শান্তি প্রক্রিয়া প্রশ্নের মুখে
২৫ জুন ২০১৩মঙ্গলবার সরাসরি কাবুলের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে হামলা চালিয়ে বসলো তালেবান৷ ভোর সাড়ে ছটা নাগাদ হামলা শুরু হয়৷ নিরাপত্তা বাহিনী পাল্টা হামলা চালায়৷ প্রায় এক ঘণ্টা ধরে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি চলে৷ অবিকল আইসাফ বাহিনীর দুটি গাড়ি নকল করে তালেবান যোদ্ধারা তাতে করে একটি চেকপোস্ট পেরিয়ে যাবার চেষ্টা করে৷ তারাও ছদ্মবেশে ছিল৷ প্রথম গাড়িটি সফল হয়৷ তবে তারপর নিরাপত্তা রক্ষীদের মনে সন্দেহ দেখা দিয়েছিল৷ সংঘর্ষ শুরু হতে দুটি গাড়িতেই বিস্ফোরণ ঘটে৷ সব হামলাকারী নিহত হয়৷ কাছেই সিআইএ দপ্তর বা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের কোনো ক্ষতি হয় নি৷ সরকারি পক্ষে হতাহতেরও খবর নেই৷ শুধু এক জন রক্ষী আহত হয়েছে বলে জানা গেছে৷
২০০৮ সালের পর খোদ রাজধানীতে এত বড় আকারের হামলা দেখা যায় নি৷ সেবার প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন৷
এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে, ঠিক এই মুহূর্তেই তালেবান এমন হামলা চালালো কেন? হামলা সফল করতে যত লোকবল লাগা উচিত, সেই তুলনায় হামলাকারীদের সংখ্যাও ছিল কম, যদিও তালেবান সিআইএ-র দপ্তরে বড় হামলার দাবি করেছে৷ প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও তাদের হামলার লক্ষ্য ছিলো বলে দাবি করেছেন তালেবান মুখপত্র জাবিদুল্লাহ মুজাহিদ৷
ফলে এই হামলাকে প্রতীকি মনে করছেন অনেক পর্যবেক্ষক৷ এর প্রেক্ষাপটও স্পষ্ট৷ তালেবান সম্প্রতি কাতারের রাজধানী দোহায় একটি দপ্তর খুলেছে৷ আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের আগে মার্কিন প্রশাসনও তালেবানের সঙ্গে রাজনৈতিক আলোচনায় আগ্রহ দেখাচ্ছে৷ সোমবারই কাবুল সফরে এসেছেন মার্কিন বিশেষ দূত জেমস ডবিনস৷ কাতারে আচমকা দপ্তর খোলার বিষয়টিকেও ভালো চোখে দেখছে না মার্কিন প্রশাসন৷ ডবিনস বলেন, তালেবান আদৌ শান্তি আলোচনা চায় কি না, তা জানার জন্য অপেক্ষা করছেন তিনি৷
তবে হামিদ কারজাই-এর প্রশাসন এখনো তালেবানের সঙ্গে সংলাপের প্রশ্নে সন্দিহান৷ তার উপর কাতারে তালেবান দপ্তরে ‘ইসলামি আফগান আমিরাত' ফলকটিকে কেন্দ্র করে তীব্র ক্রোধ দেখিয়েছিলেন কারজাই৷ পরে সেটি সরিয়ে ফেলা সত্ত্বেও তিনি কাতারে কোনো প্রতিনিধি পাঠান নি৷ মঙ্গলবার তিনি সাংবাদিকদের সামনে তালেবানের সঙ্গে আলোচনার অগ্রগতির বিষয়ে জানাতে চেয়েছিলেন৷ ঠিক তখনই হামলাটি ঘটে৷
এসবি/ডিজি (এএফপি, রয়টার্স)