আবার জামিন
৮ আগস্ট ২০১৩মহানগর দায়রা জজ জহুরুল হক আসিফের এক মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন বুধবার৷ নির্ধারিত দিনের পরে হাজির হওয়ায় এর আগে গত ২৯শে জুলাই তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল৷
আসিফের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ডয়চে ভেলেকে জানান, আদালত প্রয়োজনীয় চিকিত্সার জন্য আসিফকে জামিন দিয়েছে৷ এক মাসের এই অন্তর্বর্তীকালীন জামিন শেষ হলে তাঁরা স্থায়ী জামিনের জন্য আবেদেন করবেন৷ তিনি জানান, আগের আইনজীবী চৌধুরী সানোয়ার আলীর ভুলের কারণে আসিফকে ১০ দিন কারাগারে থাকতে হয়েছে৷ তিনি আগের অন্তর্বর্তী জামিনের সময় সীমা জানাননি৷ কিন্তু আইনজীবীর ভুলের কারণে আসিফ কারাগারে থাকতে পারেন না৷ আদালতও তাই মনে করে৷
আসিফের বোন জুয়েলা জেবুন্নেসা মনি ডয়চে ভেলেকে জানান, আসিফের আগের আইনজীবী চৌধুরী সানোয়ার আলী প্রথমে ভালো কাজ করলেও কেন জানি পরে তিনি বিগড়ে যান৷ প্রকারন্তরে তিনি অসিফের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন৷ দ্বিতীয় দফায় জামিন না দিয়ে যেদিন আসিফকে কারাগারে পাঠানো হয়, সেদিন সানোয়ার আলী আদালতে বলেছিলেন যে আসিফ আদালতে হাজির হতে চাননি৷ তাঁকে অনেকটা জোর করে আদালতে আনা হয়েছে৷ আইনজীবীর এই ভূমিকায় আসিফের বোন বিস্ময় প্রকাশ করেন৷ তবে এ ব্যাপারে সানোয়ার আলীর বক্তব্য জানা যায়নি৷
জুয়েলা জেবুন্নেসা মনি আরো জানান আসিফ এখনো অসুস্থ৷ তাঁর ঘাড়ে সমস্যা আছে৷ তাঁকে ঘাড়ের যে জায়গায় ধারল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল, সেখানে এখনও প্রচণ্ড ব্যাথা রয়েছে৷ চিকিত্সকরা তাঁকে দেশের বাইরে নিয়ে চিকিত্সা করানোর জন্য পরামর্শ দিয়েছেন৷ এ জন্য আদালতে আবেদন করা হবে৷ তবে আসিফ নিজে দেশের বাইরে যেতে রাজি হচ্ছেন না৷
ব্লগে ধর্মকে অবমাননা করে লেখালেখির অভিযোগে আসিফ মহিউদ্দীনকে গ্রেপ্তার করা হয় গত ৩রা এপ্রিল৷ গত ২৭শে জুন আসিফ আদালত থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান৷ তবে জামিনের মেয়াদের চার দিন পর আদালতে হাজির হওয়ায়, তাঁকে স্থায়ী জামিন না দিয়ে তখন কারাগারে পাঠায় আদালত৷
গত ১৪ই জানুয়ারি রাতে উত্তরা এলাকায় মৌলবাদী সন্ত্রাসীরা আসিফের ওপর হামলা চালায়৷ তিনি তখন প্রাণে বেঁচে গেলেও গুরুতর আহত হন৷ দীর্ঘদিন তাঁকে হাসপাতালে থেকে চিকিত্সা নিতে হয়৷ তারপরও তিনি পুরোপুরি সুস্থ হননি৷ এরপর গণজাগরণ মঞ্চ শুরু হলে মৌলবাদী গোষ্ঠী ধর্মকে অবমাননার অভিযোগে আসিফসহ বেশ কিছু ব্লগারকে গ্রেপ্তারের দাবি জানায়৷ তাঁদের দাবির মুখে আসিফকে অসুস্থ অবস্থাতেই গ্রেপ্তার করা হয়৷
একই সময়ে আরো তিনজন ব্লগার রাসেল, পারভেজ এবং শুব্রত অধিকারী শুভকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা বিভাগ৷ তাঁরা তিনজন আসিফের আগেই জামিন পান এবং এখনো তাঁরা জামিনেই আছেন৷
আগামী ২৫শে আগস্ট আসিফের মামলার পরবর্তী শুনানির দিন৷