1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অবৈধ পতিতাবৃত্তি রোধের আইনের নেই

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০

বাংলাদেশের যৌন ব্যবসায় আইন বহির্ভূতভাবে নারীদের ব্যবহারের অভিযোগ আছে৷ এমনকি ১০ বছর বয়সের মেয়ে শিশুকেও যৌন ব্যবসায় বাধ্য করা হয়৷ এর বিরুদ্ধে আইন থাকলেও তা প্রয়োগের যথেষ্ট নজির নেই৷

https://p.dw.com/p/3YTar
illegale Sexindustrie in Rohingya-Flüchtlingslagern
ছবি: Thomson Reuters Foundation/S. Glinsk

যুব মহিলালীগের নেত্রী শামিমা নূর পাপিয়া আটক হওয়ার পর এটা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে৷ তাকে আটকের পর শনিবার র‌্যাব প্রেস ব্রিফিং-এ জানায়,‘‘পাপিয়া নারীদের জোর করে যৌনকর্মী হিসেবে ব্যবহার করেছে৷ আর এটা সে করেছে হোটেল ওয়েস্টিনের প্রেডিডেন্সিয়াল স্যুইট ভাড়া নিয়ে৷'' কিন্তু পাপিয়া বা ওয়েস্টিনের বিরুদ্ধে এবিষয়ে কোনো মামলা হয়নি৷
আইনজীবীরা জানিয়েছেন,বাংলাদেশের সংবিধানে পতিতাবৃত্তিকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে৷ সংবিধানে এই পেশা বন্ধ করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলা হয়েছে৷ কিন্তু প্রচলিত আইনে ১৮ বছর বয়স হলে কোনো নারী আদালতে ঘোষণা দিয়ে পেশা হিসেবে গণিকাবৃত্তি বেছে নিতে পারেন৷ শর্ত হলো তাকে প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে এবং স্বেচ্ছায় ও সজ্ঞানে আদালতের কাছে ওই পেশা বেছে নেয়ার ঘোষণা দিতে হবে৷
অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং প্রাপ্তবয়স্ক হলেও কাউকে জোর করে যৌন ব্যবসায় নিয়োজিত করা যাবে না৷ এটা করলে তারা নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ আইনে অপরাধী হবেন৷
সেক্স ওয়াকার্স নেটওয়ার্কের(এসএনডাব্ল্উি) সেলিনা আক্তার জানান,‘‘এদেশের সেক্স ওয়ার্কারদের অনেকের বয়সই ১৮ বছরের নিচে৷ তাদের বড় একটি অংশকে জোর করে এই পেশায় নামানো হয়েছে৷এর সঙ্গে পুলিশও জড়িত৷''
এরকম ১০০ মেয়েকে নিয়ে কাজ করতে গিয়ে সেলিনা জানিয়েছেন, কীভাবে তাদের জোর করে যৌন পেশায় বাধ্য করা হয়েছে৷ দালালেরা চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে, কাউকে অপহরণ করে আবার প্রেমের অভিনয় করেও নারীদের যৌন পল্লীতে বিক্রি করে৷ এরপর আর সেখান থেকে তারা বের হয়ে আসতে পারে না৷ আবার কেউ ফিরে এলেও আইনি সহায়তা পায়না৷
তিনি আরো জানান,‘‘প্রাপ্তবয়স্ক কারো এই পেশায় আসার জন্য আদালতে ঘোষণা দেয়ার আইন থাকলেও তা মানা হয় না৷ ঘোষণা দিয়ে এই পেশায় আসার সংখ্যা খুবই কম৷ আর অনেক সময় দালালেরা শিশু বা কিশোরীদের প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে দেখায় আদালতে৷''

সেলিনা আক্তার

তুহিন হাওলাদার


বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার হিসেবে দেশের বিভিন্ন যৌনপল্লীতে চার হাজারের মত যৌনকর্মী আছেন৷ আর সারাদেশে ভ্রাম্যমান যৌনকর্মী আছেন ১০ হাজারের মত৷ সেক্স ওয়ার্কার্স নেটওয়ার্কের কমিউনিটি সুপারভাইজার সবুজ মিয়া জানান এই সংখ্যা বাস্তবে আরো বেশি হবে৷ তিনি জানান যৌনপল্লী থেকে মাঝে মধ্যে পুলিশ অপ্রাপ্তবয়স্কদের উদ্ধার করে৷ তবে যারা ভাসমান তাদের ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেই৷
অভিযোগ রয়েছে শিশুদের প্রাপ্তবয়স্ক দেখানোর জন্য চক্র আছে৷ ওই চক্রে দালান, পুলিশ এবং আদালতের কর্মচারীরা জড়িত৷ সবুজ মিয়া জানান,‘‘বয়স বাড়িয়ে দেখানোর অভিযোগ আছে৷ আবার জোর করে এই পেশায় নিয়োজিত করার অভিযোগও আমরা পাই৷'' আর সেলিনা জানান,‘‘১০-১২ বছর বয়সের মেয়েদেরও যৌন ব্যবসায় বাধ্য করা হচ্ছে৷''
আইনজীবী মনজিল মোরশেদ বলের,‘‘বাংলাদেশের সংবিধানে পতিতা বৃত্তিকে নিষিদ্ধই করা হয়েছে৷ মুসলিম আইনেও এটা নিষিদ্ধ৷ তবে এই পেশা বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নের আগে যুগ যুগ ধরে চলে আসছে৷ তাই প্রচলিত আইনে প্রাপ্তবয়স্ক অর্থাৎ ১৮ বছরের বেশি বয়সের কেউ ম্যাজিষ্ট্রেটের সামনে ঘোষণা দিয়ে এই পেশায় নিয়োজিত হতে পারেন৷ জোর করে কাউকে এই পেশায় নিয়েজিত করা যাবে না৷''
অন্যদিকে পাপিয়া এবং ওয়েস্টিনের ঘটনার আইনি ব্যাখ্যা দেন অ্যাডভোকেট তুহিন হাওলাদার৷ তিনি বলেন,‘‘ওয়েস্টিনে পাপিয়া নারীদের অনৈতিক কাজে বাধ্য করেছেন৷ এ বিষয়ে তথ্য প্রমাণ থাকে তাহলে পাপিয়া এবং ওয়েস্টিন হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মানবপাচার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ আইনে মামলা হয়৷ সেটা করা না হলে আইনের লঙ্ঘন হবে৷''
এদিকে এই বিষয় নিয়ে ওয়েস্টিন কর্তৃপক্ষ সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছেনা৷ কোনো তথ্যও দিচ্ছেনা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য