উত্তরপ্রদেশ নির্বাচন: বিজেপির ইস্তেহারেও লাভ জেহাদ
৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২বিতর্কিত লাভ জেহাদ আইন আগেই পাশ হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। ভিনধর্মের বিয়ের ক্ষেত্রে এই আইনের প্রয়োগ করা হয়। উত্তরপ্রদেশে নির্বাচনের আগে এবার সেই লাভ জেহাদ নিয়ে আরো সরব হলো বিজেপি। বলা হয়েছে লাভ জেহাদে দোষী সাব্যস্ত হলে যাতে ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়, তার ব্যবস্থা করা হবে। আর্থিক ক্ষতিপূরণও দিতে হবে। পাশাপাশি মেধাবী ছাত্রদের স্কুটার এবং স্মার্টফোন-ট্যাব দেওয়ার ঘোষণা রয়েছে ইস্তেহারে। চাকরিক্ষেত্রে নারীদের জায়গা দ্বিগুণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। কৃষকদের থেকে ন্যূনতম মূল্যে ফসল সংগ্রহ করা হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
১০ ফেব্রুয়ারি সাত দফায় উত্তরপ্রদেশের নির্বাচন শুরু হচ্ছে। প্রথম দফায় ভোট হবে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে। দিল্লি লাগোয়া উত্তরপ্রদেশের এই অঞ্চল জঠ বেল্ট নামেও পরিচিত। জাঠ কৃষকরা গত একবছর ধরে কৃষক আন্দোলনে সরাসরি যোগ দিয়েছিলেন। আন্দোলন উঠলেও ওই অঞ্চলের কৃষকরা এখনো বিজেপির বিরুদ্ধে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এবং সে কারণেই ইস্তেহারে কৃষকদের জন্য একটি বড় অংশ রাখা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
তিনটি সংশোধিত কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বসেছিলেন কৃষকরা। কেন্দ্রীয় সরকার ক্ষমা চেয়ে সেই আইন বাতিল করেছে। কিন্তু কৃষকদের দাবি শেষ হয়ে যায়নি। তাদের বক্তব্য, কৃষকদের ফসলের ন্যূনতম মূল্য দিতে হবে। সরকার তা এখনো মানেনি। কিন্তু বিজেপির ইস্তেহারে বলা হয়েছে, কৃষকদের থেকে ন্যূনতম মূল্যে ফসল কেনার বিষয়টি দেখা হবে। এছাড়াও সেচের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সহায়তা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
করোনার কারণে দীর্ঘদিন স্কুল কলেজ বন্ধ ছিল। স্কুল কবে খুলবে এ নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল। একইসঙ্গে চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভও দেখেছে উত্তরপ্রদেশ। এই সবকিছু মাথায় রেখে মেধাবি ছাত্রদের পুরস্কৃত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তাদের স্কুটার, ট্যাব, স্মার্টফোন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
তবে লাভ জিহাদ নিয়ে ইস্তেহারের বক্তব্য নিয়ে নতুন করে আলোড়ন তৈরি হয়েছে। লাভ জিহাদ আইন আদৌ কতটা সাংবিধানিক তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। তবে উত্তরপ্রদেশে যোগীর সরকার সবার প্রথম এই আইন নিয়ে আসে। পরবর্তীকালে আরো কয়েকটি বিজেপি-শাসিত রাজ্যে তা চালু হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, এবারের উত্তরপ্রদেশ নির্বাচন ধর্মীয় মেরুকরণের উপর দাঁড়িয়ে আছে। এবং সে কারণেই ইস্তেহারে লাভ জিহাদকে এতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, এই আইনকে আরো কঠোর করা হবে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, লাভ জেহাদের প্রসঙ্গটি সামনে এনে বিভাজনকে আরো বাড়াতে চাইছে বিজেপি।
এসজি/জিএইচ (পিটিআই, এনডিটিভি)