৫ জুন ২০১২

দুনিয়াটা সত্যিই বদলে গেছে৷ বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তির দুনিয়া৷ অনলাইন জানিয়ে দিচ্ছে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কথা বিশদে৷ বৌদ্ধদের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের সমস্যার সাতকাহনের নেপথ্যের কাহিনী এখন সকলেই জেনে যাচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/15Ec7
ছবি: Reuters

ছবিটা মোটেই এমন ছিল না৷ মিয়ানমারে সদ্য আগত যোগাযোগের স্বাধীনতা যে কতটা কাজে লাগছে, তা বোঝা যাচ্ছে এবার৷ তা নাহলে, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বৌদ্ধদের কিংবা মিয়ানমারের অন্যান্য জনজাতিদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আর তার সমস্যার বিষয়ে কারও কোনো ধারণাই ছিল না বহির্বিশ্বে৷ এমন কি মিয়ানমারের অভ্যন্তরেও এ নিয়ে হাজারো মতভেদ রয়েছে৷ সেসব মতভেদের মধ্যে কার কী মতামত, তা জানার বিষয়ে কারও আগ্রহ ছিল না অতীতে৷ যারা জানাতে চায়, তারাও জানাবার উপায় খুঁজে পাচ্ছিল না৷

Facebook iPad
এবার মিয়ানমারেও পৌঁছে গেছে তথ্য-প্রযুক্তিছবি: picture alliance/dpa

এবার আর উপায় খোঁজার দরকার নেই৷ হাতের মুঠোয় সহজে রয়েছে সেই মহা মূল্যবান উপায়ের সন্ধান৷ তার নাম হল ইন্টারনেট৷ ইন্টারনেটের ওপরে বিশাল বিধিনিষেধ আরোপিত ছিল মিয়ানমারে৷ দীর্ঘ কয়েক দশক জোড়া সামরিক শাসনের সময়ে সেদেশে খোলাখুলিভাবে কথা বলা তো দূরস্থান, সংবাদমাধ্যমকে মানে সংবাদপত্রকে তাদের প্রতিদিনের কাগজে কী বের হবে তা আগাম সামরিক শাসকদের দপ্তরে গিয়ে দেখিয়ে আসতে হত৷ সে দিকটিকে কীভাবে তারা সু চি রাজনীতিতে আসার পর সামলাচ্ছে, তা অন্য কথা৷ কিন্তু বাইরের দুনিয়াকে দেশের অভ্যন্তরের পরিস্থিতি জানাতে ইন্টারনেট এখন বেশ সচল মিয়ানমারে৷ আর কিছু না হোক, ইন্টারনেটের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়াটা যে বেশ কাজে এসেছে, তা মানতেই হবে৷

ইন্টারনেটকে ভালো কাজে লাগানোর পাশাপাশি খারাপ কাজেও যে ব্যবহার করা হচ্ছে না, এমনটা নয়৷ অনেক বিশেষজ্ঞই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা বনাম বৌদ্ধ পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এবং তার ফলে উদ্ভূত রায়টের আশঙ্কা জ্ঞাপন করে মতপ্রকাশ করছেন৷ কারও কারও মতে, ইন্টারনেটের মাধ্যমে রায়টকারীরাও সংগঠিত হচ্ছে৷

Birma Unruhen in der Provinz Rakhine führen zu Protesten in Yangon
রাখাইন প্রদেশে অশান্তির ঢেউছবি: picture-alliance/dpa

তার প্রমাণ যে নেই তাও নয়৷ মিয়ানমারের যে প্রদেশটিতে রোহিঙ্গারা সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় বসবাস করে থাকে, সেটার নাম হল রাখাইন৷ এই রাখাইন প্রদেশে বসবাসকারী প্রায় ৮ লক্ষ রোহিঙ্গাকে কোনো সময়েই ঠিক ভালো চোখে দেখেনি বার্মিজরা৷ তাদের অনেকেরই ধারণা এই রোহিঙ্গারা আদৌ মিয়ানমারের আদি বাসিন্দা নয়৷ তারা বাংলাদেশ থেকে আসা শরণার্থী মাত্র৷ জাতিসংঘের বিচারে বিশ্বের অন্যতম নিশ্চিহ্ন হতে চলা মানবগোষ্ঠীর মধ্যেই পড়ে এই রোহিঙ্গারা৷ জাতিসংঘ যে কারণে তাদের সেভাবেই দেখে থাকে৷ কিন্তু জাতিসংঘের চোখ দিয়ে রোহিঙ্গাদের দেখে না বার্মিজরা৷ তার ফলেই মিয়ানমারের শতকরা হিসেবে সংখ্যাগুরু বৌদ্ধ সম্প্রদায় এই রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সমস্যা সৃষ্টি করছে অনেকদিন ধরে৷ তফাত হল, এতদিন সে বিষয়ে বিশদে কেউই জানত না৷

এদিকে ইন্টারনেটে সবকিছু ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে এক ধরণের লড়াই সেখানেও চলছে৷ অনলাইনে বিভিন্নভাবে রীতিমত হিংসাত্মক এবং উস্কানিমূলকভাবে একে অপরের বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করেছে দুই পক্ষ৷ কোথাও দেখা যাচ্ছে, মূলত ধর্মবিশ্বাসে ইসলামপন্থী রোহিঙ্গাদের পক্ষ নিয়ে বিভিন্ন ইসলামিক ওয়েবসাইট আসরে নেমেছে৷ আবার কোথাও উল্টো ছবি৷ আর এইসব ওয়েবসাইটেই যে সত্য কথা বলা হচ্ছে, তা নয়৷ কোথাও কোথাও অতিরঞ্জন কিংবা উস্কানি দিয়ে রায়টকে পেশিশক্তি যোগানোর বা অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করার কথাও দেখা যাচ্ছে৷

সমাজবিদ আর বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এর ফলে অন্য সমস্যা দেখা দেবে৷ রায়ট থামবে না যেমন, তেমনই আবার দেখা যাবে একধরণের ধর্মীয় সংকীর্ণতার কারণে সামাজিক কাঠামোয় বড়সড় চিড় ধরে যাবে৷ যা কখনোই কাম্য নয় বলে মতপ্রকাশ করছেন অনেকেই৷

এসইউবি / ডিজি (এএফপি, রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য