1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আফগান যুদ্ধ শেষ: তালেবান

১৬ আগস্ট ২০২১

কাবুলে প্রেসিডেন্ট প্যালেসের দখল নিয়েছে তালেবান। সেখান থেকেই সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়েছে, আফগান যুদ্ধ শেষ। এবার নতুন সরকার গঠন হবে।

https://p.dw.com/p/3z1v8
আফগানিস্তান
ছবি: Zabi Karim/AP/picture alliance

রোববার রাতেই পালিয়ে গেছেন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি। নিজেই একটি টুইট করে জানিয়েছেন, লড়াই থামাতে এবং রক্তস্রোত এড়াতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। তাজাকিস্তানে পালিয়েছেন গনি। আর তার কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রেসিডেন্টের রাজপ্রাসাদে ঢুকে পড়ে তালেবান বাহিনী। রাজপ্রাসাদের মাথা থেকে আফগানিস্তানের পতাকা নামিয়ে দেওয়া হয়। প্রাসাদের কনফারেন্স রুম থেকে তারা সংবাদমাধ্যমকে জানায়, যুদ্ধ শেষ। এবার নতুন ইসলামিক আফগানিস্তান গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে।

জাতিসংঘের বৈঠক

সোমবার সকালে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ জরুরি বৈঠক ডেকেছে। সকাল দশটায় বৈঠক শুরু হওয়ার কথা। আফগানিস্তান নিয়ে আলোচনা করতেই ওই বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়েছে। এখনো পর্যন্ত ৬০টি দেশ আফগানিস্তানের দূতাবাস বন্ধ করে কর্মীদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। অ্যামেরিকা এবং জার্মানি আফগানিস্তানে নতুন করে সেনা পাঠিয়েছে। দূতাবাস কর্মীদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতেই সে কাজ করা হয়েছে বলে তারা জানিয়েছে। এই মুহূর্তে আফগান বিমানবন্দর ঘিরে রেখেছে মার্কিন সেনা। এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের দায়িত্ব নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছে অ্যামেরিকা। একের পর এক বিমানে দূতাবাস কর্মী এবং আফগান সহকর্মীদের তুলে দেওয়া হচ্ছে। তবে রোববার রাতে ওয়াশিংটন জানিয়েছে, আফগান কর্মীদের নিয়ে শেষ বিমান উড়ে গেছে। আপাতত কেবল মার্কিন কর্মীদেরই দেশে ফেরানো হবে।

শনিবারেই পাঁচ হাজার সেনা আফগানিস্তানে পাঠিয়েছিল অ্যামেরিকা। দূতাবাস কর্মী, কূটনীতিক, এনজিও-কর্মীদের নিরাপদে বিমানবন্দর পর্যন্ত নিয়ে আসা এবং বিমানবন্দর সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাদের উপর। রোববার আরো এক হাজার সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে অ্যামেরিকা।

জার্মানিও দূতাবাস কর্মীদের ফেরাতে আফগানিস্তানে সেনা পাঠিয়েছে। সমস্ত দূতাবাস কর্মীকে বিমানবন্দরে নিয়ে আসা হয়েছে। জার্মান এবং মার্কিন দূতাবাস কর্মীদের হেলিকপ্টারে করে বিমানবন্দরে আনা হয়েছে।

তালেবানের বক্তব্য

রোববার রাতে প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ দখল করার পর আল জাজিরার সঙ্গে কথা বলেন তালেবান মুখপাত্র। তিনি জানিয়েছেন, দ্রুত পরবর্তী সরকার গঠন করা হবে। ইসলামিক আফগানিস্তান তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হবে। আশরাফ গনি পালিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পরে মধ্যবর্তী সরকার গঠনের আলোচনা শুরু হয়েছিল। আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে মাথায় রেখে সেই সরকার গঠনের জল্পনা চলছিল। তালেবানরা মধ্যবর্তী সরকারের পক্ষে মত দেবে কি না, তা অবশ্য এখনো চূড়ান্ত নয়। তালেবান জানিয়েছে, দ্রুত তারা তাদের পরবর্তী পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত জানাবে। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, তালেবান নিজেরাই সরকার গড়ার প্রক্রিয়া শুরু করবে।

যুদ্ধ শেষ

তালেবান জানিয়েছে, যুদ্ধ শেষ। তাদের উপর আক্রমণ না হলে তারা আর লড়াইয়ের রাস্তায় যাবে না। বিদেশি কূটনীতিক এবং দেশের প্রশাসনকে তারা আশ্বস্ত করে বলেছে, সকলকেই আফগানে থাকার সুযোগ দেওয়া হবে। কোনোরকম আক্রমণ হবে না। তা সত্ত্বেও বহু মানুষ পালাচ্ছেন। বিমানবন্দরের বাইরে লম্বা লাইন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, অনেকেই গাড়িতে চাবি রেখে বিমানবন্দরে ঢোকার চেষ্টা করছেন।

তালেবান মুখপাত্র জানিয়েছেন, শরিয়া আইন মানলেও এবারের সরকার আগের চেয়ে আধুনিক হবে। তবে নতুন নিয়ম কী হবে, তা এখনো তালেবান জানায়নি। দুই-একদিনের মধ্যেই তা জানানো হবে বলে মুখপাত্র জানিয়েছেন।

বন্দিমুক্তি

রোববার এবং সোমবার আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছএ তালেবান। জালালাবাদ এবং কাবুলের জেল থেকে প্রায় সমস্ত বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে তালেবান এবং আইএস বন্দির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।

অ্যামেরিকা জানিয়েছে, তালেবান লড়াই থামানোর কথা বললেও বিমানবন্দরের কাছে এখনো গুলির আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। তারমই মধ্যে মার্কিন কর্মীদের উদ্ধারের কাজ চালানো হচ্ছে।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এএফপি, আল জাজিরা, এপি)