এপ্রিলে দুই কোরিয়ার শীর্ষ বৈঠক
৬ মার্চ ২০১৮দক্ষিণ কোরিয়ার ন্যাশনাল সিকিউরিটি অফিসের প্রধান চুং ইউই-ইয়ং এর নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের পিয়ংইয়ং সফর শেষে দেশে ফেরার কিছুক্ষণের মধ্যে এই তথ্য জানানো হলো৷ প্রতিনিধি দলটি সোমবার উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠক করেছে৷ ইউই-ইয়ং বলেন, বৈঠকে উত্তর কোরিয়া স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, যদি তাদের বিরুদ্ধে সামরিক হুমকি দেয়া বন্ধ হয় এবং তারা বিশ্বাসযোগ্য নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পায় তাহলে তাদের আর পরমাণু অস্ত্র রাখার প্রয়োজন পড়বে না৷
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিনিধি দলেরসঙ্গে চার ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আলোচনা করেন কিম জং উন৷ সেই সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন বোন কিম ইয়ো জং৷ গত মাসে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত শীতকালীন অলিম্পিকের সময় বোন জংকে প্রতিনিধি হিসেবে সেখানে পাঠিয়েছিলেন উন৷ ফলে গত পঞ্চাশের দশকে হওয়া কোরীয় যুদ্ধের পর জংই দক্ষিণ কোরিয়া সফর করা উত্তর কোরিয়ার শাসক পরিবারের প্রথম সদস্য৷
আলোচনার সময় উনের হাতে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের একটি চিঠি হস্তান্তর করা হয়৷ বৈঠক শেষে উত্তর কোরিয়ার সরকারিবার্তা সংস্থা কেসিএনএ জানিয়েছিল, উন দক্ষিণের প্রতিনিধি দলকে ‘উষ্ণ স্বাগতম’ জানান৷ ‘‘শীর্ষ সম্মেলনের ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইনের আগ্রহের কথা জেনে তিনি (উন) সে ব্যাপারে মতবিনিময় করেন এবং একটি সন্তোষজনক চুক্তিতে উপনীত হন,’’ বলেছে কেসিএনএ৷
অতীত শীর্ষ সম্মেলন
গত ৭০ বছরে মাত্র দুইবার দুই কোরিয়ার মধ্যে শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়৷ প্রথমটি হয় ২০০০ সালে৷ সেই সময় দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম দায়ে-জুং উত্তর কোরিয়ার তৎকালীন নেতা কিম জং ইলের সঙ্গে পিয়ংইয়ংয়ে বৈঠক করেন৷ বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে যৌথ অর্থনৈতিক প্রকল্প বাস্তবায়নের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল৷ অবশ্য এটি এখন স্থগিত আছে৷ উদারপন্থি নীতির কারণে ঐ বছরই নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছিলেন কিম দায়ে-জুং৷
এরপর ২০০৭ সালের অক্টোবরে কিম জং ইলের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রোহ মু-হিয়ুন৷ তিনি কিম দায়ে-জুংয়ের উত্তরসূরি ছিলেন৷ বর্তমান প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইনের রাজনৈতিক ‘মেন্টর' ছিলেন রোহ মু-হিয়ুন৷ ঐ শীর্ষ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে কোরীয় যুদ্ধ শেষ করার বিষয়টি এগিয়ে নিতে দুই পক্ষ রাজি হয়েছিল৷ কিন্তু কয়েক মাস পর রোহ মু-হিয়ুনের মেয়াদ শেষে রক্ষণশীল একজন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় বিষয়টি আর এগোয়নি৷
জেডএইচ/এসিবি (এএফপি, রয়টার্স, এপি)