অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় বাধা কোথায়?
৭ নভেম্বর ২০১৬শেষ পর্যন্ত ‘ওপেন সিক্রেট' বন্ধ করতে বাধ্য করা হয় তাঁকে৷ এমনকি মাঠের সাংবাদিকতাও ছাড়তে হয় আবেদ খানকে৷ বদলে তাঁকে বসিয়ে দেয়া হয় ডেস্কে৷ সেই ধারাবাহিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ‘ওপেন সিক্রেট'-এর শেষ পরিণতি নিয়ে ডয়চে ভেলেকে আবেদ খান জানান, ‘‘আমি ১৯৭৫-এর মার্চ অথবা এপ্রিল মাসে ক্যান্টনমেন্টে ঢুকে যাই৷ মেজর ডালিমসহ কিছু বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা সে সময় একটি বৈঠক করছিলেন৷ তাঁদের সেই বৈঠকে সরকার উৎখাত ও বঙ্গবন্ধুকে সরিয়ে দেয়া নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল৷ যে কোনো উপায়ে আমি সেই বৈঠক পর্যন্ত পৌঁছে যাই৷ কিন্তু সেই প্রতিবেদন আমি ছাপতে পারিনি৷ আমাকে হুমকিও দেওয়া হয়েছিল৷ ইত্তেফাকের মধ্যেই ঐ সেনা কর্মকর্তাদের পক্ষের প্রভাবশালী লোক ছিল৷ তারা আমাকে বসিয়ে দেয়৷ এরপর আমি আর ‘ওপেন সিক্রেট' প্রতিবেদন করিনি৷ পরে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এলে আবারও উদ্যোগ নেই ‘ওপেন সিক্রেট'-এর৷ কিন্তু সেবার সরকারি আদেশেই ‘ওপেন সিক্রেট' বন্ধ করা হয়৷''
৭২ থেকে ৭৫ সাল – এ সময়টা জুড়ে আবেদ খান ‘ওপেন সিক্রেট' নামে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করেছিলেন৷ এই ‘ওপেন সিক্রেট'-কে স্বাধীন বাংলাদেশে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার প্রথম পদক্ষেপ বলে বিবেচনা করা হয়৷ সে সময়ের রিপোর্টার আর এখনকার সম্পাদক আবেদ খান বলেন, ‘‘আমার প্রতিবেদন বঙ্গবন্ধু নিয়মিত পড়তেন, ব্যবস্থাও নিতেন৷ আমার প্রতিবেদনের কারণে বিডিআর থেকে সিআর দত্তকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল, বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ডেপুটি গভর্নরকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল৷ আরো অনেক কাজ হয়েছিল৷ শুনেছি, সীমান্তে মাদক ব্যবসায়ীরা আমাকে হত্যার জন্য ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল৷''
তাঁর কথায়, ‘‘অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য দরকার সাহস, যোগ্যতা, কমিটমেন্ট এবং সততা৷ এছাড়া দরকার সংবাদমাধ্যম-এর সমর্থন ও সহযোগিতা৷ এটা সহজ নয়৷ তাই সবদেশেই অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা ঝুঁকিপূর্ণ৷''
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা কম কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘কমিটমেন্ট, সাহস আর সততার অভাব৷ একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানগুলোও চায় না কোনো ‘রিস্ক' নিতে৷''
প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না
বাংলাদেশের আলোচিত সাপ্তাহিক পত্রিকা সাপ্তাহিক-এর সম্পাদক গোলাম মোর্তজা অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা অধুনালুপ্ত সাপ্তাহিক বিচিত্রা থেকে সাংবাদিকতার ক্যারিয়ার শুরু করেন৷ বরেণ্য সম্পাদক প্রয়াত শাহাদত চৌধুরির নেতৃত্বে সাপ্তাহিক বিচিত্রা অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার আরেকটি বড় প্রতিষ্ঠান ছিল৷ বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধ, যুদ্ধাপরাধ, আদালত এলকার দুর্নীতি-অনিয়ম নিয়ে বিচিত্রার আলোচিত সব প্রতিেদনগুলো এখনো হয়ত অনেকের মনে আছে৷ তাছাড়া গবেষক ও বিতার্কিকদের কাছে বিচিত্রার পুরনো কপি আজও আকড় হিসেবে কাজ করে৷
গোলাম মোর্তোজা বলেন, ‘‘অনুসন্ধানী প্রতিবেদন যে হচ্ছে না, তা নয়৷ তবে আমরা যতটা আশা করি ততটা হচ্ছে না৷ পাঠক বা দর্শকরা আশা করেন বড় কোনো ঘটনায় যেখানে পুলিশ প্রশাসন ঠিকমত কাজ করে না, সেখানে অনুসন্ধানী সাংবাদিকরাই পথ দেখাবেন৷ সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড বা গুলশান হামলায় যে ধরনের অনুসন্ধান আমরা আশা করেছি, সাংবাদিকদের কাছ থেকে তা আমরা পাইনি৷''
তাঁর কথায়, ‘‘সাংবাদিকতা এখন অনলাইন, রেডিও-টিভি মিলে অনেক বিস্তৃত৷ কিন্তু সেইভাবে বিস্তৃত হয়নি অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা৷''
এর কারণ কী? গোলাম মোর্তজা জানান, ‘‘সাংবাদিকতায় এক ধরনের কথিত ‘গ্ল্যামার' এসেছে৷ তেমন কিছু না করেও এখন বড় সাংবাদিক হয়ে যান কেউ কেউ, কষ্ট করতে চান না৷ সেই সঙ্গে কর্পোরেট চরিত্রের কারণে অনেক সংবাদমাধ্যম ‘রিস্ক' নিতে চায় না৷ এর সঙ্গে দক্ষতার অভাব আর আইনের নানা খড়গ তো আছেই৷ দু-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া সংবাদমাধ্যমের শীর্ষ পদে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় দক্ষ তেমন কাউকে দেখি না, যাঁরা নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে নতুন প্রজন্মকে দক্ষ করে তুলবেন৷''
বাংলাদেশে এরপরও প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা আছে৷ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিদেশি যাঁরা অবদান রেখেছেন, তাঁদের রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে দেওয়া সোনার মেডেল এবং ক্রেস্ট যে পুরোটাই ফাঁকি – এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ‘প্রথম আলো'৷ বলা বাহুল্য, রোজিনা ইসলামের সেই প্রতিবেদন হইচই ফেলে দেয়৷ ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনগুলোও আলোচিত৷ ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় স্বাস্থ্য ও শিক্ষা নিয়ে উল্লেখ করার মতো অনুসন্ধানী প্রতিবেদন হয়েছে৷ এছাড়া দুর্নীতি নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনও কম নয়৷
বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন দেখা গেছে প্রায় দুই দশক আগে থেকেই৷ বেশ কয়েকজন তরুণ সাংবাদিক আছেন, যাঁদের জঙ্গি বিষয়ক ধারাবহিক অনুসন্ধান বেশ আলোচিত৷ এমনকি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও তাঁদের ‘রেফারেন্স' হিসেবে ব্যবহার করেন৷ তাঁদেরই একজন একুশে টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি দীপু সারোয়ার৷ টেলিভিশন ও প্রিন্ট – দুই মাধ্যমেই তাঁর কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে৷ অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় তিনি টিআইবি পুরস্কারও পেয়েছেন৷ দীপু বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উৎস, আন্তর্জাতিক যোগাযোগ এবং ক্রমবিকাশ নিয়ে একাধিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করেছেন৷ জঙ্গি আস্তানায় গিয়ে সরাসরি জঙ্গিদের সঙ্গে কথা বলার অভিজ্ঞতা আছে তাঁর৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘আসলে প্রথমে রিপোর্টারকেই যোগ্য হতে হবে৷ অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা কী, সেটা বুঝতে হবে তাঁকে৷ তারপর তিনি ঠিক কী করতে চান, তা তাঁর কর্তৃপক্ষের কাছে স্বচ্ছভাবে তুলে ধরতে হবে৷ এটা না করতে পারলে কর্তৃপক্ষকে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় রাজি করানো কঠিন৷ এতে অনেক সমস্যা আছে, ঝুঁকি আছে, কিন্তু আসল কাজ তো রিপোর্টারের৷''
বাংলাদেশে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার পথে অন্তরায় কী?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক শামীম রেজা মনে করেন, এখানে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার পথে বেশ কিছু অন্তরায় রয়েছে৷ এর মধ্যে – সুশাসনের অভাব, প্রতিকূল আইন, প্রাতিষ্ঠানিক অদক্ষতা, প্রাতিষ্ঠানিক আগ্রহ ও অর্থ খরচে অনীহা, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার সঠিক ধারণার অভাব এবং প্রাতিষ্ঠানিক ও আইনি সুরক্ষার অভাব অন্যতম৷
তিনি মনে করেন, ‘‘এটা সংবাদমাধ্যমকে বুঝতে হবে যে, এখন আর প্রতিদিনের ঘটনা প্রকাশ করে টিকে থাকা যাবে না৷ মানুষ অনুসন্ধানী প্রতিবেদন পড়তে চায়, ভিতরের খবর জানতে চায়৷ কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে এই ধরনের সাংবাদিকতায় যে প্রশিক্ষণ এবং বিনিয়োগ প্রয়োজন হয়, তা করতে হবে৷ নয়ত এমন সময় আসবে যে, যাঁরা এর বাইরে থাকবেন তাঁরা পিছিয়ে পড়বেন৷''
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের আরেক শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস অবশ্য জানান, ‘‘বাংলাদেশে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করার জন্য যথেষ্ট দক্ষ সাংবাদিক আছেন৷ প্রশিক্ষণের সুযোগ এখানে আছে৷ কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ‘নিউজ ম্যানেজমেন্টে'৷ অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করতে দীর্ঘ সময় লাগে, মোটা অঙ্কের বিনিয়োগও লাগে৷ আর সেটা অনেক প্রতিষ্ঠানই করতে চায় না৷ তারা মনে করে, একজন সাংবাদিক প্রতিদিনের প্রতিবেদন তৈরি করবেন৷ একমাসে একটি প্রতিবেদন তারা ভাবতেই চায় না৷ তারা একে অপচয় মনে করে৷''
তবে তিনিও বলেন, ‘‘এটা তাদের জানতে হবে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাই প্রতিষ্ঠানকে শেষ পর্যন্ত লাভের মুখ দেখাবে৷ বাংলাদেশে তার প্রমাণও আছে৷''
এরপরেও বাংলাদেশে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মান নিয়ে প্রশ্ন আছে৷ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সার্ফেস, ক্রেকিং, স্কুপ বা ফলো-আপ প্রতিবেদনকে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বলে মনে করা হয়৷ এটা আসলে সঠিক জ্ঞান ও প্রশিক্ষণের অভাবে হয় বলে মনে করেন অধ্যাপক শামীম রেজা৷
টেলিভিশনে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা
বাংলাদেশে ‘ব্রডব্যান্ডে' সরকার নিয়ন্ত্রিত বাংলাদেশ টেলিভিশনই অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা শুরু করে৷ নব্বইয়ের দশকে ‘পরিপ্রেক্ষিত' নামে একটি সংবাদ ভিত্তিক ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তা শুরু হয়৷ সৈয়দ বোরহান কবীরের উপস্থাপনায় প্রচারিত হতো অনুষ্ঠানটি৷ তবে নানা চাপের কারণে এক পর্যায়ে অনুষ্ঠানটি আর চালাতে পারেনি বিটিভি৷ এরপর ইত্তেফাকের আবেদ খানই বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি ‘টেরিটোরিয়াল' টেলিভিশন চ্যানেল একুশে টিভিতে ‘ঘটনার আড়ালে' নামে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের অনুষ্ঠান শুরু করেন৷ কিন্তু বিএনপি সকারের আমলে একুশে টেলিভিশন বন্ধ হয়ে গেলে সেই অনুষ্ঠানও বন্ধ হয়ে যায়৷ আবেদ খান জানান, ‘‘ঐ সংবাদ ভিত্তিক অনুষ্ঠানে আমরাই প্রথম জেল হত্যার বিষয়ে কারাগারে ঢুকে প্রতিবেদন প্রচার করেছিলাম, যাতে করে অনেক অজানা অধ্যায় উন্মোচিত হয়েছিল৷''
ওয়ান ইলেভেনের সময় আবার একুশে টেলিভিশন চালু হলে ‘একুশের চোখ' নামে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের আরেকটি অনুষ্ঠান শুরু হয়৷ এই অনুষ্ঠানটি অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় টিআইবি অ্যাওয়ার্ডও পায়৷ এই অনুষ্ঠানে দুর্নীতি নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী বেশ কিছু অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচার হয়৷ এছাড়া মোবাইল ফোনের টাওয়ারের রেডিয়েশন ও অর্থের বিনিময়ে কতিপয় র্যাব সদস্যের হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রতিবেদনটিও আলোচিত হয়৷ এই অনুষ্ঠানের দু'টি প্রতিবেদন যুদ্ধাপরাধ মামলায় সাক্ষ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত৷ তবে অনুষ্ঠানটি যে সাংবাদিকরা করতেন, তাঁরা এখন আর সেখানে নাই, মানে টিকতে পারেননি৷ এরপরও অবশ্য অনুষ্ঠানটি এখনো চলছে৷
একুশে টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি দীপু সারোয়ার বলেন, ‘‘একুশের চোখের অনুসরণে পরে দেশের প্রায় সব বেসরকারি টিভি চ্যানেলই অপরাধ অনুসন্ধানের সংবাদ ম্যাগাজিন চালু করে৷ তবে তারা যেটা করছে, সেটা এখন আর রিপোটিং না বলে ‘ফিকশন' বলাই ভালো৷''
যমুনা টেলিভিশনের মোহসীন উল হাকিম আর মাছরাঙা টিভির বদরুদ্দোজা বাবু টেলিভিশনে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার দুই আলোচিত সাংবাদিক৷ মোহসীন উল হাকিম সুন্দরবন এবং জলদস্যুদের নিয়ে অনেক আলোচিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করেছেন৷ তাঁর এ সব প্রতিবেদনের কারণেই বেশ কয়েকটি জলদস্যু গ্রুপ আত্মসমর্পণ করেছে৷ অন্যদিকে বদরুদ্দোজা বাবু বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম এবং অব্যবস্থাপনা নিয়ে ধারাবাহিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করে আলোচনায় আসেন৷
সম্পাদক গোলাম মোর্তজা বলেন, ‘‘টেলিভিশনে আরো কিছু ভালো অনুসন্ধানী প্রতিবেদন আমার চোখে পড়েছে৷ তবে তা পরিমাণে অল্প৷ আসলে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ঝুঁকি এবং খরচ অনেকেই বহন করতে চান না৷ তার ওপর সাংবাদিকদের সেইভাবে ‘প্রটেকশনও' দেওয়া হয় না৷''
অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা কেন প্রয়োজন?
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ বা টিআইবি গত ১৮ বছর ধরে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় পুরস্কার দিয়ে আসছে৷ এছাড়া অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য তারা ‘ফেলোশিপ' দেয়, আয়োজন করে নিয়মিত ওয়ার্কশপেরও৷ তাদের এই প্রচেষ্টার কারণ কী? জানতে চাই টিআইবি-র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখরুজ্জামানের কাছে৷ জবাবে তিনি বলেন, ‘‘অনুসন্ধানী প্রতিবেদন দুর্নীতি, অপরাধসহ নানা অনিয়ম প্রকাশ ও প্রতিরোধে সহায়তা করে৷ আমরা যারা দুর্নীতি বিরুদ্ধে কাজ করি, তারা এই ধরনের প্রতিবেদন থেকে সহায়তা পাই৷ পরিস্থিতি বুঝতে পারি৷ এ জন্যই আমরা অনুসন্ধানী প্রতিবেদনগুলো সমর্থন এবং সেই প্রতিবেদনগুলো যাঁরা করছেন, তাঁদের নানাভাবে সহায়তা করতে চাই৷''
তিনি আরো বলেন, ‘‘সরকার সব সময় অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার সহায়ক হবে, তা ভাবার কোনো কারণ নেই৷ এখানেও নানা আইন করে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছে৷ কিন্তু তারপরও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাই আসল সাংবাদিকতা৷ তাই এটা আরো বাড়াতে হবে৷''
তবে সংবাদমাধ্যমের বাইরে আলাদা কোনো প্রতিষ্ঠান করে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করার বিরোধী অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস৷ তিনি মনে করেন, ‘‘উইকিলিক্স বা পনামা পেপার্স নয়, আমরা চাই প্রকৃত অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা৷ আর সংবাদমাধ্যম যত দ্রুত এটা বুঝবে, প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাদের ক্ষমতা এবং গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে৷''
তিনি বলেন, ‘‘এটা সরকারকেও বুঝতে হবে যে,. অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা সরকারের জন্যও উৎকর্ষতা অর্জনে সহায়ক৷ তবে শুধুমাত্র সরকার যদি সেটা চায়৷''
আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷