‘আমি সমকামী'
২ মার্চ ২০১৮গত রবিবার ইউটিউবে সতেরো মিনিটের ভিডিওটি পোস্ট করা হয়৷ এখন পর্যন্ত সেটি প্রায় ৩৯ হাজার বার দেখা হয়েছে৷ মন্তব্য এসেছে প্রায় চারশ’টি৷ বেশিরভাগই লেক্স লিম্বুর প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন৷
ভিডিওতে লিম্বুকে বলতে শোনা গেছে, ‘‘আমার বয়স ২৫৷ জীবনে এখন আমি আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি আত্মবিশ্বাসী৷ আমি ছেলে, ভাই, বন্ধু এবং আমি একজন সমকামী৷''
প্রকাশ্যে এই প্রথম সমকামিতার কথা জানালেও লিম্বুর কাছের মানুষ ও অনুসারীদের অনেকে বিষয়টি আগে থেকেই জানতেন কিংবা ধারণা করতেন৷
ফেসবুকে লিম্বুর ভেরিফায়েড পাতা লাইক করেছেন এক লক্ষ ১৫ হাজার জনের বেশি৷ এছাড়া তাঁর একটি ওয়েবসাইটও আছে৷ এ সব জায়গায় নেপালের নানান বিষয় নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি সমকামিতা, সমকামীদের অধিকার ইত্যাদি বিষয় নিয়ে লেখেন৷ নেপালে এলজিবিটি সম্প্রদায়ের আয়োজিত প্রাইডেও অংশ নিয়েছেন তিনি৷
দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে নেপালে সমকামিতা বৈধ এবং দেশটি সমলিঙ্গের বিয়েরও স্বীকৃতি দেয়ার কথা বিবেচনা করছে৷ তবুও সামাজিকভাবে অনেক স্থানে এখন সমকামিতা একটি ট্যাবু বিষয়৷ তাই নিজের সমকামিতার বিষয়টি খোলাখুলিভাবে বলার বিষয়টি সহজ ছিল না বলে ডয়চে ভেলেকে জানান লিম্বু৷ তিনি বলেন, ‘‘সমকামীদের প্রতি নেতিবাচক ধারণা এখনও প্রবল৷ এমনকি তাঁদের নিজেদের পরিবারও তাঁদের সমর্থন করেনা৷ এই অবস্থার পরিবর্তন আনতে সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের এই বিষয়টির প্রতি সমর্থন জানাতে হবে৷''
লিম্বুর যখন দুই বছর বয়স তখন তাঁর পরিবার তাঁকে নিয়ে ব্রুনেই চলে গিয়েছিল৷ এরপর ২০০০ সাল থেকে তাঁরা ব্রিটেনে আছেন৷ তাই লিম্বুর পড়াশোনা, বেড়ে ওঠা সেখানে৷ তবে বছরে অন্তত একবার নেপাল যান লিম্বু৷ তাঁর লেখালেখি জুড়েও রয়েছে নেপাল৷
কিশোর বয়স থেকে নিজের সমকামিতার বিষয়টি বুঝতে শুরু করেন লিম্বু৷ সময়টা বেশ কঠিন ছিল বলে জানান তিনি৷ ‘‘টিনএজ বয়সে আমি অনেক চাপ অনুভব করেছি৷ সেই সময় অনেক প্রশ্নেরও মুখোমুখি হতে হয়েছে৷ যেমন তুমি কাকে ভালোবাস? ছেলে না মেয়ে? ইত্যাদি৷''
এরপর গতবছরের জুলাইতে মা-বাবাকে তাঁর সমকামী হওয়ার বিষয়টি জানান লিম্বু৷ তখন তাঁদের প্রতিক্রিয়া কেমন হয়েছিল তা ইউটিউব ভিডিওতে জানিয়েছেন তাঁর মা৷ তিনি জানান, শুরুতে কষ্ট পেলেও পরে এটা মনে হয়েছে যে, তাঁর ছেলেকে কতটা কষ্টের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে৷ লিম্বুর মা তাঁকে সমর্থন জানানোয় ইউটিউব ভিডিওর নীচে মন্তব্য করা অনেকেই তাঁর মায়ের প্রশংসা করেছেন৷
এস্থার ফেলডেন/জেডএইচ