1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইদলিব: অস্ত্রবিরতির সিদ্ধান্ত রাশিয়া ও তুরস্কের

৬ মার্চ ২০২০

রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যে অস্ত্রবিরতির সিদ্ধান্ত হল। তারপর ইদলিব এখন অনেকটাই শান্ত।

https://p.dw.com/p/3Ywm3
ছবি: AFP/O. H. Kadour

চার ঘণ্টা ধরে আলোচনার পর ইদলিবে সামরিক অস্ত্রবিরতির কথা ঘোষণা করলেন রশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন এবং তুরষ্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ান। ইদলিবই হল সিরিয়ার একমাত্র এলাকা যা বিদ্রোহীদের দখলে রয়েছে। আর রাশিয়ার মদতপুষ্ট সিরীয় প্রশাসন তা বিদ্রোহীদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে চাইছে। তুরষ্ক আবার বিদ্রোহী কয়েকটি গোষ্ঠীকে সাহায্য করছে এবং সেখানে প্রচুর সেনা পাঠিয়েছে।

এর্দোয়ান জানিয়েছেন ''মধ্যরাত থেকে অস্ত্রবিরতি চালু হবে।'' বাস্তবে তা হয়েছেও। তাই মধ্যরাতের পর থেকে ইদলিব অনেকটাই শান্ত। যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংস্থা অবসারভেটারি অফ হিউমান রাইটস জানিয়েছে, মাঝরাতের পর ইদলিব শান্ত। রাশিয়া ও সিরিয়া বিমানহানা থেকে বিরত থেকেছে। তবে ইদলিবের সীমানায় থাকা হামা সহ কয়েকটি জেহাদি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় সিরিয়ার বাহিনী গোলাবর্ষণ করেছে।

বৈঠকের পর পুটিন জানিয়েছেন, ''আমরা একটা মতৈক্যে পৌঁছেছি। এর ফলে ইদলিবে সংঘর্ষ শেষ হবে বলে আশা করছি।'' পুটিন ও এর্দোয়ানের দাবি, সাধারণ লোকের কষ্ট কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই জন্যই অস্ত্রবিরতিতে রাজি হয়েছে দুই পক্ষ। কারণ, এই সংঘর্ষের ফলে হাজার হাজার মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বেরিয়ে পড়েছেন। আর এই উদ্বাস্তুদের নিয়ে ইউরোপের দেশগুলিতে, বিশেষ করে গ্রিসে সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ইইউর দেশগুলিও উদ্বাস্তুদের নিজেদের দেশে আসতে দিতে চায় না। 

এর্দোয়ান জানিয়েছেন, ''২০১৬ সালেও রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যে চুক্তি হয়েছিল।কিন্তু চুক্তি ভঙ্গের পুরো দায় সিরীয় প্রশাসনের।'' তবে তিনি এটাও জানিয়ে দিয়েছেন, ''যদি সিরিয়ার বাহিনী আক্রমণ চালিয়ে যায় তো তুরস্কও উপযুক্ত জবাব দেবে।'' তুরস্কের কয়েক হাজার সেনা ইদলিবে আছে। পুটিন বলেছেন, ''রাশিয়া সবসময় তুরস্কের সঙ্গে একমত হয় না। কিন্তু অস্ত্রবিরতির সিদ্ধান্তের ফলে ইদলিবে লড়াই থামবে। সেখানে সাধারণ লোকের কষ্ট কমবে।''

বোমার শব্দে সিরীয় শিশুর হাসি ভাইরাল

বৃহস্পতিবারও তুর্কি বাহিনী ২১ জন সিরীয় সেনাকে হত্যা করেছে, দুইটি কামান ও দুইটি রকেট লঞ্চার ধ্বংস করেছে। ইদলিবে দুই জন তুর্কি সেনাকে হত্যার প্রতিশোধ এভাবেই নিয়েছে তারা। গত ডিসেম্বর থেকে সংঘর্ষে প্রায় তিনশো সাধারণ মানুষ মারা গিয়েছেন। এর মধ্যে ১০০ জন শিশু।  প্রায় দশ লাখ লোক গৃহহীন হয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই খোলা আকাশের তলায় রাত কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। জাতি সংঘের মতে, নয় বছর ধরে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ হল সব চেয়ে তীব্র মানবিক সঙ্কট।  তবে এর্দোয়ান জানিয়েছেন, ''দুই দেশ উদ্বাস্তুদের দেশে ফেরানোর বিষয়ে সাহায্য করতে সম্মত হয়েছে।'' তাই ইদলিবের ইস্ট ওয়েস্ট হাইওয়ে যৌথভাবে প্রহরা দেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে তুরস্ক ও রাশিয়া।  

এর আগে ২০১৬তেও দুই দেশের মধ্যে উদ্বাস্তুদের নিয়ে চুক্তি হয়েছিল।  কিন্তু তাতে শেষ পর্যন্ত কাজ হয়নি। চার বছর পর অস্ত্রবিরতির চুক্তি হল। এই চুক্তি দীর্ঘস্থায়ী হবে না কি, তার অবস্থাও ২০১৬র মতো হবে সেটা জানার জন্য কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে আপাতত সুখবর এটাই, ইদলিব এখন শান্ত।

জিএইচ/এসজি(রয়টার্স, এএফপি, এপি)