আফগানিস্তান-পাকিস্তান
২৯ মার্চ ২০১২
মিশায়েল কখ নিজে কূটনীতিক, বাবাও ছিলেন কূটনীতিক৷ মিতভাষী ঠাণ্ডা মাথার মানুষ হিসেবে সুনাম রয়েছে তাঁর৷ পাকিস্তানে জার্মান রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করেছেন৷ নতুন দিল্লি ও ইয়াঙ্গনের জার্মান দূতাবাসেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন৷ বার্লিনে বসে আফগানিস্তান নীতির সমন্বয় করেছেন৷ গোটা অঞ্চল সম্পর্কে তাঁর ভালোই ধারণা রয়েছে৷ প্রখর স্মৃতিশক্তির অধিকারি তিনি৷
কিন্তু সমস্যা হলো, স্মৃতিশক্তি প্রখর হলে আফগানিস্তানে পদে পদে সমস্যা হতে পারে৷ কারণ সেদেশকে পশ্চিমা দেশগুলি যে ভুরিভুরি প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছে, তা পালন করা কঠিন এক চ্যালেঞ্জ৷ ২০১৪ সালে ন্যাটো বাহিনী আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যাবার আগে সেই বকেয়া কাজ শেষ করার চেষ্টা করতে হবে৷ তার উপর অতীতের তুলনায় পরিস্থিতির অনেক অবনতি হয়েছে৷ ন্যাটো বাহিনি নির্ধারিত সময়ের আগেই আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যেতে পারে, এমন জল্পনা-কল্পনার ফলে তালেবান নিজেদের আরও শক্তিশালী মনে করতে শুরু করেছে৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারাভিযান শুরু হয়ে গেছে৷ অনেক পর্যবেক্ষকের মতে, এর ফলে আফগানিস্তানে রাজনৈতিক স্তরে আলোচনার উপর সরাসরি প্রভাব পড়বে৷ বিশেষ করে কট্টরপন্থী রিপাবলিকানরা তালেবানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার ঘোরতর বিরোধী৷ জার্মানির রাজনৈতিক জগতে অবশ্য এক্ষেত্রে ঐকমত্য রয়েছে৷ আফগানিস্তানে সামরিক নয় – রাজনৈতিক সমাধানসূত্রেরই প্রয়োজন বলে সবাই মনে করেন৷ ফলে তালেবানের সঙ্গে সংলাপ ছাড়া গতি নেই৷
পাকিস্তানের সাংবাদিক ও তালেবান বিশেষজ্ঞ আহমেদ রশিদ মনে করেন, এটাই সঠিক পথ৷ তাঁর মতে, জার্মানির নতুন দূত কখ’কেও আগামী কয়েক মাস ধরে এই সংলাপের পথ সুগম করতে হবে৷ বিশেষ করে তালেবানের সঙ্গে ওয়াশিংটনের জটিল সম্পর্কের মধ্যে অচলাবস্থা এড়াতে জার্মানিকেই হয়তো মধ্যস্থতাকারী হিসেবে এগিয়ে আসতে হতে পারে৷ উল্লেখ্য, গত বছর কাতারে এই আলোচনা আদৌ সম্ভব করতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিলেন কখ’এর পূর্বসূরি মিশায়েল স্টাইনার৷ আহমেদ রশিদের মতে, জার্মানি বেশ কিছুকাল ধরে এই অঞ্চলের সব পক্ষের আস্থা অর্জন করতে অনেকটাই সমর্থ হয়েছে৷ কখ সেই কাজ আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে৷ অ্যামেরিকার সঙ্গেও তাঁর অত্যন্ত ভালো যোগাযোগ রয়েছে৷ এছাড়া পাকিস্তান, ভারত ও ইরানকে সঙ্গে নিয়ে আফগানিস্তানের জন্য স্থায়ী সমাধানসূত্র খোঁজার ক্ষেত্রে জার্মান দূতের ব্যক্তিগত নৈপুণ্য কাজে লাগতে পারে৷
প্রতিবেদন: ডানিয়েল শেসকেভিৎস / সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ