ইতিবাচক করোনা
২৫ ডিসেম্বর ২০২০কিন্তু কথায় বলে, কোনো কিছুর যেমন খারাপ দিক আছে, খুঁজলে তার মধ্যে হয়ত ভালো কিছুও পাওয়া যেতে পারে। এভাবে হয়ত করোনারও কিছু ভালো দিক পাওয়া যাবে। সেই ভালো বিষয়ের কথা মনে করে নতুন বছরে ঢোকাই সুখি মানুষের কাজ হবে। কারণ, সুখ হেঁটে কারও কাছে আসে না, তাকে খুঁজে নিজের কাছে নিয়ে আসতে হয়।
চলুন, এখন সেই কাজটাই করি।
করোনার কারণে মানুষ এখন আগের চেয়ে বেশি স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে উঠেছে। কারণ, দেখা গেছে, আগে থেকে বিভিন্ন রোগে ভোগা মানুষকেই করোনা ভাইরাস বেশি কাবু করতে পেরেছে। তাই সুস্থ জীবনযাপনের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। মানুষ এখন আগের চেয়ে বেশি পরিষ্কার-পরিচ্ছন জীবনযাপন করে। হাঁচি, কাশি দেয়ার সময় হাত দিয়ে মুখ ঢাকে। দোকানপাট, রেস্তোরাঁ, শহরের অলিগলি আগের চেয়ে বেশি পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করা হয়। আমার ধারণা, মানুষ এই পরিবর্তিত অভ্যাসগুলো অন্তত কয়েক বছর মেনে চলবে।
করোনা এসেছে বলেই মানুষ অনেকটা সময় ঘরে থাকতে বাধ্য হয়েছে। যদিও এ কারণে পারিবারিক সহিংসতা বেড়েছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে। তবে আমার মনে হয়, এই সময়ে দম্পতিদের একটা বড় অংশ একে অপরকে ঘরের কাজে সহায়তা করেছে। কিন্তু হয়ত কাটতির কথা ভেবে গণমাধ্যম সেই খবর প্রকাশ করেনি। শুধু স্বামী-স্ত্রী কেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে মা-বাবার সঙ্গে সন্তানের সম্পর্ক মহামারির সময়ে আরো গভীর হয়েছে। আর যারা এই সময়টাকে সম্পর্ক উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারেননি, তাদের চেয়ে দুর্ভাগা আর ক'জন আছে?
করোনার কারণে পৃথিবীটা আরো বাসযোগ্য হয়ে উঠেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২০ সালে কার্বন নিঃসরণ সাত ভাগ কমেছে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে নতুন রেকর্ড৷ মানুষের যাতায়াত, বিমানযাত্রা, পর্যটন ইত্যাদি বন্ধ থাকাসহ নানা কারণে কার্বন নিঃসরণ কম হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে বেশ কয়েকবছর ধরেই কথা হচ্ছে। কিন্তু অনেক উদ্যোগ নিয়েও যথেষ্ট ফল পাওয়া যাচ্ছিলো না। করোনার কারণে কিছুটা হলেও সেটা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া মানুষের সমাগম কম থাকায় শহরের রাস্তায় বন্যপ্রাণীর ঘোরাফেরা, কক্সবাজার সৈকতে কচ্ছপের দেখা পাওয়ার মতো মন ভালো করা খবর করোনার কারণেই পেয়েছি আমরা।
প্রিয় পাঠক, আপনিও যদি একটু সময় নিয়ে ভাবেন তাহলে উপরের তালিকায় যোগ করার মতো আরো কিছু নিশ্চয় পাবেন।
আসুন, ২০২০ থেকে ভালো কিছু নিয়ে সবাই মিলে নতুন বছরে পা দেই।