1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শঙ্কিত মানবাধিকার কর্মীরা

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১২ আগস্ট ২০১৩

মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’-এর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আদিলুর রহমান খানকে গ্রেফতার করায় উদ্বিগ্ন বাংলাদেশের মানবাধিকার কর্মীরা৷ তাঁরা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে সোমবার বৈঠকে বসছেন৷ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে৷

https://p.dw.com/p/19Nr4
ছবি: Reuters

গত ৫ ও ৬ই মে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধ, মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সমাবেশ এবং তাদের শাপলা চত্বর থেকে পুলিশি অভিযানের মাধ্যমে সরিয়ে দেয়ার ঘটনা নিয়ে ‘অধিকার' একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে গত ১০ই জুন৷ তাতে বলা হয় ঐ ঘটনায় ‘শত শত' হেফাজত কর্মী নিহত হয়েছেন৷ অধিকার প্রাথমিকভাবে নিহত ৬১ জনের তালিকা প্রকাশ করে৷ এরপর তথ্য মন্ত্রণালয় চিঠি দিয়ে ৬১ জনের পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা জানতে চায়৷ ১০ই জুলাই ‘অধিকার'কে দেয়া চিঠিতে তথ্য মন্ত্রণালয় বলে, নিহতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হওয়ায় সরকার প্রকৃত সংখ্যা দেশের নাগারিকদের জানাতে চায়৷ তখনকার পত্রপত্রিকা ঘেঁটে ১৬ জনের বেশি নিহত হওয়ার তথ্য জানা যায়নি৷

ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘অধিকার তথ্য মন্ত্রণালয়কে সব তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানায়৷ তাদের রিপোর্টটি বিকৃত এবং অসত্য তথ্যের ভরপুর৷ এই রিপোর্ট তারা বাংলা এবং ইংরেজিতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে৷ তাতে সরকার ও পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে৷ আর তা তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৩(১)ও (২) ধারার লঙ্ঘন৷ সে কারণেই শনিবার রাতে তাকে গ্রেফতার করে রবিবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে৷''

তবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান ডয়চে ভেলেকে জানান, আদিলুর রহমান খানকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছে৷ তাঁদের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে গ্রেফতারের সুনির্দিষ্ট কারণ জানতে চাওয়া হলে তা জানানো হয়নি৷ তিনি বলেন, এ ভাবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া একজন মানবাধিকার কর্মীকে গ্রেফতার করায় মানবাধিকার কমিশন উদ্বিগ্ন৷ তাঁকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়ার বিরোধিতা করে ড. মিজান বলেন, রিমান্ডে তাঁকে কোনো ধরনের নির্যাতন চালানো হলে তা হবে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন৷ জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আদিলুর রহমান খানকে গ্রেফতার এবং পরবর্তী প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করছে৷ এখানে আইনের বাইরে কিছু হলে কমিশন ব্যবস্থা নেবে৷

এদিকে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিচালক নূর খান ডয়চে ভেলেকে জানান, আদিলুর রহমান খানকে গ্রেফতার মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন৷ তিনি বলেন, ‘‘অধিকার তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানায়নি৷ তারা বলেছে, একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশনের কাছে তারা তথ্য দিতে চায়৷ কারণ যাদের ব্যাপারে তথ্য সরকার চায়, তাদের অথবা তাদের পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ৷ এই নীতি মানবাধিকার সংগঠনগুলো অনুসরণ করে৷ তারা যদি কোনো ঘটনার অনুসন্ধান করতে গিয়ে কারো নিরাপত্তার জন্য পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা প্রকাশকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করে, তাহলে তা প্রকাশ করেনা৷ সে ক্ষেত্রে সরকার নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে পারতো৷ একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশনও গঠন করতে পারতো৷ অথবা আদালতে যেতে পারতো তথ্যের জন্য৷ আদালত যদি মনে করতেন সরকারকে তথ্য দিতে হবে, তাহলে অধিকারকে সে নির্দেশ দিতে পারতো৷ কিন্তু এর কোনোটি না করে আদিলুর রহমান খানকে গ্রেফতার করে মানবাধিকারের লঙ্ঘন করা হয়েছে৷ এতে বাংলাদেশের মানবাধিকার কর্মীরা উদ্বিগ্ন এবং শঙ্কিত৷'' তিনি আরও জানান, সোমবার এ বিষয়ে করণীয় নিয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বৈঠক করবে৷ আর আদিলুর রহমানকে সব ধরনের আইনগত সহায়তা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা৷

এদিকে রবিবার রাতে অধিকারের গুলশানের প্রধান কার্যালয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩টি ল্যাপটপ এবং কম্পিউটারের ২টি সিপিইউ জব্দ করেছে৷ গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার শেখ নাজমুল আলম জানান, আদালতের নির্দেশ নিয়েই এই অভিযান চালানো হয়৷ আর তিনি দাবি করেন, রিমান্ডে নিয়ে আদিলুর রহমানকে নির্যাতনের আশঙ্কা অমূলক৷ তার কাছ থেকে এই ‘অসত্য প্রতিবেদনের' ব্যাপারে আর কারা জড়িত তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য