1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অ্যামেরিকার নতুন ভয় ‘আঙ্গেলা ম্যার্কেল'

ইনেজ পোল/এসি১৯ আগস্ট ২০১৬

ডোনাল্ড ট্রাম্প হিলারি ক্লিন্টনকে ‘অ্যামেরিকার আঙ্গেলা ম্যার্কেল' আখ্যা দিয়েছেন, কেননা মাত্রাধিক অভিবাসন ও নিজেদের সামাজিক অবনতি সম্পর্কে মার্কিনিদের যে আশঙ্কা, ম্যার্কেল তার প্রতীক৷ এমনটিই মনে করেন ডয়চে ভেলের ইনেজ পোল৷

https://p.dw.com/p/1Jlaw
হিলারি ক্লিন্টন এবং আঙ্গেলা ম্যার্কেল
ছবি: imago/Jens Schicke

গতবছর বড়দিনের সময়েও কোনো জার্মানকে দেখতে পেলে মার্কিনিরা আঙ্গেলা ম্যার্কেল সম্পর্কে তাদের শ্রদ্ধা ও উচ্চ অভিমত ব্যক্ত করতেন৷ মার্কিন পত্র-পত্রিকার প্রথম পাতায় ম্যার্কেলকে তাঁর যুক্তিসম্পন্নতার জন্য প্রশংসা করা হয়েছে; ম্যার্কেল শুধু জার্মানদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এনে দেননি, গোটা ইউরোপের স্থায়িত্ব ও নিরাপত্তার গ্যারান্টিও তিনি৷ সিরীয় উদ্বাস্তুদের সঙ্গে ম্যার্কেলের সেলফি এক নতুন, হৃদয়বান জার্মানির প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে মিউনিখ রেলওয়ে স্টেশনে মানুষজন করতালি দিয়ে উদ্বাস্তুদের স্বাগত জানিয়ে থাকেন৷

যখন হাওয়া বদলায়

তারপর আসে নিউ ইয়ার্স ইভে কোলোন রেলওয়ে স্টেশনের সামনের চত্বরে মহিলাদের উপর হামলা; উদ্বাস্তুদের স্বাগত জানানোর পরিবর্তে শুরু হয়ে যায় ‘উদ্বাস্তু সংকট' নিয়ে বিতর্ক৷ যেমন দেশে, তেমন ইউরোপীয় পর্যায়ে এই উদ্বাস্তু সংকট ম্যার্কেলের ভাবমূর্তিকে মলিন করে৷ ‘‘আমরা পারব-'' বলে ম্যার্কেল যে ধ্বনি দিয়েছিলেন, তা ডুবে যায় উদ্বাস্তু সংকটের কলরোলে৷

নতুন বছরে শুরু হয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পূর্বরাগ, অর্থাৎ প্রাইমারি, যে প্রাইমারিতে ধূমকেতুর মতো আকাশে ওঠেন ভুঁইফোড় ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ সেই সঙ্গে জাতিবাদ ও বিদেশি-বহিরাগত সংক্রান্ত যাবতীয় মূলক ও অমূলক ভয়ভীতি যেন খাঁচা খুলে বেরিয়ে পড়ে৷

Bildkombo Trump Clinton Thema Deutschland
ডোনাল্ড ট্রাম্প হিলারি ক্লিন্টনকে ‘অ্যামেরিকার আঙ্গেলা ম্যার্কেল' আখ্যা দিয়েছেনছবি: picture-alliance/dpa/Arco Images/ W. Wirth

অবশেষে মার্কিন মুলুকে এমন একজন রাজনীতিকের আবির্ভাব ঘটল, যাঁর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ সাধারণের বোধগম্য; যিনি ‘পলিটিক্যাল করেক্টনেস'-এর ধার না ধেরে তাঁর নিজস্ব, অংশত মনগড়া সব তত্ত্ব ব্যাখ্যান করতে শুরু করেন৷ যেমন বলা হয়ে থাকে, অ্যামেরিকার অর্থনৈতিক দুরবস্থার জন্য মেক্সিকান আর চীনারা দায়ী, অথবা বিশ্বে যাবতীয় যুদ্ধ ও সন্ত্রাসের জন্য মুসলিমরা দায়ী৷

ট্রাম্পের টুইটার অভিযান

ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি কিছু ভালো বোঝেন, তাহলে সেটা হলো জনতার ‘মুড' বা মেজাজ৷ কাজেই জার্মানি ও ইউরোপে যে উদ্বাস্তুদের ব্যাপারে ‘মুড' বদলাচ্ছে, সেটা তিনি ভালোমতো উপলব্ধি করে নিজের প্রচার অভিযানে কাজে লাগাতে দ্বিধা করেননি৷ টুইট করে তিনি জার্মান চ্যান্সেলর ও তাঁর উদ্বাস্তু নীতিকে এমনকি প্যারিসের সন্ত্রাসবাদি আক্রমণের জন্যও দায়ী করেছেন৷ জার্মানিতে আক্রমণ বা হত্যাকাণ্ড, যা-ই ঘটুক, যদি তাতে কোনো মুসলিম সংশ্লিষ্টতা থাকে, তবে ট্রাম্প তা নিয়ে টুইট করবেন বলে ধরে নেওয়া যায়৷

এবার ট্রাম্প বিপদে পড়েছেন৷ দলীয় সম্মেলনে মনোনয়নের পর থেকে তাঁর পালে আর হাওয়া নেই, হালে নেই পানি, জরিপে হিলারি ক্লিন্টন ক্রমেই এগিয়ে যাচ্ছেন৷ বিশিষ্ট রিপাবলিকানরা ট্রাম্পকে সমর্থন করতে রাজি নন৷ ট্রাম্পের নিজের নির্বাচনি প্রচার টিমেও কোন্দল৷

গোড়া থেকেই ট্রাম্পের স্ট্র্যাটেজি ছিল জনমানসে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করা৷ মানুষজনকে যত ভয় দেখানো যাবে, ততই তারা একজন শক্ত নেতাকে চাইবে, যিনি কড়া হাতে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারেন৷ এখানে ম্যার্কেলের সমস্যা যেন ট্রাম্পের মুশকিল আসান করে দিচ্ছে: শুধু হিলারি ক্লিন্টনকে ‘অ্যামেরিকার আঙ্গেলা ম্যার্কেল' আখ্যা দেওয়ার অপেক্ষা৷

Pohl Ines Kommentarbild App
ডয়চে ভেলের ইনেজ পোল

সবল পুরুষ, অবলা নারী?

বহু মার্কিনির কাছে আঙ্গেলা ম্যার্কেল আজ আশাভঙ্গের প্রতীক৷ তাঁর ক্ষমতা ও সামর্থ্যে যাদের আস্থা ছিল, তারা দেখছেন, ম্যার্কেল ঠিক সময়ে লাগাম টানতে পারলেন না বলে তিনি ব্যর্থ হতে চলেছেন৷ তারা দেখছেন, একজন নারী, যাঁর উপর বহু মানুষের আস্থা ছিল, তিনি শেষমেশ নিজের দেশকে ‘অন্যদের' হাত থেকে বাঁচানোর জন্য যে কাঠিন্যের প্রয়োজন ছিল, তা প্রদর্শন করতে পারলেন না৷ এমন একজন মহিলা, যিনি সন্ত্রাসকে নিজের দেশে নিয়ে এসেছেন৷ নাইন-ইলেভেনের ১৫ বছর পরও ট্রাম্পের হাতে সবচেয়ে বড় অস্ত্র হলো মার্কিনিদের সন্ত্রাসী আক্রমণের ভীতি৷

ম্যার্কেলের সঙ্গে ক্লিন্টনের তুলনা করার চালটি মন্দ নয়, কেননা, দুজনেই মহিলা, যেখানে ট্রাম্প নিজে পুরুষ৷ ‘অবলাদের' ভুল-ভ্রান্তি থেকে অ্যামেরিকাকে বাঁচানোর দায়িত্ব আর কার উপর ন্যস্ত করা যেতে পারে?

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য