আফগানিস্তানের কারণে নিরাপত্তা ঝুঁকি
৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্ট্যাডিজ বা বিআইপিএসএস-র আয়োজনে সোমবার ঢাকায় আফগানিস্তান বিষয়ক এক সেমিনারে বাংলাদেশ ও ভারত ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, পাকিস্তান এবং ক্যানাডার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন৷ ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট ডাব্লিলউ গিবসন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন৷
অনুষ্ঠানে বিশ্লেষকরা বলেন, আগামী বছর আফগানিস্তান থেকে ন্যাটোর সৈন্য প্রত্যাহারের পর বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর নিরাপত্তার ওপর তা প্রভাব ফেলবে৷ প্রায় এক দশক ধরে আফগানিস্তানে ন্যাটোর অধীনে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করছে৷ কিন্তু আগামী বছর তারা আফগান জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে বিদায় নেবে৷ তাতে আফগানিস্তানে তালেবানসহ জঙ্গি তত্পরতা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে৷ যার প্রভাব পড়বে এই অঞ্চলে৷
বিআইপিএসএস-র প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল মুনীরুজ্জামান (অব.) ডয়চে ভেলেকে বলেন, ন্যাটোর সৈন্য প্রত্যাহার পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে জঙ্গি তত্পরতা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে৷ তিনি জানান, বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠনগুলোর যোগাযোগ আছে আফগানিস্তানের তালেবানের সঙ্গে৷ নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ এবং জেএমবিসহ আরো অনেক জঙ্গি সংগঠন গড়ে উঠেছে আফগান ফেরত ‘মুজাহিদ'দের নেতৃত্বে৷ তাদের অনেক নেতা-কর্মী এক সময়ে আফগানিস্তানে রাশিয়া বিরোধী যুদ্ধে অংশ নিয়েছে৷ পরবর্তী সময়ে তালেবানরা তাদের বাংলাদেশে জঙ্গি সংগঠন গড়ে তুলতে অর্থ এবং রসদ দিয়ে সহায়তা করেছে৷ গত এক দশক আফগানিস্তানে তালেবান চাপের মুখে থাকায় বাংলাদেশের জঙ্গিরাও ঝিমিয়ে পড়েছিল৷ আফগানিস্তান থেকে ন্যাটোর সৈন্য প্রত্যাহার হওয়ার পর তালেবান যদি সক্রিয় হয় তার প্রভাব বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠনগুলোর ওপরও পড়বে৷
ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইন্সটিটিউট অফ ইন্ডিয়া'র পরিচালক লে. জেনারেল পি কে সিং (অব.) ডয়চে ভেলেকে বলেন কোনো দেশেই জঙ্গি বা সন্ত্রাসীরা তাদের পাশের দেশের জঙ্গিদের সহযোগিতা ছাড়া চলতে পারেনা৷ আর সে কারণেই আফগানিস্তানে তালেবানরা আবার সক্রিয় হলে তার প্রভাব বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত এবং পাকিস্তানে পড়বে৷ তবে শুধু যে এই কারণেই জঙ্গি তত্পরতা বাড়বে তা নয়৷ তাদের অর্থ এবং রসদের ব্যাপারটিও গুরুত্বপূর্ণ৷ আর তা বন্ধ করা না গেলে তাদের দমন করা কঠিন৷ এজন্য প্রতিবেশী দেশগুলোর উচিত পরস্পরকে সহযোগিতা করা৷
মেজর জেনারেল মুনীরুজ্জামান (অব.) বলেন, সে জন্য বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর এখনই প্রস্তুতি নেয়া উচিত৷ আফগানিস্তান থেকে ন্যাটোর সৈন্য প্রত্যাহার পরবর্তী প্রভাব সম্পর্কে ধারণা নিয়ে তা মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে৷ জঙ্গিদের অর্থ এবং রসদের উত্স বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে৷