1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অনার কিলিং

১৬ জানুয়ারি ২০১৮

খাপ পঞ্চায়েত, অনারকিলিং ইত্যাদি বিষয়গুলিকে বন্ধ করার জন্য যুগান্তকারী রায় দিল ভারতের শীর্ষ আদালত৷ রায়কে স্বাগত জানিয়েছে নাগরিক সমাজ৷

https://p.dw.com/p/2qvI7
ছবি: picture-alliance/AP Photo/T. Topgyal

বর্তমান ভারতের সামাজিক প্রেক্ষিতে যুগান্তকারী রায়৷ ভারতের সর্বোচ্চ আদালত জানিয়ে দিলো, দেশের সাবালক পুরুষ এবং মহিলারা তাঁদের পছন্দের যে কাউকে বিয়ে করতে পারেন৷ সমাজ, পরিবার কিংবা খাপ পঞ্চায়েতের সে বিষয়ে নাক গলানোর কোনও অধিকার নেই৷

উত্তর এবং পশ্চিম ভারতের বহু অঞ্চলে ‘খাপ পঞ্চায়েত’ একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান৷ শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে গ্রামের মুরুব্বিদের নিয়ে তৈরি হয় এই খাপ পঞ্চায়েত৷ গ্রামের সেই মুরুব্বি বা মাতব্বরেরা নিজস্ব আইনকানুন তৈরি করেন৷ তাঁদের দাপটে গ্রামের ছেলে-মেয়েরা ইচ্ছেমতো যে কাউকে বিয়ে করতে পারেন না৷ জাতি-বর্ণ-গোত্র-ধর্ম এই সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখে মুরুব্বিরা সবুজ সংকেত দিলে তবেই বিয়ে হয় গ্রামে৷

শুধু তাই নয়, মহিলাদের আচরণ থেকে শুরু করে ভিনধর্মের, ভিনবর্ণের, ভিনজাতের মানুষের প্রতি হিংসামূলক আচরণেরও একাধিক অভিযোগ রয়েছে এই খাপ পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে৷ বিজেপি’র শাসনামলে ভারতে এই খাপ পঞ্চায়েতের কাজকর্ম বৃদ্ধি পেয়েছে বলেই অভিযোগ৷ তাদের হিংসার শিকার হয়েছেন দলিত এবং ভিনধর্মের মানুষেরা৷ অথচ এই খাপ পঞ্চায়েতের কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি নেই৷ দেশের আইন, রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় এদের কোনো উল্লেখ নেই৷ স্রেফ ঐতিহ্যের উল্লেখ করে ২০১৮ সালের ভারতেও তারা টিকে রয়েছে এবং নিজেদের বিদ্বেষমূলক কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে৷

সুপ্রিম কোর্ট এর আগেও খাপ পঞ্চায়েতের কাজকর্মের সমালোচনা করেছে৷ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে৷ বিয়ে সংক্রান্ত রায় বিষয়ে আলোচনার সময় প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বেঞ্চ আরও একবার খাপ পঞ্চায়েতের বিষয়ে মন্তব্য করে৷ বলা হয়, প্রশাসন এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে আদালত বাধ্য হবে সে বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে৷

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, খাপ পঞ্চায়েতের পাশাপাশি ‘অনার কিলিং’ বা ‘সম্মানরক্ষার্থে’ খুনের ঘটনাও উত্তর ও পশ্চিম ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃদ্ধি পেয়েছে৷ মিশ্রবর্ণের বিয়ের পর নিজের মেয়ে এবং জামাইকে সর্বসমক্ষে খুন করার বহু অভিযোগ উঠেছে কোনো কোনো এলাকায়৷ বস্তুত, বছরকয়েক আগে এই বিষয়ে ‘এনএইচ টেন’ নামে একটি ফিল্মও তৈরি হয়েছিল৷ সেখানে দেখানো হয়েছিল একটি অনার কিলিংয়ের ঘটনা৷ ভারত জুড়ে সেই ছবি সাড়া ফেলে দিয়েছিল৷ বিশেষজ্ঞদের অভিমত, ‘সমাজ’ এবং ‘পরিবার’ শব্দটির উল্লেখ করে শীর্ষ আদালত ‘অনার কিলিং’-এর বিষয়টিকেও সামনে আনতে চেয়েছে৷

স্বভাবতই সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে দেশের নাগরিক এবং বিশিষ্ট সমাজ৷ তাঁদের দাবি, খাপ পঞ্চায়েতকে রোখার জন্য আরও পদক্ষেপ করুক সুপ্রিম কোর্ট৷ প্রশাসনও আইন মোতাবেক খাপ পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক৷

এসজি/এসিবি (এএনআই, রয়টার্স, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস)