‘ইসরায়েলি ফুটবলে জাতিবাদ রুখতে হবে’
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩এর মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে চারজন বাইতার ফ্যানের বিরুদ্ধে চেচনিয়া থেকে আসা ঐ দু'জন নতুন খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে জাতিবাদী স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ আনেন সরকারি কৌঁসুলি৷
শুক্রবার সকালে বাইতারের অফিসে অগ্নিকাণ্ডে মূলত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ক্লাবটির মিউজিয়াম৷ অন্যান্য ট্রফি ও ছবির সঙ্গে পুড়ে গেছে বাইতার ও ইসরায়েলের প্রাক্তন তারকা এলি ওহানা'র বুট ও জার্সি৷
ওহানা কিন্তু বলেছেন, এই ঘটনার থেকে যদি বাইতারের ফ্যানদের একাংশের বহু বছরের বহিরাগত বিদ্বেষের অন্ত ঘটে, তবে তার মূল্য দিতে কোনো আপত্তি নেই৷ ফ্যানদের মুখ্য ওয়েবসাইটেও বলা হয়েছে, ‘‘ওরা আমাদের অতীতকে পুড়িয়ে দিয়েছে৷ ওদের আমাদের ভবিষ্যৎকে পুড়তে দেওয়া চলবে না৷''
প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বাইতারের অফিসে অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে ‘‘লজ্জাকর'' বলে অভিহিত করেছেন৷ রবিবার তিনি বলেন, ‘‘সম্প্রতি আমরা উগ্রপন্থার কিছু নমুনা দেখেছি, যা গ্রহণযোগ্য নয়৷ এগুলোকে অবশ্য করে খেলাধুলার জগৎ থেকে উৎখাত করা উচিত৷''
‘‘প্রধানমন্ত্রী যে এই প্রথমবার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন, তা'তে আমি খুশি,'' মন্তব্য করেছেন এলি ওহানা, যিনি ১৯৯৮ সালে সক্রিয় ফুটবল থেকে অবসর নেন৷ ‘‘এ'তে প্রমাণ হয় যে, বিষয়টি সর্বোচ্চ মহলে পৌঁছেছে৷''
বাইতার ও ইসরায়েলের আরেক সাবেক তারকা, মিডফিল্ডার ড্যানি নয়ম্যান বলেছেন, সমস্যাটা পাঁচ'শো থেকে এক হাজার ফ্যানের একটি গোষ্ঠীকে নিয়ে৷ এরা ‘‘লা ফ্যামিলিয়া'' নামধারী একটি ফ্যান গ্রুপের সদস্য, যারা মাঠে উপস্থিত ফ্যানদের প্রায় দশ শতাংশ৷ ‘‘এদের বমি করে বার করে দিতে হবে,'' একটি বেতার সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেছেন নয়ম্যান৷
পুরো গোলমালটা শুরু হয় বিগত ২৬শে জানুয়ারি, যখন বাইতারের মালিক, রুশ-ইসরায়েলি কোটিপতি আর্কাদি গাইদামাক দু'জন চেচেন প্লেয়ার সংগ্রহ করার কথা জানান: জাউর সাদায়েভ ও গাব্রিয়েল কাদিয়েভ৷ সেইদিনই একটি খেলা চলাকালীন হার্ডকোর বাইতার ফ্যানরা আরব-বিরোধী স্লোগান তোলে এবং ‘‘বাইতার, চিরকালই নির্মল'' লেখা শালু ওড়ায়৷
আরো বলা দরকার, বাইতার হচ্ছে ইসরায়েলের একমাত্র ক্লাব, যারা তাদের ৭৭ বছরের ইতিহাসে কখনো কোনো আরব প্লেয়ার ভাড়া করেনি৷ ১৯৩৬ সালে ব্রিটিশ শাসিত প্যালেস্টাইনে বাইতার নামধারী একটি দক্ষিণপন্থি জিওনিস্ট যুব আন্দোলন থেকে এই ক্লাবের সৃষ্টি৷
রবিবার বেনেই সাখনিন আরব দলের বিরুদ্ধে খেলতে নামে বাইতার জেরুসালেম৷ ১৯ বছর বয়সি গাব্রিয়েল কাদিয়েভ মাঠে নামলে হাজার হাজার দর্শক হর্ষধ্বনি করে, উঠে দাঁড়িয়ে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান৷ জাতিবাদ আর সহিষ্ণুতার লড়াইয়ে এ'রাউন্ডে যে কার জিত হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ থাকার কথা নয়৷
এসি / এসবি (এএফপি, এপি)