এর্দোয়ানের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পথে হাজারো মানুষ
২ জুলাই ২০২১তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ানের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পথে নামলেন হাজার হাজার মানুষ। তাদের দাবি, ইস্তাম্বুল কনভেনশন থেকে সরে আসার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এর্দোয়ান, তা প্রত্যাহার করতে হবে। বৃহস্পতিবার থেকেই সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে রূপায়ণ করা হয়েছে। নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা রুখতেই ইস্তাম্বুল কনভেশনে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল দেশগুলি।
এর্দোয়ান জানিয়ে দিয়েছেন, সিদ্ধান্ত বদলাবে না। তিনি পিছু হটার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেননি। কিন্তু বিক্ষোভকারীরাও প্ল্যাকার্ড নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছেন। প্ল্যাকার্ডে লেখা, 'ইস্তাম্বুল কনভেনশন নিয়ে আমরা লড়াই ছাড়ছি না। আমাদের কাছে সব শেষ হয়ে যায়নি।' কিছু বিক্ষোভকারী চিৎকার করে বলছিলেন, ''আমরা চুপ করে থাকব না, আমরা ভীত নই, আমরা নির্দেশ মানব না।''
পুলিশ রাতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে।
এর্দোয়ানের বক্তব্য
বৃহস্পতিবার এর্দোয়ান চুক্তি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দেয়ার পরই বিক্ষোভ শুরু হয়। এর্দোয়ান বলেছেন, ''কিছু মানুষ ভুল করে এই সিদ্ধান্তকে তুরস্কের পিছনের দিকে হাঁটা বলে দেখাতে চাইছেন। কিন্তু মেয়েদের বিরুদ্ধে সহিংসতা নিয়ে আমাদের লড়াই ইস্তাম্বুল কনভেনশন থেকে শুরু ও শেষ হয় না।''
এর্দোয়ান জানিয়েছেন, ''মেয়েদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধ করতে ইতিমধ্যেই আইন করেছে তুরস্ক। সেখানে ধর্ম, জাতি ও লিঙ্গবৈষম্য করা হয়নি।''
অন্যরা কী বলছেন
অনেকগুলি অধিকাররক্ষা সংগঠন তুরস্কের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছেন, তুরস্ক একটি বেপরোয়া ও ভয়ংকর বার্তা দিতে চাইছে। তারা মেয়েদের অধিকারের বিষয়টি দশ বছর পিছনে নিয়ে যেতে চাইছে।
তুরস্কের নারী সংগঠনগুলির ফেডারেশনের সভাপতি ক্যানান গুল্লু বলেছেন, ''এই সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়ে তুরস্ক নিজের পায়েই গুলি করেছে।''
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস জানিয়েছেন, ''এটা খুবই হতাশাজনক সিদ্ধান্ত।''
ইস্তাম্বুল কনভেনশন
২০১১ সালে ইস্তাম্বুলে কাউন্সিল অফ ইউরোপ একটি চুক্তির খসড়া করে। এই চুক্তিতে লিঙ্গসাম্যকে উৎসাহ দেয়ার কথা বলা হয়েছিল। আইন, শিক্ষা ও প্রচারের মাধ্যমে তা সুনিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছিল।
কিন্তু তুরস্কের কিছু রক্ষণশীলদের দাবি, এই চুক্তিতে লিঙ্গের ক্ষেত্রে কোনো বৈষম্য না করার নীতি নেয়ার কথা বলা হয়েছে। এভাবেই সমকামীদের সমর্থন করেছে এই চুক্তি।
কিন্তু সমালোচকদের মতে, তুরস্কে মেয়েদের বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রবল। চুক্তি থেকে সরে আসার অর্থ, মেয়েদের আরো ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়া। একটি নারী অধিকাররক্ষা সংগঠনের দাবি, গত বছর তুরস্কে ৩০০-রও বেশি নারীকে হত্যা করা হয়েছে।
জিএইচ/এসজি(রয়টার্স, এপি, ডিপিএ)