অভিবাসীদের কাজের সুযোগ বন্ধ করবেন ট্রাম্প
৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ডেফারড অ্যাকশন ফর চাইল্ডহুড অ্যারাইভালস – ডাকা চালু হয় ২০১২ সালে৷ এই কার্যক্রমের মাধ্যমে ওবামা প্রশাসন প্রায় ৮ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্রে থাকার দু'বছরের নবায়নযোগ্য অনুমতি দেয়৷ এই অনুমতির ফলে ১৬ বছরের কম বয়সে যাঁরা যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন, তাঁরা দেশটিতে কাজ এবং পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছেন৷
নির্বাচনি প্রচারণায় অভিবাসীদের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েই ভোটারদের আকর্ষণ করেছেন ট্রাম্প৷ তাঁর অন্যতম অঙ্গীকার ছিল এই ডাকা কার্যক্রম বাতিল করা৷ ডাকাকে ‘অবৈধ ক্ষমা' ঘোষণা করে ক্ষমতায় আসামাত্রই তা বাতিলের ঘোষণাও দিয়েছিলেন তিনি৷
কিন্তু প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরপরই এই ইস্যু এড়িয়ে চলতে শুরু করেন ট্রাম্প৷ বরং সুর বদলে বার্তাসংস্থা এপিকে তিনি বলেন, এই প্রোগ্রামের অধীনে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁরা আপাতত ‘নিশ্চিন্ত' থাকতে পারেন৷ ফেব্রুয়ারিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ইস্যুটিকে ‘সবচেয়ে জটিল সমস্যা' বলেও জানিয়েছিলেন ট্রাম্প৷ এমনকি সবসময় অভিবাসীদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে আসলেও অভিবাসী তরুণদের প্রতিভাকে ‘অসাধারণ, অবিশ্বাস্য' বলে উল্লেখ করেন তিনি৷
এবার অবশ্য স্বেচ্ছায় নয়, অনেকটা রিপাবলিকান সহকর্মীদের চাপের মুখেই ‘ডাকা' ঘোষণা দিতে যাচ্ছে হোয়াইট হাউজ৷ তবে ট্রাম্প ‘ডাকা' নিয়ে যে সিদ্ধান্তেই আসুন না কেন, ব্যাপক ক্ষোভের মুখে তাঁকে পড়তেই হচ্ছে৷ আইওয়ার কট্টর রিপাবলিকান সিনেটর স্টিভ কিং ‘ডাকা' বাতিল না হলে তা রিপাবলিকানদের ‘আত্মহত্যার সামিল' হবে বলে মন্তব্য করেছেন৷
অন্যদিকে, ডেমোক্র্যাট তো বটেই, খোদ নিজ দল রিপাবলিকান পার্টির মধ্য থেকেই এ নিয়ে উঠেছে আপত্তি৷ সবচেয়ে সরব হাউজ স্পিকার পল রায়ান৷ একটি রেডিওকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘এখানে তাঁদের বাবা-মারা তাঁদের নিয়ে এসেছেন, এই বাচ্চাদের আর কোনো দেশ নেই, বাড়ি নেই৷ আমি সত্যিকার অর্থেই বিশ্বাস করি, এই সমস্যার একটা আইনি সমাধান দরকার৷''
ডেমোক্র্যাটরা এরই মধ্যে চরম আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে৷ ‘‘এমন খবর যদি সত্যি হয়, নাগরিক অধিকার নিয়ে লড়াই মোকাবেলার জন্যও ট্রাম্প প্রশাসনকে তৈরি হবে'', টুইট করেছেন নিউ জার্সির সিনেটর বব মেনেনডেজ৷
তবে কংগ্রেস যাতে বিকল্প আইনি সমাধান খুঁজে নিতে পারে, সে লক্ষ্যেই ছ'মাসের সময় দেয়া হচ্ছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের৷ এই সময়ের মধ্যে কংগ্রেস বিকল্প কিছু করতে ব্যর্থ হলে কী হবে, তা অবশ্য এখনও পরিষ্কার নয়৷
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রাম্পের ঘনিষ্ট কিছু কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এপি জানিয়েছে, ঘোষণা দেয়ার আগ পর্যন্ত কোনো কিছুই চূড়ান্ত বলে ধরে নেয়া ঠিক হবে না৷ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অতীতের মতোই এবারও যে কোনো সময়ই সিদ্ধান্ত পালটে ফেলতে পারেন৷
এডিকে/ডিজি (এপি, এএফপি)