অনশন ভাঙলেও আন্দোলন চালিয়ে যাবেন হাজারে
২৮ আগস্ট ২০১১ভারতে সর্বগ্রাসী দুর্নীতির সবচেয়ে ভয়াবহ শিকার হচ্ছে যেসব মানুষ সেই মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষগুলোর উপস্থিতি ছিলে চোখে পড়ার মত৷ নতুন দিল্লির রামলীলা ময়দানে গত কয়েকদিনে এদের সংখ্যাই ছিল বেশি৷ আন্না হাজারের দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনে এইসব সাধারণ মানুষ তাদের অকুন্ঠ সমর্থন জানিয়েছে৷ দেশের নানা প্রান্ত থেকে তারা ছুটে গিয়েছে দিল্লির রামলীলা ময়দানে হাজারেকে সমর্থন যোগাতে৷
লোকপাল বিল নিয়ে সরকার দাবি মেনে নেওয়ায় অবশেষে ২৯০ ঘন্টার অনশন ভাঙেন আন্না হাজারে৷ ভারতের পদ্ম বিভূষণ খেতাবধারী এই সমাজকর্মী উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, লোকপাল বিলের জন্য শুভকামনা থাকলো৷ আজ লোকপাল বিলের অর্ধেক বিজয় হয়েছে, এখনও পুরো বিজয় বাকি রয়েছে৷ আন্না হাজারে আরও জানিয়েছেন, আগামী ২০১৪ সালে ভারতের লোকসভা নির্বাচনের আগে তিনি সারা দেশে দুর্নীতি বিরোধী প্রচারণা চালাবেন৷ দুর্নীতিবাজ মানুষরা যাতে এই নির্বাচনে অংশ না নিতে পারে সেজন্য তিনি আন্দোলন চালিয়ে যাবেন৷ উল্লেখ্য, ভারতের সংসদ সদস্যদের শতকরা ৩০ ভাগের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে৷ এছাড়া প্রশাসনের সব পর্যায়ে দুর্নীতির কারণে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে৷
এই দুর্নীতি দূর করার জন্য গত এপ্রিলে প্রথমবারের মত অনশন করেন আন্না হাজারে৷ তিনি দুর্নীতিবাজ কয়েকজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান৷ সরকার তার সেই দাবি মেনেও নেয়৷ এই মাসে কংগ্রেস সরকার দুর্নীতি বিরোধী লোকপাল বিল সংসদে উত্থাপন করে৷ তবে সেই বিলে তিনটি প্রস্তাব যোগ করার দাবিতে আবারও অনশনের ঘোষণা দেন হাজারে৷ অনশনের আগেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়৷ কিন্তু ব্যাপক সমালোচনার মুখে তাঁকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় মনমোহন সিং এর সরকার৷
আন্না হাজারের তিনটি প্রস্তাব ছিল এই: প্রথমত কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজ্যগুলোতেও দুর্নীতি বিরোধী স্বাধীন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা৷ দ্বিতীয়ত, বিচারক ছাড়া আর সকল সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারিকে এই প্রতিষ্ঠানের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য করা এবং তৃতীয়ত, সরকারি কাজে স্বচ্ছতা আনতে সিটিজেন চার্টার চালু করা৷ লোকপাল বিলে এইসব দাবি মেনে নেওয়ার কথা জানিয়েছে ভারতের সরকার৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: জাহিদুল হক