উইগুরদের নিয়ে ভিডিওর কারণে আলোড়ন তোলা ফিরোজা আজিজ
৩০ নভেম্বর ২০১৯ভিডিওর শুরুতে দেখা যায় কার্লার দিয়ে কীভাবে আইল্যাশ কার্ল করতে হয় তা দেখাচ্ছেন ফিরোজা আজিজ৷ কিন্তু হঠাৎই তিনি কার্লারটি রেখে স্মার্টফোনে চীনের উইগুর মুসলমানদের সঙ্গে কী করা হচ্ছে তা খোঁজার আহ্বান জানান৷ তিনি বলেন, ‘‘চীনে আরেকটি ‘হলোকস্ট' হচ্ছে কিন্তু আমরা কেউই সেটা নিয়ে কথা বলছি না৷''
টিকটকে তার এই বক্তব্যসম্বলিত ভিডিওটি অল্প সময়ের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায়৷ এক পর্যায়ে ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্মটিতে তাকে নিষিদ্ধ করা হয় বলে ওয়াশিংটন পোস্টকে জানান ফিরোজা আজিজ৷
টিকটকের এক মুখপাত্র অবশ্য ডয়চে ভেলের কাছে দাবি করেছেন, অতীতে ওসামা বিন লাদেনকে নিয়ে একটি ভিডিও পোস্ট করায় আজিজের অন্য একটি অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, কেননা প্লাটফর্মটির নীতি অনুযায়ী সন্ত্রাসী সংগঠন সম্পর্কিত কিছু সেখানে পোস্ট করা যায় না৷
কিন্তু পুরনো একটি অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত এক ভিডিওর জন্য ফিরোজা আজিজের নতুন অ্যাকাউন্টটি কেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে সেই প্রশ্ন এড়িয়ে গেছেন টিকটকের মুখপাত্র৷ তবে তিনি দাবি করেছেন, ফিরোজার নতুন অ্যাকাউন্টটি সচল আছে এবং সেটিতে থাকা ভিডিওগুলো সবাই দেখতে পাচ্ছেন৷
ডয়চে ভেলের তরফ থেকে ওসামা বিন লাদেনের যে ভিডিওর জন্য ফিরোজা আজিজকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল সেই ভিডিওটি যাচাইয়ের জন্য চাইলে টিকটক তা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে৷
এদিকে উইগুর মুসলমানদের নিয়ে আজিজের বক্তব্যের ভিডিওটির কয়েকটি সংস্করণ ইতোমধ্যে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে গেছে৷ শুধু টুইটারেই ভিডিওটি চার মিলিয়নের বেশিবার দেখা হয়েছে৷
টিকটক বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়েছে যে, ফিরোজা আজিজের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে৷
ডয়চে ভেলের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ফিরোজা আজিজ নিজেও তার পুরনো একটি অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধের কথা নতুন অ্যাকাউন্টের এক ভিডিওতে উল্লেখ করেছেন৷ তবে টিকটকের ভিডিওতে তারিখ উল্লেখ না থাকায় ঠিক কবে তিনি নতুন অ্যাকাউন্টটি চালু করেছেন তা জানা যায়নি৷ তার প্রকাশিত ভিডিওগুলোতে নভেম্বরের ১৫ তারিখ করা মন্তব্যও রয়েছে৷
অর্থাৎ, তখনও টিকটকে সক্রিয় ছিলেন ফিরোজা আজিজ৷ কিন্তু উইগুর মুসলমানদের নিয়ে প্রকাশিত ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর কোনো এক সময়ে তাকে আবার নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷
প্রসঙ্গত, গার্ডিয়ান এবং নেৎসপলিটিক দাবি করেছে, টিকটকের কর্মীদের চীনের পছন্দ নয় এমন কন্টেন্টের উপর বিধিনিষেধ আরোপের অঘোষিত নির্দেশনা দেয়া আছে৷ টিকটক যদিও এমন কোনো নির্দেশনা থাকার কথা অস্বীকার করেছে, তবে গবেষণায় দেখা গেছে চীনের সমালোচনামূলক কন্টেন্ট মুছে ফেলা না হলেও সেটি যাতে ছড়িয়ে না পরে সেই চেষ্টা অতীতে একাধিকবার করেছে প্ল্যাটফর্মটি৷
সোফিয়া দিয়াগো মাটিউস / এআই