চীনে ম্যার্কেল
২ ফেব্রুয়ারি ২০১২ইউরোপের আর্থিক ও অর্থনৈতিক সংকটের সময় যদি কেউ সহায়তা করতে পারে, তা হল চীন – অনেক হিসেব-নিকেশ করে বিশেষজ্ঞরা অনেক আগেই এই পূর্ববাণী করে রেখেছেন৷ আমরা জানি, গ্রিস সহ ইউরো এলাকার একাধিক দেশের সংকট সামলাতে গত বছর ইএফএসএফ নামের যে অস্থায়ী তহবিল গঠন করতে হয়েছিল, এবছরের গ্রীষ্মেই তার মেয়াদ শেষ হচ্ছে৷ তার জায়গায় আসছে ইএসএম নামের স্থায়ী তহবিল৷ এই তহবিলে যত অর্থ জমা পড়বে, বাজার ততই শান্ত হবে বলে বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ মনে করছেন৷ ইউরোপের ভিতরে একমাত্র জার্মানিরই সেই অঙ্ক বাড়ানোর ক্ষমতা রয়েছে, যদিও ম্যার্কেল নানা কারণে তা চাইছেন না৷ চীনের বিশাল বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার থেকে সামান্য অর্থ যদি এই তহবিলে জমা করা যায়, তাহলে ইউরোপের খুবই উপকার হবে৷ বেইজিং অবশ্য এতকাল অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে ইউরোপের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এসেছে৷ ম্যার্কেল তাঁর সফরে চীনের মনোভাব বদলানোর চেষ্টা করছেন৷
চীনের প্রতিক্রিয়া
ম্যার্কেল'এর সঙ্গে আলোচনার পর চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাও বলেন, ইউরোপের ঋণ সংকটের ক্ষেত্রে তৎপরতা বাড়ানোর বিষয়ে তাঁর দেশ ভাবনা-চিন্তা করছে৷ অর্থাৎ ইএফএসএফ বা ইএসএম'এ অংশ নেওয়ার প্রশ্নে চীন কিছুটা আশার আলো দেখাচ্ছে৷ তবে কোনো নির্দিষ্ট অঙ্কের কথা এখনই শোনা যাচ্ছে না৷ চীন বরাবরই এই সংকট মোকাবিলার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ'এর আরও বেশি অংশগ্রহণ দেখতে চাইছে৷ ইউরোপে সরাসরি হস্তক্ষেপের বদলে তারা আইএমএফ'এর মাধ্যমে সহায়তা করতে চায়৷ ওয়েন বলেন, সামগ্রিকভাবে বিশ্ব অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে চীনের অবশ্যই একটি ভূমিকা রয়েছে৷
চীনের সমালোচনা
চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাও ম্যার্কেল'এর সামনেই কিছু কড়া কথা শুনিয়ে দিয়েছেন৷ বলেছেন, সবার আগে ইউরোপীয় দেশগুলিকে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালাতে হবে৷ তাছাড়া এই সংকট গোটা বিশ্বের অর্থনীতির জন্য কতটা ক্ষতিকর, তাও ইউরোপকে বুঝতে হবে৷ চীনও এর প্রভাব থেকে মুক্ত থাকতে পারে না৷ তাই ইউরোপকে বেশ কিছু কাঠামোগত সংস্কার করতে হবে, বলেন ওয়েন৷ ম্যার্কেলও এই সমালোচনা স্বীকার করে নিয়েছেন৷ ইউরোপকে একদিন চীনের চোখরাঙানি দেখতে হবে, এমনটা কেউ ভাবতে পেরেছিল?
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ