আন্দোলনের অধিকার সকলের আছে, ফের বলল আদালত
১৪ জানুয়ারি ২০২০জামে মসজিদ কি পাকিস্তান? যদি হয়ও, তাহলেও কোনও ক্ষতি নেই। পাকিস্তান অবিভক্ত ভারতের অংশ। কেউ চাইলে সেখানে গিয়েও বিক্ষোভ দেখাতে পারে। প্রতিবাদ করা মানুষের অধিকার। তার জন্য কাউকে গ্রেফতার করে রাখা যায় না। দিল্লি পুলিশকে কার্যত ভর্ৎসনা করলেন দিল্লির একটি আদালতের বিচারক কমিনী লাও।
মঙ্গলবার দিল্লির ওই আদালতে ভিম আর্মির প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদের জামিনের আবেদনের শুনানি ছিল। গত ২১ ডিসেম্বর চন্দ্রশেখরকে দিল্লির জামে মসজিদের সামনে থেকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। অভিযোগ ছিল, অনুমতি ছাড়াই জামে মসজিদ থেকে যন্তর মন্তর পর্যন্ত মিছিল করছিলেন চন্দ্রশেখর। বস্তুত, সিএএ এবং এনআরসির বিরুদ্ধে সে সময় একাধিক আন্দোলন হচ্ছিল দিল্লির রাজপথে। পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে সে দিন জামে মসজিদে চলে এসেছিলেন চন্দ্রশেখর। মসজিদের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে সংবিধানের প্রস্তাবনা পাঠ করেছিলেন তিনি। হাতে ছিল অম্বেডকরের ছবি। চন্দ্রশেখরের সভা ঘিরে সে দিন ভরে গিয়েছিল জামে মসজিদের সামনের রাস্তা। কাতারে কাতারে মানুষ এর পর সেখান থেকে মিছিল বার করেন। সেই মিছিল থেকেই চন্দ্রশেখরকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
চন্দ্রশেখর গ্রেফতার হওয়ার পর ওই দিন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দিল্লি। দিল্লি গেটের সামনে গাড়ি জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। বেশ কিছু গাড়িতে ভাঙচুরও করা হয়।
তবে এ দিন সরকারি আইনজীবীকে আন্দোলনের মৌলিক অধিকার নিয়ে প্রশ্ন করেন বিচারপতি। তাঁর বক্তব্য, আন্দোলন করার অধিকার সকলের আছে। সেটা যে কোনও জায়গাতেই হতে পারে। উত্তরে সরকারি আইনজীবী জানান, সে দিন চন্দ্রশেখরকে মিছিলের অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাতে ফের বিচারক মৌলিক প্রশ্ন তোলেন। বলেন, সুপ্রিম কোর্ট একাধিক বার বলেছে যে, ১৪৪ ধারার অপব্যবহার বন্ধ করতে হবে। মানুষকে বিরোধিতা করার সুযোগ দেওয়া উচিত।
দীর্ঘ দিন ধরেই দেশের দলিতদের নিয়ে আন্দোলন করছেন চন্দ্রশেখর। তৈরি করেছেন ভীম আর্মি। এর আগেও তাঁকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। জেলে তাঁর উপরে অত্যাচারের অভিযোগ একাধিকবার এনেছেন চন্দ্রশেখর। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান সময়ে ভারতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে চন্দ্রশেখরের মতো দলিত নেতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকার সেটা বুঝতে পারছে বলেই তাঁকে বার বার গ্রেফতার করা হচ্ছে।
এসজি/জিএইচ (ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, পিটিআই)