এবারের বিশ্বকাপ রাশিয়ার রাজনৈতিক হাতিয়ার?
৮ জুন ২০১৮একটি আধুনিক ও বহুজাতিক দেশ হিসেবে বিশ্বের সামনে নিজেকে তুলে ধরার এত বড় সুযোগ রাশিয়ার সামনে এর আগে আসেনি৷ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনও রাজনীতির পাশাপাশি খেলাধুলাতেও বিশ্বের বৃহত্তম দেশটির গুরুত্ব তুলে ধরার সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ৷
বিশ্বকাপকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন পুটিন৷ ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় পুটিন বিশ্বকাপ আয়োজনে রাশিয়ার দাবির পক্ষে প্রচারণা চালাতে নিজেই জুরিখ গিয়েছিলেন৷ সে সময় ফিফা কর্মকর্তাদের ঘুষ দেয়ার অভিযোগও ওঠে রুশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে৷ বিশ্বকাপ আয়োজনের নিলাম প্রক্রিয়া নিয়ে ফিফাকে একাধিকবার তদন্তের সম্মুখীনও হতে হয়েছে৷
ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফার প্রেসিডেন্ট পদেও এসেছিল পরিবর্তন৷ রাশিয়া অবশ্য বরাবরের মতোই সব অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে৷
২০১৪ সালে সোচিতে আয়োজিত শীতকালীন অলিম্পিকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানে ডোপিংয়ের অভিযোগ ওঠে৷ এরপর পশ্চিমা বিশ্বের দৃষ্টিতে রাশিয়ার অপরাধের তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়েছে৷ ইউক্রেন আক্রমণ, সিরিয়ায় আগ্রাসন, জার্মান সরকারের বিরুদ্ধে সাইবার আক্রমণ, যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ কেবলই রাশিয়াকে করেছে কোণঠাসা৷
সাবেক গুপ্তচর সের্গেই স্ক্রিপলের ওপর ‘আক্রমণ'ও পূর্ব–পশ্চিমের মধ্যে সম্পর্কে ফাটল ধরিয়েছে৷ তবে, পশ্চিম ইউরোপের চেয়ে আফ্রিকা, এশিয়া ও লাতিন আমেরিকাতে রাশিয়ার ভাবমূর্তি সম্পূর্ণ আলাদা৷
এই সব বিষয়েই অবগত রাশিয়ার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা৷ রুশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের চেয়ারম্যান ভ্যালেন্টিনা মাতভিয়েঙ্কো অবশ্য পুরো দায় চাপিয়েছেন বিদেশি সাংবাদিকদের ওপর৷ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাশিয়ার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা হচ্ছে বলে দাবি তাঁর৷ এখন লাখ লাখ মানুষ আসছে রাশিয়ায়, সত্যিকার রুশদের দেখবে তাঁরা৷ তথ্যের যে যুদ্ধ চলছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে, তা তাঁদের প্রভাবিত করবে না৷
এমনকি, পুটিনবিরোধী রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত জনপ্রিয় ফুটল ধারাভাষ্যকার ভাসিলি উতকিনও খেলার সাথে রাজনীতি বেশি না মেশানোর আহ্বান জানিয়েছেন৷ ‘‘দেশের যে-কোনো ভোটারের মতো আমারও দেশের নেতৃত্ব নিয়ে আপত্তি আছে৷ কিন্তু কোনো দেশই বিশ্বকাপ বয়কট করেনি, রাশিয়ায় উপস্থিত হয়ে বিদেশি বন্ধুরা রাশিয়াকেই সমর্থন দিয়েছেন৷''
এডিকে/এসিবি (ডিপিএ)