1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

খালেদার মুক্তি আইনি প্রক্রিয়ায় নয়?

১ জুন ২০১৮

কারাগারে আটক বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে মুক্ত করে আনা সম্ভব নয় বলে মনে করেন বিএনপি নেতারা৷ তাঁদের কথা, সরকার আদালতকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে৷ তাই বড় ধরনের আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা৷

https://p.dw.com/p/2yo1H
Bangladesch Prozess gegen Ex-Regierungschefin Khaleda Zia
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A.M. Ahad

জিয়া অর্ফানেজ ট্রাস্ট মামলায় পাঁচ বছরের কারদণ্ড নিয়ে কারাগারে যান ৮ ফেব্রুয়ারি৷ ওই মামলায় তিনি জামিন পেয়েছেন এবং আপিল শুনানির অপেক্ষায় আছে৷ কিন্তু আরো চারটি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারি করা হয়৷ এর মধ্যে কুমিল্লার দু'টি মামলায় তিনি জামিন পেলেও, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তা স্থগিত করে ঈদের পর ২৪ জুন শুনানির তারিখ দিয়েছে৷ অর্থাৎ বিএনপি নেতারা ঈদের আগে খালেদা জিয়ার মুক্তির যে আশা করেছিলে, তা আর হচ্ছে না৷ অন্যদিকে ঢাকার দু'টি মামলায়ও উচ্চ আদালত খালেদা জিয়াকে জামিন দেয়নি৷ আদালত এই দু'টি মামলায় খালেদা জিয়ার আবেদন বিচারিক আদালতকে নিস্পত্তি করতে বলেছেন৷

খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘নানা প্রক্রিয়ায় শেষ পর্যন্ত ম্যাডাম খালেদা জিয়ার জামিন আটকে দিচ্ছে আদালত৷ বিভিন্ন ইস্যুতে আপিল বিভাগ জামিন স্থগিত করে দিচ্ছে৷ আমরা আদালত যেভাবে বলছে সেভাবে এগোচ্ছি৷ কী হবে বলতে পারছি না৷''

সানাউল্লাহ মিয়া

বিএনপির স্থায়ী কামটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী  মনে করেন, এখন যা পরিস্থিতি তাতে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়৷ তাই আন্দোলনের মাধ্যমেই তাঁকে মুক্ত করতে হবে৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আইন যখন সরকারের হাতে চলে যায়, তখন তো আর ন্যায়বিচার আশা করা যায় না৷ বিচারবিভাগকে সরকার প্রভাবিত করছে৷ তাই দেশের মানুষ মনে করে আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়৷ আমরাও মনে করি আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন না৷ এর জন্য আন্দোলন সংগ্রাম, প্রতিবাদ, প্রয়োজন৷ বিএনপি তাই খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে৷''

তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘নির্বাচনের আরো সময় আছে৷ কিন্তু নির্বাচনের জন্য তো ‘স্পেস' দিতে হবে৷ খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটক রেখে নির্বাচনের ‘স্পেস' বন্ধ করা হচ্ছে৷ আমরা দেখি শেষ পর্যন্ত কী হয়৷ সময় আছে৷''

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

সাবির্ক পরিস্থিতি নিয়ে বিএএনপির সিনিয়র নেতারা শুক্রবার বিকেলে বৈঠকে বসছেন৷ বৈঠকের আগে ডয়চে ভেলের সঙ্গে কথা হয় বিএনপির মহাসচিক মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘রাজনৈতিকভাবে খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য রাস্তায় প্রতিবাদ করা ছাড়া উপায় নাই৷ এখন রামজান মাস, তাই আমরা রাস্তায়ও নামতে পারছি না৷ আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য পরবর্তী রাজনৈতিক কর্মসূচি কী হবে, তা নিয়ে৷''

তাঁর কথায়, ‘‘সরকারের উদ্দেশ্য ভিন্ন৷ তারা ম্যাডামকে নির্বাচন করতে দিতে চায় না৷ রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে চায়৷ এ সবের জন্যই তো এই অবস্থা করা হচ্ছে৷''

তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে নির্বাচনে বিএনপি যাবে কি যাবে না, সেব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় আসেনি৷ সেটা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে৷ বিএনপির সিনিয়র নেতাদের বৈঠকে মামলা, নির্বাচন – এ সব বিষয় নিয়েই আলোচনা হবে৷''

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী

বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, ‘‘খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিকেই এখনো বিএনপি সামনে রাখছে৷ তবে তাদের নির্বাচনের প্রস্তুতিও আছে৷ তারা একটি বৃহত্তর ঐক্য ভিত্তিক জোট গঠন করতে চায়৷ আর তা সম্ভব হলে সেই জোটের মতামতের ভিত্তিতেই নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে চায়৷ তবে খালেদা জিয়া যদি নির্বাচনের আগে মুক্তি না পান তাহলে নির্বাচনের ব্যাপারে তার মতামতই প্রাধান্য পাবে৷''

বাংলা ট্রিবিউনের সিনিয়র রাজনৈতিক প্রতিবেদক সালমান তারেক শাকিল ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বিএনপি সংসদের বাইরে থাকা দলগুলোকে নিয়ে যে জোট করতে চাচ্ছে চাচ্ছে তা জামায়াতের অন্তর্ভূক্তি নিয়ে বিকল্পধারা বাংলাদেশ, ড. কামাল হোসেন এবং মাহদমুদুর রহমান মান্নার আপত্তি আছে৷ তবে এই জোট হলে জোটের সিদ্ধান্তের ওপর গুরুত্ব দেকে বিএনপি৷ নির্বাচনে যাওয় বা নির্বাচনের বাইরে থাকা, খালেদা জিয়ার মুক্তি এই বিষয়গুলোকে সম্মিলিত মতামতের আলোকে দেখা হতে পারে৷''

সালমান তারেক শাকিল

তবে তিনি বলেন, ‘‘আমার কাছে যে তথ্য রয়েছে, তাতে বিএনপি আরো সময় নিতে চায়৷ এখন তারা যে ধরনের প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছে, তা কোরবানির ঈদ পর্যন্ত চলবে৷ তারপর হয়ত তারা বড় কোনো কর্মসূচিতে যাবে পরিস্থিতি বুঝে৷ বিএনপি চাপের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে৷ এবং তারা মনে করে এটা আইন আদালতের বিষয় নয়, এটা রাজনৈতিক চাপ৷ তাই শেষ পর্যন্ত খালেদা জিয়া যদি কারাগারেই থাকেন, তাহলে নির্বাচনের ব্যাপারে তিনি কী চান বা তাঁর মতামতই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ  হয়ে উঠতে পারে বিএনপির জন্য৷''

প্রসঙ্গত, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মোট মামলা ৩৬টি৷

খালেদা জিয়া কি আদৌ সময় থাকতে মুক্তি পাবেন? জানান আমাদের, লিখুন আপনার মন্তব্য নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য