‘অপছন্দের কারণে কোনো দলকে নিষিদ্ধ করে লাভ নেই'
৩ জানুয়ারি ২০২৪জার্মানির সরকার ও বিরোধী পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি জনসমর্থন সার্বিকভাবে কমে চলেছে৷ এর একমাত্র ব্যতিক্রম চরম দক্ষিণপন্থি এএফডি দল৷ বাকি দলগুলি এএফডি-কে একঘরে করে রাখায় এখনো ফেডারেল বা রাজ্য স্তরে চরম দক্ষিণপন্থিরা ক্ষমতায় আসতে পারে নি বটে, কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে সেই সম্ভাবনা আর উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ এএফডি দলের মধ্যে চরম দক্ষিণপন্থি ভাবধারা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যে জার্মানির অভ্যন্তরীন গোয়েন্দা সংস্থা পূবের কয়েকটি রাজ্য ইউনিটের উপর বিশেষ নজর রাখছে৷ এমন প্রেক্ষাপটে এই দলকে সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার দাবি উঠছে৷
জার্মান সরকারে পূবের রাজ্যগুলির ভারপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী কার্স্টেন শ্নাইডার এমন পদক্ষেপ সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন৷ তাঁর মতে, এএফডি-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলে হিতে বিপরীত হবে৷ বেড়ে চলা জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও শুধুমাত্র অপছন্দের কারণে কোনো দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলে সেই দলের প্রতি সংহতি বরং আরো জোরালো হবে বলে শ্নাইডার মনে করেন৷ সে ক্ষেত্রে এএফডি-র প্রতি সহানুভূতি নেই, এমন মানুষও সেই মনোভাব পোষণ করবেন৷ উল্লেখ্য, গত এক বছরে এএফডি দলের সদস্যের সংখ্যাও অনেক বেড়ে গেছে৷ স্যুডডয়চে সাইটুং সংবাদপত্রকে শ্নাইডার আরো বলেন, জার্মানিতে কোনোরাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার প্রচেষ্টা কার্যকর করাও অত্যন্ত কঠিন৷ সে ক্ষেত্রে আইনি সাফল্যের সম্ভাবনাও অত্যন্ত কম৷
জার্মান সরকারের প্রতিমন্ত্রী বরং রাজনৈতিক মঞ্চে এএফডি-র কর্মসূচির মোকাবিলা করার পরামর্শ দিয়েছেন৷ তাঁর মতে, ভোটারদের কাছে একাধিক ক্ষেত্রে এই দলের প্রকৃত অবস্থানের পরিণাম স্পষ্ট করে তুলতে হবে৷ তাদের জানাতে হবে, যে এএফডি দল ন্যূনতম মজুরির বিরুদ্ধে সংসদে ভোট দিয়েছে৷ উত্তরাধিকার সংক্রান্ত কর তুলে দেবার দাবি করে সম্পদের ন্যায্য বণ্টনেরও বিরোধিতা করছে এই দল৷ শ্নাইডারের মতে, ১৯৫০-এর দশকের সামাজিক অবস্থায় দেশকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চায় এএফডি, যা বিশেষ করে পূবের রাজ্যগুলির নারীদের জন্য মোটেই সুখকর হতে পারে না৷
বর্তমানে জার্মানির সব জনমত সমীক্ষায় এএফডি দল ২০ শতাংশেরও বেশি সমর্থন পেয়ে একমাত্র বিরোধী ইউনিয়ন শিবিরের পেছনে রয়েছে৷ অর্থাৎ, সরকারের তিন শরিক দলের তুলনায় এএফডি বেশি সমর্থন পাচ্ছে৷ আগামী সেপ্টেম্বর মাসে পূবের ব্রান্ডেনবুর্গ ও টুরিঙ্গিয়া রাজ্যে নির্বাচনে এএফডি এমনকি সবচেয়ে শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে সাফল্য পেতে পারে৷ সে ক্ষেত্রে এই প্রথম সরকার গড়া ও মূখ্যমন্ত্রী পদ গ্রহণের সাফল্যের মুখ দেখতে পারে চরম দক্ষিণপন্থি এই দল৷
জার্মান সরকারের প্রতিমন্ত্রী শ্নাইডার এএফডি দলের উত্থানের মোকাবিলা করতে সমাজে ‘নীরব সংখ্যাগরিষ্ঠ' অংশের প্রতি আরো সচেতন হবার আহ্বান জানিয়েছেন৷ তাঁর মতে, গণতন্ত্র রক্ষার তাগিদে তাদের জেগে উঠতে হবে৷ সবাইকেই সাহায্য করতে হবে৷ এএফডি দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে কোনো লাভ হবে না৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, এএফপি)