1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হুমকি দিল ইটালি

২৯ জুন ২০১৭

ভূমধ্যসাগরের সব উদ্বাস্তু ত্রাণ জাহাজকে ইটালিতে প্রবেশ করতে দেওয়া দীর্ঘমেয়াদে সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন ইইউ-তে ইটালির দূত মাউরিৎসিও মাসারি৷ গত কয়েক দিনে দশ হাজারেরও বেশি রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী ইটালিতে পৌঁছেছে৷

https://p.dw.com/p/2fcyu
ছবি: picture-alliance/dpa/AP/E. Morenatti

ইউরোপীয় অভিবাসন ও স্বরাষ্ট্র বিষয়ক কমিশনার দিমিত্রিস আভ্রামোপুলোস-এর সঙ্গে বুধবার তাঁর আলাপ-আলোচনায় মাসারিকে বিষয়টি বিশেষভাবে উত্থাপন করার নির্দেশ দেয়া হয়৷ ইটালির সরকারি কর্মকর্তাদের বিবৃতি অনুযায়ী, রোম যে বর্তমান পরিস্থিতিতে সন্তুষ্ট নয়, এই ‘বিধিবদ্ধ কূটনৈতিক পদক্ষেপ’ তারই সংকেত৷ 

আভ্রামোপুলোস পরে টুইটারে জানান, তিনি বিষয়টি নিয়ে ইটালির রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং ‘‘ইটালিতে (উদ্বাস্তুদের) আগমনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবার পর আমাদের (ইইউ-এর) সমর্থন’’ ব্যক্ত করেছেন৷

রাষ্ট্রদূত মাসারি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে, উদ্বাস্তুদের দেখাশোনায় ইটালির উদ্যোগ বিপুল, ও দেশটির ‘আন্তর্জাতিক দায়িত্বের পরিধি’ ছাড়িয়ে গেছে৷ দৃশ্যত মাসারি আভ্রামোপুলোসকে বলেছেন, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে (ইটালির) কর্তৃপক্ষের পক্ষে উত্তরোত্তর অভিবাসী আসতে দেওয়া সমস্যার৷’’ এক ইটালীয় কূটনীতিক জার্মান ডিপিএ সংসাদ সংস্থাকে এ কথা জানিয়েছেন৷  

‘‘আমরা যা কিছু করি, আমাদের সকলেরই মানুষের জীবন বাঁচানোর একটা মানবিক দায়িত্ব আছে,’’ আভ্রামোপুলোস বুধবার বলেন৷ ‘‘স্বভাবতই আমরা মুষ্টিমেয় কয়েকটি ইইউ দেশকে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে বলতে পারি না,’’ তিনি যোগ করেন৷

ইটালির উপর মাত্রাধিক চাপ

পরিস্থিতি না বদলালে, ইটালি অন্যান্য দেশের পতাকাবাহী জাহাজ বা কোনো ইউরোপীয় অভিযানের অংশ নয় এমন সব জাহাজকে ইটালির বন্দরে নোঙর ফেলতে দিতে অস্বীকার করতে বাধ্য হতে পারে বলে ইটালির কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে৷

এর ফলে বিভিন্ন এনজিও-র কাজ ব্যাহত হবে এবং অ-ইটালীয় বাণিজ্যিক জাহাজগুলিকে ভূমধ্যসাগরে উদ্বাস্তু ত্রাণ অভিযান পরিচালনা থেকে বিরত করবে, কেননা তারা উদ্ধারকৃত উদ্বাস্তুদের ইটালির বন্দরে নিয়ে আসতে পারবে না৷ অপরদিকে বহিঃসমুদ্রে বিপদগ্রস্তদের উদ্ধার করা বাণিজ্যপোতসহ যাবতীয় সমুদ্রগামী যানের আন্তর্জাতিক আইনগত দায়িত্ব ও কর্তব্য৷ 

ইটালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ বছর মোট ৭৬,৮৭৩ জন অভিবাসী ইটালির উপকূলে পৌঁছেছেন, যা কিনা ২০১৬ সালের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় ১৩ শতাংশ বেশি৷ এছাড়া বিগত কয়েক দিনে যে ১০,০০০ অভিবাসীকে ভূমধ্যসাগর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে৷ তাদেরও ঐ পরিসংখ্যানে ধরা হয়নি৷  

এনজিও চাপের মুখে

সীমানাবিহীন চিকিৎসক বা এমএসএফ-এর অ্যাকোয়ারিয়াস নামধারী জাহাজটি গত বুধবার ১,০৩২ জন উদ্বাস্তুকে উদ্ধার করে৷ এমএসএফ-এর একটি টুইটে বলা হয়েছে, লিবিয়া থেকে পালিয়ে আসা উদ্বাস্তুদের এক-চতুর্থাংশ নারী ও শিশু৷

‘ইউগেন্ড রেটার’ ও ‘সি ওয়াচ’-এর মতো সাগরে উদ্বাস্তু ত্রাণের জার্মান চ্যারিটিগুলিও ইটালির বন্দরে নোঙর না ফেলতে পারলে তাদের কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হবে৷

অপরদিকে ইইউ-এর সীমান্ত সংস্থা ফ্রন্টেক্স-এর কার্যনির্বাহী পরিচালক ফাব্রিচে লেগেরি বুধবার বলেছেন যে, লিবিয়া থেকে বিপুল সংখ্যক নৌকা আসাটা ‘খুবই উদ্বেগজনক’৷ আগে কখনো এত কম সময়ের মধ্যে এত বেশি বোট আসতে দেখা যায়নি বলে লেগেরি জানান৷

অভ্যন্তরীণ রাজনীতি

ইটালির ক্ষমতাসীন মধ্য-বাম সরকার অভিবাসনের প্রসঙ্গটি নিয়ে চাপে পড়েছে৷ জুনের সূচনায় পৌর নির্বাচনে ইটালির মধ্যমপন্থি-দক্ষিণপন্থি বিরোধীদলগুলি ভালো ফল করেছে, প্রধানত অভিবাসনের প্রশ্নে কড়া অবস্থান নিয়ে৷ রক্ষণশীল নর্দার্ন লিগের প্রধান মাতেও সালভিনি এমনকি ‘অনুপ্রবেশ রোখো’, এই স্লোগানও দিয়েছেন৷ পপুলিস্ট দল ফাইভ স্টার মুভমেন্টও নতুন অভিবাসীদের আগমন রোখার দাবি জানিয়েছে৷

ইইউ রাষ্ট্রদূত মাসারির সর্ব শেষ আলাপ-আলোচনা সম্পর্কে ইটালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বার্লুসকোনির ‘ফর্ৎসা ইতালিয়া’ দল বলেছে সরকারের এই উদ্যোগ তাদেরই তাগিদে৷

এসি/এসিবি (ডিপিএ, রয়টার্স)