আইএস-এ আরেক ফরাসি, সিরিয়ায় চলছে শিরশ্ছেদ
১৯ নভেম্বর ২০১৪নৃশংসভাবে মানুষ হত্যা করেই চলেছে ইসলামি জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস বা আইসিস)৷ গত রবিবার আইএস যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক পিটার কাসিগের শিরশ্ছেদের ভিডিও প্রকাশ করার পর থেকে আসছে নতুন নতুন খবর৷ ভিডিওচিত্রে কাসিগ ছাড়া আরো ১৮ জনকে হত্যার দৃশ্য দেখানো হয়৷ ইরাক ও সিরিয়ার বেশ বড় একটি অংশ দখল করে নেয়া সুন্নিদের এই জঙ্গি সংগঠনটি জানিয়েছে, ওই ১৮ জনের বেশির ভাগই ছিলেন সিরিয়ার সৈন্য৷
আইএস শুধু সিরীয় সৈন্যদেরই শিরশ্ছেদ করছে না৷ যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন তাদের ওপর বিমান হামলা চালাচ্ছে বলে ওই দুটি দেশের নাগরিকদেরও ধরে নিয়ে হত্যা করছে৷ হত্যাদৃশ্যের ভিডিও প্রচার করে দিচ্ছে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা৷ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে সিরীয় শরণার্থীদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করা পিটার কাসিগ, ওরফে আব্দুল রহমানও আইএস-এর এই নৃশংসতা থেকে বাঁচতে পারেননি৷ সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, সিরিয়ায় আইএস এ পর্যন্ত শিরশ্ছেদ করে কমপক্ষে ১৪২৯ জনকে হত্যা করেছে৷ ব্রিটেন ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থাটির দাবি, এই ১৪২৯ জনকে হত্যা করার প্রমাণ তাদের কাছে আছে৷
আইএস-এর হয়ে শুধু মুসলিম প্রধান দেশগুলোর নাগরিকরাই অংশ নিচ্ছে না৷ পাশ্চাত্যের বেশ কয়েকটি দেশ থেকে কয়েক হাজার লোক গিয়ে যোগ দিয়েছে আইএস-এর ইসলামি খিলাফত কায়েমের মিশনে৷ ফ্রান্স জানিয়েছে, কাসিগকে হত্যার ভিডিওতে দ্বিতীয় ফরাসি নাগরিকের উপস্থিতি সম্পর্কে তারা মোটামুটি নিশ্চিত৷ ফ্রান্স থেকে এ পর্যন্ত অন্তত হাজার খানেক মুসলমান সিরিয়ায় যুদ্ধ করতে গিয়েছেন বলে ধারণা করা হয়৷ তাঁদের মধ্যে অন্তত ৩৬ জন ইতিমধ্যে মারা গেছেন৷
কাসিগ-হত্যা দৃশ্যের ভিডিওতে অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম এবং ডেনমার্কের নাগরিকও ছিলেন বলে অনুমান করা হচ্ছে৷ বেলজিয়ামের একটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ভিডিওতে এমন একজনকে দেখা গেছে যার চেহারা আব্দেল মজিদ ঘারমৌ-এর মতো৷ আব্দেল মজিদ ঘারমৌ পলাতক৷ বেলজিয়ামের আদালতে তার বিরুদ্ধে জিহাদি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত হওয়ার অভিযোগে মামলা চলছে৷
এদিকে ইউরোপের দেশগুলো আইএস এবং অন্যান্য ইসলামি জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে শুরু করেছে৷ জার্মানিতে ইতিমধ্যে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সব রকমের সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ দেশের কোনো নাগরিক যাতে ইসলামি জঙ্গি সংগঠনের হয়ে যু্দ্ধ করতে যেতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যে সন্ত্রাসবিরোধী আইন সংস্কার করেছে ফ্রান্স৷ এখন থেকে যে কেউ যখন-তখন ফ্রান্সের বাইরে যেতে পারবেন না৷ কেউ কোনো ইসলামি সংগঠনে যোগ দিতে যাচ্ছে এমন সন্দেহ হলে তার পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করার আইন কার্যকর করার কথাও ভাবছে ব্রিটেন৷
এসিবি/ডিজি (এএফপি, রয়টার্স)