ইউক্রেন সংকটের ছায়া
২৩ জুলাই ২০১৪মালয়েশীয় বিমান ধ্বংসের ফলে ইউক্রেন সংকট নতুন করে প্রকট হয়ে ওঠায় সোমবার ইউরোপের পুঁজিবাজার বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছিল৷ ইউক্রেনের রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা কিছুটা সহযোগিতার মনোভাব দেখানোর ফলে মঙ্গলবার অবশ্য ইউরোপের পুঁজিবাজার কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে৷ আপাতত সংঘাতের আশঙ্কা কেটে গেছে বটে, তবে রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞার সম্ভাবনার ফলে সে দেশের সঙ্গে বাণিজ্যের উপর কালো ছায়া পড়ছে৷ ইউরোপের বেশ কিছু কোম্পানি এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে৷ বিশেষ করে জ্বালানির ক্ষেত্রে রাশিয়ার উপর জার্মানি সহ বেশ কিছু দেশ নির্ভর করে৷
এমন বিচ্ছিন্ন ঘটনার পাশাপাশি ইউরোপীয় অর্থনীতির গতি-প্রকৃতির উপর থেকেও বাজারের নজর সরছে না৷ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের পূর্বাভাষ অনুযায়ী চলতি বছর জার্মানির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাত্রা হবে ১.৯ শতাংশ৷ আইএমএফ-এর আগের পূর্বাভাষ ছিলো ১.৭ শতাংশ৷ অর্থাৎ সামগ্রিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুর্বলতা সত্ত্বেও ইউরোপের চালিকা শক্তি হিসেবে পরিচিত জার্মানির সাফল্য সম্পর্কে ইতিবাচক প্রত্যাশার কারণ রয়েছে৷ ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক অবশ্য মূল্যের স্থিতিশীল হার নিয়েই বেশি চিন্তিত৷ ইসিবি সুদের হার কমিয়ে ও অন্যান্য পদক্ষেপ নিয়ে ইউরো এলাকার অর্থনীতির সহায়তায় বার বার এগিয়ে এসেছে বটে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে এই উদ্যোগ যথেষ্ট হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন ইসিবি-র পরিচালকমণ্ডলীর এক সদস্য৷ শুধু ইসিবি-র উপর নির্ভর না করে সরকারি স্তরেও আরও উদ্যোগ নিতে হবে, বলেন জার্মান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান ইয়েন্স ভাইডমান৷ সেইসঙ্গে বাজেট সংক্রান্ত নিয়ম মানতে হবে ও কাঠামোগত সংস্কার চালিয়ে যেতে হবে, বলেন তিনি৷
ইউরো এলাকার সংকটগ্রস্ত দেশগুলির অগ্রগতি ধীরে হলেও অব্যাহত রয়েছে৷ যেমন বিদেশি পর্যটকদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় স্পেনের অর্থনীতি উপকৃত হচ্ছে৷ মিশর ও তুরস্কের মতো দেশে স্থিতিশীলতার অভাবের কারণে বিশেষ করে ব্রিটিশ ও জার্মান পর্যটকরা স্পেনকে বেছে নিচ্ছেন৷ তাছাড়া সামগ্রিকভাবে স্পেন, ফ্রান্স ও গ্রিস সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ছে৷ ইটালি, স্পেন ও পর্তুগাল তাদের সংকট সামলে নিয়ে আরও ঋণ নিতে শুরু করেছে বলে এক পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে৷ ফলে সামগ্রিকভাবে ইউরো এলাকার ঋণভার সামান্য হলেও বেড়ে গেছে – যা অর্থনৈতিক কার্যকলাপ বেড়ে চলার ইঙ্গিত বহন করে৷
এসবি / জেডএইচ (রয়টার্স, ডিপিএ, এপি, এএফপি)