ঈদের পরে আন্দোলনে বিএনপি, ফেসবুকে আওয়ামীলীগ
১৬ জুন ২০১৮খালেদা জিয়ার বড় বোন সেলিমা ইসলাম, ভাই শামীম এস্কান্দার, ভাইয়ের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা এবং তাদের ছেলে অভি এস্কান্দার, খালেদা জিয়ার ভাগ্নে মামুনসহ পরিবারের ২০ সদস্য ঈদের দিন শনিবার দুপুরের পর কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন৷ তারা সেখানে দুই ঘন্টারও বেশি সময় ছিলেন৷ কিন্তু বের হয়ে তাদের কেউ সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি৷
তবে এর আগে দুপুরে বিএনপির মহাসচিবের নেতৃত্বে দলটির সিনিয়র নেতারা খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে গেলেও দেখা করার অনুমতি পাননি৷ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘তিন দিন আগে আমরা চেয়ারপার্সনের সঙ্গে দেখা করার জন্য আইজি প্রিজনের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছিলাম৷ কিন্তু, আমাদেরকে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা বলেছেন, দেখা করার অনুমতি নেই৷ তাই তারা আমাদেরকে কারা ফটকের অনেক আগেই আটকে দিয়েছেন৷''
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘দেশে আইন বলতে কিছুতো নেই৷ এখন এক নির্মম পরিস্থিতি বিরাজ করছে৷ নানাভাবে খালেদা জিয়ার জামিন আটকে দেয়া হচ্ছে৷ তাকে চিকিৎসা করাতে দেয়া হচ্ছেনা৷ এমনকি তার
সঙ্গে আইন অনুযায়ী দেখা করারও সুযোগ দেয়া হচ্ছেনা৷''
তিনি বলেন, ‘‘বিএনপিকে আন্দোলনে যেতেই হবে৷ আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার মুক্তির সম্ভাবনা দেখছিনা৷ সেক্ষেত্রে সামনে নির্বাচনসহ আরো অনেক বিষয় মাথায় নিয়েই বিএনপি আন্দোলনে যাবে৷ তবে দিন-ক্ষণ দিয়ে তো আর আন্দোলন হয়না৷ আমরা সময় মতই আন্দোলনে যাবো৷''
বিএনপির দায়িত্বশীল একজন নেতা জানান, ‘‘ঈদের পরই আন্দোলন নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে৷ তবে শক্ত আন্দোলন শুরু করতে বিএনপি আরো কিছুটা সময় দেখতে চায়৷ আর সেটা নির্বাচনকে সামনে রেখেই যৌক্তিক সময়ে আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়া হবে৷''
এদিকে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে দলীয় নেতা-কর্মী এবং বিচারক ও কূটনীতিকসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা৷
শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘বাংলাদেশ আজ স্বাধীন, আমরা আজকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী৷ বাংলাদেশের গণতন্ত্র আজকে সুরক্ষিত৷ দেশের জনগণের মৌলিক অধিকারগুলো আমরা নিশ্চিত করেছি৷ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে৷''
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বিএনপি এখন এই সরকারের বিরুদ্ধে নানা ধরণের অপপ্রচার চালাচ্ছে৷ আর এই অপপ্রচারে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুক ব্যবহার করছে৷''
তিনি বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগের একটি ফেসবুক পেজ আছে সেখান থেকে আওয়ামী লীগের নেতারা ফেসবুক লাইভে গিয়ে এর জবাব দেন৷ আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআইও এই কাজটি করে থাকে৷ তবে এই কাজকে একটি সমন্বিত রূপ দেয়ার পরিকল্পনা আছে৷''
খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘‘বিএনপি যতই আন্দোলনের কথা বলুক না কেন, তাদের পক্ষে কোনো কার্যকর আন্দোলন গড়ে তোলা সম্ভব নয়৷ তারা তাদের স্টাইল অনুযায়ী অসুস্থতা, মৃত্যু বা মুক্তি নিয়ে আন্দোলন করার চেষ্টা করবে৷ কিন্তু তাতে কোনো জনসমর্থন পাবেনা৷ তাই তারা অতীতে যেমন গুজব ছড়িয়েছে ভবিষ্যতেও তাই করবে৷ একারণেই ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে আওয়ামী লীগ আরো সমন্বিত প্রস্তুতি নিচ্ছে৷''
আওয়ামী লীগ জানিয়েছে, নির্বাচনের আগে ফেসবুকের মাধ্যমে গুজব ছাড়ানোর কৌশল নিতে পারে পরই বিএনপি৷ মোকাবেলার জন্য মেধাবীদের সমন্বয়ে একটি টিম গঠন ছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ শীর্ষ নেতারা ফেসবুক লাইভে অংশ নেবেন৷ আর এটা শুরু হতে পারে ঈদের পরই৷ লাইভে সরকারের উন্নয়ন এবং উন্নয়ন পরিকল্পনাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরা হবে৷