বিচারপতির পদত্যাগ
১১ ডিসেম্বর ২০১২বেলজিয়ামে বসবাসরত বাংলাদেশি এক আইনজীবীর সঙ্গে তাঁর স্কাইপ কথোকথন প্রকাশের পর সৃষ্ট বিতর্কের প্রেক্ষিতে তিনি পদত্যাগ করেছেন বলে ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন একুশে টেলিভিশনের যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনাল প্রতিবেদক প্রণব চক্রবর্ত্তী৷
উল্লেখ্য, ব্রাসেলসভিত্তিক আইন বিশেষজ্ঞ আহমেদ জিয়াউদ্দিনের সঙ্গে নিজামুল হক নাসিমের কথিত কথোপকথন সম্প্রতি দৈনিক আমার দেশ পত্রিকায় প্রকাশের পর সোমবার তাঁর পদত্যাগের দাবি তুলেছিলেন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী সমর্থক আইনজীবীরা৷
সাংবাদিক প্রণব চক্রবর্ত্তী মনে করেন, এই রায়ের ফলে আহমেদ জিয়াউদ্দিনের সঙ্গে বিচারের বিষয়ে আলোচনার কারণে বিচারপতি নাসিমের যেসব সমালোচনা হচ্ছিল পদত্যাগের মাধ্যমে তা প্রকারান্তরে মেনে নেয়া হলো৷
পদত্যাগী বিচারপতি নাসিমের ট্রাইবুনালে জামায়াতে ইসলামীর নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলার শুনানি শেষ হয়েছে৷ যে কোনো দিন রায় দেয়া হতে পারে৷
বাংলাদেশে ডিডাব্লিউর কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানিয়েছে, ২০০১ সালে হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে যোগ দেন নিজামুল হক নাসিম৷ পরবর্তীতে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার তাঁর নিয়োগ স্থায়ী না করায় তিনি আদালতের দারস্থ হয়েছিলেন৷
আদালতের আদেশে ২০০৯ সালের ২৫ মার্চ হাইকোর্ট বিভাগে বিচারক হিসাবে শপথ নেন তিনি৷ নিয়ম অনুযায়ী, আগামী ২০১৭ সালে তাঁর অবসরে যাওয়ার কথা৷
৬৩ বছর বয়সি এই বিচারক আইন পেশায় যুক্ত হওয়ার পর ১৯৭৭ সালে হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন৷ বিচারক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে ১৯৯৯ সালে তিনি আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন৷ একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে ২০১০ সালের ২৫ মার্চ বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে গঠিত হয় তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল৷
বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত করতে পরবর্তীতে আরেকটি ট্রাইবুনাল গঠন করা হলে প্রথম ট্রাইবুনালের প্রধানের দায়িত্বে থাকেন নিজামুল হক৷ নিজামুল হকের আগে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালের আরেক বিচারক এ কে এম জহির আহমেদও পদত্যাগ করেছিলেন৷ স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে গত অগাস্টে তিনি পদত্যাগ করেন৷ এরপর তাঁর স্থলে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেনকে ট্রাইবুনালে নিয়োগ দেয় সরকার৷