1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ঈদে জমজমাট তৃণমূলের রাজনীতি

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৭ জুন ২০১৮

এ বছর ডিসেম্বরেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা৷ আর ঈদের পর ঢাকার বাইরে চারটি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন৷ তাই এবারের ঈদকে তৃনমূলে গণসংযোগের মোক্ষম সুযোগ হিসেবে বেছে নিয়েছেন নেতা কর্মীরা৷

https://p.dw.com/p/2zj96
খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের গণসংযোগের ফাইল ছবিছবি: bdnews24.com

বাংলাদেশের দক্ষিণের জেলা পিরোজপুরের উপজেলা মঠবাড়িয়া৷ এই একটি উপজেলা নিয়েই একটি সংসদীয় আসন৷ এবার ঈদে আসছে জাতীয় নির্বাচনে যারা বিভিন্ন দল থেকে প্রার্থী হতে চান তারা ছিলেন সক্রিয়৷ তারা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে গনসংযোগ করেছেন৷ উপহার সামগ্রী বিতরণ করেছেন৷ আয়োজন করেছেন খাওয়া দাওয়ার৷ সেখানকার দৈনিক সমকাল প্রতিনিধি মিজানুর রহমান মিজু ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘শুধু ঈদ নয় পুরো রমজানের সময় ইফতার মাহফিলের মাধ্যমে এই জনসংযোগ শুরু হয়৷ আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা পুরো রমজান মাস জুড়েই সক্রিয় ছিলেন৷ বড় বড় ইফতার মাহফিলে ১০-১২ হাজার মানুষকে আমন্ত্রণ জানানো হয়৷''

‘বড় ইফতারে ১০-১২ হাজার মানুষকে আমন্ত্রণ করা হয়’

তিনি বলেন, ‘‘ঈদে শুধু উপজেলা বা পৌর এলাকায় নয়, গ্রামাঞ্চলেও ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় এবং জনসংযোগে যান মনোনয়ন প্রত্যাশীরা৷ তাদের এই জনসংযোগ এখনো চলছে৷ ঈদের দিন কয়েকজন খাবার দাবারেরও আয়োজন করেন৷ কেউ কেউ বিতরণ করেন উপহার সামগ্রী৷ তবে উপহার সামগ্রী পাওয়ায় দলীয় কর্মী সমর্থকদেরই প্রাধান্য ছিল৷''

তিনি বলেন, ‘‘পুরো পিরোজপুর জেলা জুড়েই একই চিত্র ছিল৷’’ দেশের অন্যান্য এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুই বড় দলের যেসব নেতারা ঢাকায় থাকেন তারা এবার ঈদে প্রায় সবাই যার যার এলাকায় গিয়েছেন৷ সরকারি দল আওয়ামী লীগের এমপি এবং নেতাদের এবার ঈদে গ্রহণযোগ্য কারণ ছাড়া এলাকায় গিয়ে ঈদ করার নির্দেশ দেয়া হয়৷ আর বিএনপিও নেতাদের ঈদের সময় এলাকায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঈদ করতে বলে৷

‘ঈদে বিএনপি'র নেতারা এলাকায় সক্রিয় আছেন’

আর রমাজান মাসজুড়েই রাজনৈতিক দলগুলো ইফতার মাহফিলে কর্মীদের সমাবেশ ঘটিয়েছেন৷ উপহর সামগ্রী বিতরণ করেছেন৷ গরিব মানুষকে নানাভাবে সহায়তা করেছেন অনেকে৷

সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি'র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুনাজ্জির সুজন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা এখনো নির্বাচনে যাব কিনা তা নির্ভর করছে দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির ওপর৷ আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত হলো খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে আমরা নির্বাচনে যাব না৷ কিন্তু নির্বাচনের জন্য আমরা প্রস্তুত থাকছি৷ সেই প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই এবার ঈদে বিএনপি'র নেতারা যার যার এলকায় সক্রিয় আছেন৷ আমরা জেলা পর্যায় থেকেও উপজেলা ও তৃণমূল পর্যায়ে সক্রিয় থাকতে বলেছি৷ জনসংযোগ ও মত বিনিময় করতে বলেছি৷''

তিনি বলেন, ‘‘আমরা এবার রোজা এবং ঈদে দুটি বিষয় নিয়ে জনসংযোগ করেছি৷ খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সাধারণ মানুষের সমর্থন আদায় এবং নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত থাকা৷ আর সেজন্য সবাই এক হয়ে কাজ করা৷''

বিএনপি'র চেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইং-এর কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান জানান, ‘‘এবার জেলা উপজেলা সব খানেই রোজার মাস থেকেই জনসংযোগ শুরু হয়৷ ঈদেও তা অব্যাহত আছে৷''

‘কেন্দ্রীয়ভাবে ১৫টি টিম সারাদেশে কাজ করছে’

সাবেক খাদ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘ঢাকায় কোনো নেতা নেই৷ গণভবন এখন ফাঁকা৷ নেতা কর্মীরা এলাকায় চলে গেছেন৷ আমু ভাই, তোফায়েল ভাইও এলাকায়৷ সবাই এলাকায়৷ নির্বাচনের আগে এই ঈদকে সবাই কাজে লাগাচ্ছেন৷ কাজে লাগানোর নির্দেশনা আছে৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘দলীয়ভাবে নির্বাচন নিয়ে এখন অনেক কাজ হচ্ছে৷ কেন্দ্রীয়ভাবে ১৫টি টিম সারাদেশে কাজ করছে৷ তারা সবসময়ই তৃনমূলকে সক্রিয় করার কাজে আছেন৷ রোজার ঈদেও ছিলেন৷''

জানাগেছে, আওয়ামী লীগ পুরো রমজান মাসে ইফতার মাহফিলের মাধ্যমে কাজ করেছে৷ আর ঈদে সাধারণ মানুষের সঙ্গে এলাকায় গিয়ে গনসংযোগ করার নির্দেশ আগেই দেয়া হয় দলীয়ভাবে৷

এদিকে, ২৬ জুন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন৷ তারপরই তিন সিটি বরিশাল, সিলেট ও রাজশাহীর নির্বাচন ৩০ জুলাই৷ ঈদের আগেই তিন সিটির নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করায় গাজীপুরের সঙ্গে ঐ তিন এলকাতেও সম্ভাব্য প্রার্থীদের ঈদ নির্বাচনী ঈদে পরিণত হয়৷ 

আপনার এলাকায়ও কি আপনি এমনটি দেখেছেন? লিখুন নীচের ঘরে৷