‘অ্যাকর্ড’ ভালো কাজ করেছে: বিজিএমইএ সভাপতি
৯ এপ্রিল ২০১৯২০১৩ সালের ১৪ এপ্রিল সাভারের রানাপ্লাজা ধসে পোশাক কারখানার ১১শ'র বেশি শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশের পোশাক কারখানার নিরাপত্তা ও কর্মপরিবেশ প্রশ্নের মুখে পড়ে৷ ‘শ্রমিকের রক্তমাখা' পোশাক নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিভিন্ন দেশের খুচরা ক্রেতা, মানবাধিকার কর্মী ও শ্রমিক সংগঠনগুলো৷ সেই চাপের মুখে বাংলাদেশের পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও কাজের পরিবেশ উন্নয়নে ইউরোপীয় ক্রেতারা ‘অ্যাকর্ড' এবং অ্যামেরিকার ক্রেতারা ‘অ্যালায়েন্স' নামে দু'টি জোট গঠন করেয অ্যাকর্ড ২০টি দেশের ২০০ ক্রেতার জোট৷
২০২১ সালের ৩ মে'র মধ্যে বাংলাদেশের ১,৭০০ পোশাক কারখানার নিরাপত্তা এবং কাজের পরিবেশ উন্নয়নে কাজ করার কথা অ্যাকর্ডের৷
‘স্মার্ট জিন্স' নামে চট্টগ্রামের একটি পোশাক কারখানার মামলার পর হাইকোর্ট ৬ মাসের সময় দিয়ে গত বছরের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে অ্যাকর্ডকে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়৷ তবে এই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে অ্যাকর্ড-এর পক্ষ থেকে আপিল করা হয়৷ স্মার্ট জিন্স-এর অভিযোগ ছিল অ্যাকর্ড চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করেছে৷ চুক্তি ছিল, যে কারখানা অ্যালায়েন্স দেখবে, সে কারখানায় অ্যাকর্ড যাবেনা৷
অ্যাকর্ড গত ২৯ নভেম্বর আপিল করলে আপিল বিভাগ প্রথমে এক মাস এবং পরে শুনানির তারিখ অনুযায়ী তাদের বাংলাদেশে কাজ চালিয়ে যেতে বলেন৷ শুনানি শেষে সর্বশেষ ৮ এপ্রিল আদেশের তারিখ ছিল৷ তবে আদেশ হয়নি৷ পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ হয়েছে ১৫ এপ্রিল৷
অ্যাকর্ডের আইনজীবী ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ মইনুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা আশা করছি অ্যাকর্ড বাংলাদেশে থাকতে পারবে৷ কারণ তারা পোশাক খাতে অনেক ভালো কাজ করেছে৷ তাদের আরো কাজ বাকি আছে৷ সবাই চায় তারা থাকুক৷ তবে সেটা আদালতের ওপরই নির্ভর করছে৷''
তিনি আরো বলেন, ‘‘১৫ এপ্রিল আদালত হয়তো আদেশ দেবেন৷ সে পর্যন্ত অ্যাকর্ড বাংলাদেশে কাজ করতে পারে৷ পরবর্তী সিদ্ধান্ত আদালতের ওপর৷''
এদিকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ-র সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘অ্যাকর্ড নিয়ে আদালতে মামলা চলছে তাই কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না৷ আদালতই সিদ্ধান্ত দেবে তারা থাকবে, কি থাকবেনা৷ তবে ৫ বছরে তারা ভালো কাজ করেছে৷ তাদের আরো কাজ বাকি রয়েছে৷ এখন আমাদের পোশাক কারখানার মালিকরাই মামলা করেছেন৷''
ঢাকায় নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত পেটার ফারেনহলৎস আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত অ্যাকর্ডের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে তাঁর মত প্রকাশ করেছেন৷
জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল ইসলাম আমিন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘রানাপ্লাজা ধসের পর পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ ও শ্রমিকদের নিরাপত্তায় অ্যাকর্ড অনেক ভালো কাজ করেছে৷ বাংলাদেশের তৈরি পোশাক তার বাজার ফিরে পেয়েছে৷ যে নেতিবাচক ইমেজ তৈরি হয়েছিল তা দূর হয়েছে৷ কিন্তু তাদের কাজ আরো বাকি রয়েছে৷ ২০২১ সাল পর্যন্ত তাদের থাকার কথা৷''
এদিকে স্মার্ট জিন্স-এর আইনজীবী জাফরুল হাসান শরীফ এর আগে সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘‘আমি আদালতে বলেছি, অ্যাকর্ড বাংলাদেশে থাকতে গেলে তাদের কাজের ব্যাপারে টিএমসির (ট্রানজিশনাল মনিটরিং কমিটি) সাথে পরামর্শ করে কাজ করতে হবে৷ তারা তাদের ইচ্ছেমতো কাজ করতে পারবে না৷ টিএমসিতে অ্যাকর্ড, আইএলও, সরকার, মালিকপক্ষ, ক্রেতা সকলের প্রতিনিধিত্ব আছে৷''