লোকপাল ইস্যুতে সরকার ও আন্না শিবিরের জট কাটেনি
২২ আগস্ট ২০১১আজ অনশনের ৭ম দিবসে আন্না শিবিরের দাবি, সংসদে সরকারের লোকপাল বিল তুলে নিয়ে আন্না হাজারের জন লোকপাল বিলটি পেশ করে ৩০শে অগাস্টের মধ্যে তা সংসদে পাশ করা হোক৷ তবে সরকারের সঙ্গে আলোচনার পথ খোলা রাখা হয়েছে৷ সরকার পক্ষে আলোচনাকারী হিসেবে যাঁদের নাম উঠে আসছে তাঁরা হলেন কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রী মহারাষ্ট্রের সুশীল কুমার সিন্ধে এবং রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিলাস রাও দেশমুখ৷ এছাড়া আছেন ইন্দোরের এক ধর্মগুরুর নাম৷ এরা সবাই আন্নার ঘনিষ্ঠ৷
আন্নার দাবি, তিনি এবিষয়ে কথা বলবেন শুধু প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং এবং কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক রাহুল গান্ধীর সঙ্গে৷৩০শে অগাস্টের মধ্যে হয় জন লোকপাল বিল পাশ করতে হবে নাহয় সরকারকে সরে যেতে হবে৷৩০শে অগাস্টের পর আন্দোলন আরো জোরদার হবে৷ প্রধানমন্ত্রী, সাংসদ ও মন্ত্রীদের বাসভবনের সামনে ধর্ণা দেবার ডাক দেন আন্না৷ চলতি আন্দোলনের ভবিষ্যৎ রোডম্যাপ নিয়ে আন্না শিবিরে আলোচনা হয়৷ সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী মেধা পাটকর৷
লোকপাল ও জন লোকপাল বিল দুটির মধ্যে তুলনামূলক আলোচনার জন্য দুটি বিলই পাঠানো হয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে৷ কমিটির বৈঠক বসছে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে৷ সংসদীয় কমিটির প্রধান অভিষেক মনু সিংভি বলেছেন, ৩০শে অগাস্টের সময়সীমা মানা সম্ভব নয়৷ তবে যাঁরা সরকারের লোকপাল বিল সম্পর্কে সন্দিহান তাঁদের জন্য চমক থাকতে পারে৷ চমক বলতে তিনি কী বোঝাচ্ছেন, তা খোলসা করেন নি৷ পর্যবেক্ষকদের মতে, প্রধানমন্ত্রীকে বিলের আওতায় আনা৷ বিচার বিভাগের জন্য বিচার বিভাগীয় দায়বদ্ধতা বিলকে কড়া করা৷
এদিকে শীর্ষ বিজেপি নেতা লাল কৃষ্ণ আডবানি বলেছেন, মনমোহন সিং সরকার দুর্নীতি ইস্যুর মোকাবিলায় ব্যর্থ হওয়ায়, তাঁর উচিত নতুন করে জনাদেশ নেয়া৷ সরকারকে বাঁচাতে সংসদে টাকার বিনিময়ে ভোট কেনার অভিযোগ তোলেন তিনি কংগ্রেস-জোট সরকারের বিরুদ্ধে৷ বুকার পুরস্কার বিজেতা লেখিকা অরুন্ধতী রায়ের মতে, আন্নার আদর্শ গান্ধীবাদ হলেও তাঁর দাবিগুলি নয়৷ গান্ধীজির নীতি ছিল ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ আর আন্নার পথ হলো, দুর্নীতি বিরোধী জন লোকপাল বিল৷ তাতে মনোনীত কিছু ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী, সাংসদ, মন্ত্রী, বিচার বিভাগ, আমলা থেকে হাজার হাজার কর্মীর ওপর পুলিশি ক্ষমতা প্রয়োগ৷
আজ ভারতে ছুটির দিন৷ রামলীলা ময়দানে সর্বস্তরের মানুষের ঢল৷একাধিক মিছিল বিভিন্ন স্থান থেকে এসে জড়ো হয়৷ তবে এ পর্যন্ত কোন গন্ডগোল হয়নি৷ পুলিশের আচরণ সংযত৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্য়ায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক