আরো দুর্বল হয়ে পড়লেন ম্যার্কেল
২৯ অক্টোবর ২০১৮রবিবার জার্মানির হেসে রাজ্যের নির্বাচনের পর চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের পায়ের নীচের মাটি আরো নরম হয়ে পড়লো৷ একের পর এক রাজ্য স্তরের নির্বাচনে তাঁর ইউনিয়ন শিবির খারাপ ফল করে চলেছে৷ তাঁর জোটসঙ্গী সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি দলের ভরাডুবিও অব্যাহত রয়েছে৷ এই পরিস্থিতিতে তিনি একাধিক স্তরে চাপের মুখে পড়ছেন৷ বার্লিনে মহাজোট সরকারের আচরণ নিয়ে ভোটাররা সন্তুষ্ট নয়, এই সত্য বার বার স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে৷ দুর্বল জোটসঙ্গী এসপিডি দল এই জোট কতকাল টিকিয়ে রাখবে, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিচ্ছে৷ নিজের সিডিইউ দলের মধ্যেও তাঁর নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে৷ ইউনিয়ন শিবিরের অপর দল বাভেরিয়ার সিএসইউ সবে রাজ্য নির্বাচনে অভূতপূর্ব খারাপ ফল করে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে৷ এমন প্রেক্ষাপটে ম্যার্কেল চ্যান্সেলার ও দলের শীর্ষ নেত্রী হিসেবে বর্তমান কার্যকাল শেষ করতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে বারবার সংশয় দেখা দিচ্ছে৷
ক্ষমতাসীন জোটের তিন দলই দুর্বল হয়ে পড়ার পাশাপাশি গোটা জার্মানি জুড়ে সবুজ দলের প্রতি জনসমর্থন বেড়েই চলেছে৷ হেসে রাজ্যে এতকাল সবুজ দলের সঙ্গে যথেষ্ট সাফল্যের সঙ্গে জোট সরকার চালিয়ে এসেছে সিডিইউ দল৷ নির্বাচনি প্রচারে ম্যার্কেল ভোটারদের বারবার সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেছিলেন, বার্লিনের ফেডারেল সরকারের কাজে সন্তুষ্ট না হলেও তাঁরা যেন রাজ্য সরকারের ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে সিডিইউ দলকে ভোট দেন৷ রবিবারের নির্বাচনে সবচেয়ে শক্তিশালী দল হিসেবে টিকে থাকতে পারলেও সিডিইউ ১০ শতাংশের বেশি ভোট হারিয়েছে৷ সবুজ দল আগের বারের তুলনায় ৮ শতাংশ বেশি ভোট পেয়ে অল্প ব্যবধানে হলেও জোটের জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা বজায় রাখতে পারবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত হলে স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যাবে৷
হেসে রাজ্যের নির্বাচনে চরম দক্ষিণপন্থি এএফডি দল তার ‘ষোলকলা পূর্ণ করলো'৷অর্থাৎ, জার্মানির ১৬টি রাজ্যেই তারা নিজেদের রাজনৈতিক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে পারলো৷ প্রায় ১৩ শতাংশ ভোট পেয়ে রাজ্য বিধানসভায় বিরোধী দল হিসেবে উপস্থিত থাকবে এই দল৷
এসপিডি দলের শীর্ষ নেত্রী আন্দ্রেয়া নালেস রবিবার বলেন, ভোটারদের এই রায় দেখিয়ে দিচ্ছে, ফেডারেল সরকারের বর্তমান অবস্থা তাঁদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়৷ এসপিডি ও সিডিইউ দলকে এই রায় মেনে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে৷ সেইসঙ্গে নিজের এসপিডি দলে পরিবর্তনের উপরেও জোর দেন তিনি৷
সিডিইউ দলের সাধারণ সম্পাদক আনেগ্রেট ক্রাম্প-কারেনবাউয়ার-ও ভোটারদের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে মহাজোট সরকারের মধ্যে কোন্দল বন্ধ করার ডাক দেন৷ তাঁর মতে, মানুষ ন্যায্যভাবে এই সরকারের কাছ থেকে ভালো কাজের প্রত্যাশা করেছে৷ তবে শীর্ষ নেত্রী হিসেবে ম্যার্কেলকে চ্যালেঞ্জ করার কোনো লক্ষণ তিনি দেখাননি৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, রয়টার্স)