ক্ষমতাচ্যুত হলেন ইংলাক
৭ মে ২০১৪বুধবার সকালে টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত রায়ে থাইল্যান্ডের সাংবিধানিক আদালত জানায়, ২০১১ সালে এক ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে বদলি করায় ইংলাক ক্ষমতার অপব্যবহার করেছিলেন এবং এর ফলে ক্ষমতাসীন ফিউ থাই পার্টির সুবিধা হয়েছিল৷ রায়ে বলা হয়, নয় সদস্যের আদালত অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পাওয়ায় সর্বসম্মতিক্রমে ইংলাককে দোষী সাব্যস্ত করেছে৷ এর ফলে, ফিউ থাই পার্টির বর্তমান প্রধান ইংলাক সিনাওয়াত্রা আইনগতভাবে ক্ষমতায় থাকার অধিকার হারালেন৷
এর আগে মঙ্গলবার মামলার শুনানিতে ইংলাক বলেন, ‘‘ওই বদলির ঘটনায় আমি কোনো সুবিধা ভোগ করিনি৷ আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে, সবই আমি অস্বীকার করছি৷''
প্রায় ছয় মাস ধরে থাইল্যান্ডে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে৷ দুর্নীতি এবং দেশান্তরী সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার ‘পুতুল সরকার' হয়ে দেশ পরিচালনার অভিযোগে ইংলাকের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামে বিরোধীরা৷ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ এবং ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকদের সংঘর্ষে এ পর্যন্ত অন্তত ২৫ জন মারা গেছেন৷
বিরোধীদের আরেকটি দাবি ছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন৷ কিন্তু ইংলাক সেই দাবি অগ্রাহ্য করে নির্বাচন দেন৷ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত সেই নির্বাচনে তাঁর দলই জয়ী হয়৷ কিন্তু থাইল্যান্ডের আদালত বিরোধীদের আন্দোলনের কারণে বিঘ্নিত এ নির্বাচনের ফলাফলকে অকার্যকর ঘোষণা করে৷ নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তারপর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও গঠন করা হয়৷ বিরোধীরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধানের পদে ইংলাককে মেনে না নেয়ায় তারপরও অচলাবস্থা কাটেনি৷
আদালতের রায়ে ইংলাক দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরও দেশটিতে নতুন করে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরুর আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা৷ ইংলাকের আগে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত থাইল্যান্ডের সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী তাঁর বড় ভাই থাকসিন সিনাওয়াত্রা৷ ২০০৬ সালে দুর্নীতির অভিযোগে সরকারবিরোধী আন্দোলনের মুখে সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যূত হয়ে তিনি দেশ ছাড়েন৷ ২০১১ সালে দেশটির ২৮তম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন ইংলাক সিনাওয়াত্রা৷ মাত্র তিন বছরের মধ্যে আদালতের রায়ে তিনিও ক্ষমতায় থাকার অধিকার হারালেন৷
এসিবি/এসবি (এপি, এএফপি)