জার্মানিতে ‘ইলেকট্রিক কার'
১৬ আগস্ট ২০১৪২০০৯ সালে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ঘোষণা করেছিলেন যে, লক্ষ্য হলো, ২০২০ সালের মধ্যে জার্মানিতে দশ লাখ ইলেকট্রিক কার চলবে৷ তাঁর – বর্তমান – পরিবহণ মন্ত্রী আলেক্সান্ডার ডোব্রিন্ট তো এই সেদিন বলেছেন, ‘‘আমরা সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব বলেই আমাদের বিশ্বাস৷'' বিশেষজ্ঞরা কিন্তু বলছেন: ম্যার্কেল ওর বদলে যদি বলতেন, ২০২০ সালের মধ্যে চাঁদে এক লক্ষ গাড়ি চলবে, তাহলে সেটাই বেশি বাস্তবসম্মত হত৷
২০১৪ সালের প্রথমার্ধের হিসেব অনুযায়ী জার্মানিতে ইলেকট্রিক কার-এর সংখ্যা ছিল ১৬ হাজার ৯০০৷ অর্থাৎ পেট্রোল অথবা ডিজেলে চলা প্রতি দশ হাজার গাড়ি প্রতি ইলেকট্রিক কার-এর সংখ্যা ছিল – চার৷ ঠিকই দেখেছেন: দশ হাজার বনাম চার৷ এমনকি ফ্রান্সেও প্রতি দশ হাজার পেট্রোলে চলা গাড়ির তুলনায় ইলেকট্রিক কার চলে দশটা৷
অথচ সরকার উৎসাহ দিতে কার্পণ্য করেননি৷ ইলেকট্রিক গাড়ি কিনলে প্রথম দশ বছর কোনো রোড ট্যাক্স দিতে হয় না৷ তা-তেও বিশেষ কাজ হয়নি, তাই সরকার এবার নতুন প্রলোভন দেখাচ্ছেন: শহরের ভিতরে বাস চলার লেনে চলতে পারবে ইলেকট্রিক কার; বিনি খরচায় পার্ক করতে পারবে; নতুন করে চার্জ করার কেন্দ্রগুলোর আশেপাশে পার্কিং-এর ব্যবস্থা রাখা হবে৷
কিন্তু কিছুতেই কিছু কাজ হবে না বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা৷ তারা চান, ইলেকট্রিক কার-এর জন্য কর ছাড় – যেমন যে সব কোম্পানি তাদের অফিসের গাড়ি হিসেবে ইলেকট্রিক কার রাখবে, তাদের জন্য৷ কিন্তু সরকার আপাতত সেদিকে এগোতে রাজি নন – যার মূল কারণটা সম্ভবত অন্যত্র৷ আসলে স্রেফ প্রযুক্তির দৃষ্টিকোণ থেকেই জার্মান গাড়ি শিল্প এখনও অতদূর পৌঁছায়নি৷ তাই সরকার প্রথাগত পেট্রোল কি ডিজেল চালিত মোটর শিল্পকে আরো কিছুটা সময় দিতে চাইছেন বলে অনেকের ধারণা – যেমন সবুজ দলের পরিবহণ সংক্রান্ত মুখপাত্র ভ্যালেরি ভিলম্স-এর৷
ভিলম্স বলেন: সরকার চান না যে, মার্কিন টেসলা কিংবা ফরাসি রেনো-র মতো মোটর কার নির্মাতারা জার্মান মার্সিডিজ-এর চেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা পাক৷ অবশ্য জার্মান গাড়ি-নির্মাতারা ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে৷ ডাইমলার স্মার্ট-এর একটি ইলেকট্রিক সংস্করণ বাজারে ছেড়েছে৷ ফোক্সভাগেন দেখিয়েছে মিনি এবং গল্ফ-এর ইলেকট্রিক সংস্করণ৷ বিএমডাব্লিউ তো তার হাই-এন্ড আই-থ্রি মডেল এনে সবার নজর কেড়েছে৷
অবশ্য সমস্যাটা সম্ভবত অন্য কোথাও৷ জার্মানিতে ইলেকট্রিক কার-এর ব্যাটারি রি-চার্জ করার স্টেশনগুলোর সংখ্যা চার হাজার৷ এ বছরের শেষে ফ্রান্সে রি-চার্জিং স্টেশনের সংখ্যা দাঁড়াবে দশ হাজার৷
এখন ডিম আগে না মুর্গি আগে, সে তর্ক তুলবেন না প্লিজ!
এসি/ডিজি (এএফপি, এপি)