‘অনার কিলিং' বন্ধে হটলাইন
১২ আগস্ট ২০১৭এর ফলে কোনো জুটি যদি প্রেম বা বিয়ে করলে পরিবারের রোষানলে পড়ার শঙ্কায় পড়েন, তাহলে হটলাইনটিতে কল করে সাহায্য চাইতে পারেন৷ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে যে, এই নাম্বারে ফোন করতে কোনো পয়সা খরচ করতে হবে না৷
‘‘২৪ ঘণ্টাই চালু থাকবে এই হটলাইন৷ অভিযোগ পেলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব৷'' বলেছেন মাদুরাই পুলিশ কমিশনার মহেশ কুমার আগরাওয়াল৷
‘‘অভিযোগকারী জুটিকে সুরক্ষাও দেয়া হবে৷''
সরকারি হিসেবে, ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত ভারতে ৪০০ অনার কিলিং বা পারিবারিক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, যার মধ্যে নারীরাই এর শিকার বেশি হয়েছেন৷
এ সব হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ একটাই৷ পরিবারের বাকি সদস্যরা মনে করেন, হত্যার শিকার সদস্যটি তাদের সম্প্রদায়ের জন্য ‘লজ্জা' বয়ে এনেছেন৷
মানবাধিকার কর্মীরা বলেন, অনার কিলিং যে মাত্রার অপরাধ, সে মাত্রায় একে গুরুত্ব দেয়া হয় না৷ বরং অনেক ঘটনাই ধামাচাপা পড়ে যায়৷ অনেকেই ভিক্টিমদের ফাঁস দিয়ে অথবা বিষ খাইয়ে পরে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়৷
গেল কয়েক দশকে ভারতে উদারনৈতিকতার বিস্তার ঘটলেও এখনো অনেকেই বিভিন্ন জাত বা ধর্মের মানুষ অন্যান্য জাত বা ধর্মের মানুষের সঙ্গে বিয়ে মেনে নিতে পারেননি৷ এই ট্যাবু যে শুধু গ্রামাঞ্চলেই আছে তা নয়, শহরাঞ্চলের শিক্ষিত-স্বচ্ছল পরিবারেও দেখা যায়৷
এই অপরাধ বন্ধে গত বছর মাদ্রাজ হাইকোর্টের এক রায়ের প্রেক্ষিতেই মাদুরাই পুলিশ এই উদ্যোগ নিয়েছে৷ অন্য জাতের মেয়ে বা ছেলে বিয়ে করার জন্য পরিবার, আত্মীয়-স্বজন কিংবা পঞ্চায়েত দ্বারা শারীরিক নির্যাতন হতে পারে, এমন অভিযোগ শুনতে পুলিশের একটি বিশেষায়িত ইউনিট গঠন করার আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট৷
শুধু তাই নয়, ছেলে-মেয়েদের সুরক্ষা দেয়া এবং পরিবারের সদস্যদের বুঝিয়ে বলারও আদেশ দেয়া হয়৷
২০১৪ সালে এক উঁচু জাতের এক বিবাহিত নারীর সঙ্গে এক যুবকের প্রেমের সম্পর্কে জড়ানো এবং বিয়ে করার ‘অপরাধে' পরিবারের সদস্যরা উভয়কেই নির্যাতন করে এবং মেয়েটিকে মেরে ফেলে৷ এই মামলা আদালতে গেলে আদালত এ রায় দেন৷
কোর্টের নথি অনুযায়ী, ২০১০ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত তামিল নাড়ুতে ৪৭টি অনার কিলিংয়ের কেস ফাইল হয়৷
‘‘এই হেল্পলাইন একটি ভালো উদ্যোগ৷'' বলছিলেন রাজ্যটির একজন মানবাধিকার কর্মী কে স্যামুয়েলরাজ৷ ‘‘কিন্তু এমন সেবা পুরো রাজ্যেই ছড়িয়ে দিতে হবে৷ আমরা প্রতিটি জেলায় যেন আলাদা ইউনিট করা হয়, সেজন্য কর্তৃপক্ষকে চাপ দিচ্ছি৷''
জেডএ/ডিজি (থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন)
অনার কিলিং রোধে এই উদ্যোগ কতটা কার্যকর? আপনার মতামত দিন নীচের ঘরে৷